|
|
|
|
চিনের মধ্যে থেকে স্বশাসনে আপত্তি নেই দলাই লামার
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি
৫ ফেব্রুয়ারি |
চিন যদি তিব্বতিদের প্রকৃত অর্থে স্বশাসন দিতে রাজি হয়, তবে ‘স্বাধীন তিব্বত’-এর দাবি ছাড়তেও রাজি তিব্বত সরকার। আজ এ কথা জানালেন ভারতে আশ্রিত নির্বাসিত তিব্বত সরকারের সিকয়ং (প্রধানমন্ত্রী) লবসাং সাংগে।
গত রবিবারই গুয়াহাটিতে এক অনুষ্ঠানে দলাই লামা বলেছিলেন, চিনের হাত থেকে তিব্বতের স্বাধীনতা তিনি চাইছেন না। কিন্তু তিব্বতকে স্বশাসিত এলাকার মর্যাদা দিয়েও যে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চিনা প্রশাসন চালাচ্ছে, তা বন্ধ করতে হবে। দলাই লামার এই অবস্থানেই আজ সিলমোহর দিল নির্বাসিত তিব্বত সরকার। সাংগের কথায়, “চিন যদি আলোচনার মাধ্যমে তিব্বতিদের পুরোপুরি স্বশাসনের অধিকার মেনে নেয়, তবে তিব্বত চিনের অধীনেও থাকতে রাজি। আশা করি, চিনের নতুন সরকার এই আবেদনে সাড়া দেবে।”
উত্তর-পূর্বে প্রথম তিব্বত উৎসব উপলক্ষে দলাই লামা ও সাংগে গুয়াহাটি-শিলং সফরে এসেছেন। সাংগে বলেন, “আমরা বুদ্ধের প্রদর্শিত ‘মধ্যম পন্থা’কেই আঁকড়ে ধরে তিব্বতিদের উপরে হতে থাকা চিনা অত্যাচারের সমাপ্তি চাইছি। এ বছর আমাদের পূর্বপুরুষদের পিতৃভূমি ছেড়ে পলায়নের ৫৫ বছর। আশা করি, দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে দলাই লামা তাঁর লাসার প্রাসাদে ফিরতে পারবেন।” |
দলাই লামার সঙ্গে আলোচনা লবসাং সাংগে। —নিজস্ব চিত্র। |
প্রশ্ন ছিল, স্বাধীন তিব্বতের দাবির সঙ্গে আপস কী এত বছরের সংগ্রামের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা নয়? তাঁর কথায়, “আমিই সর্বকনিষ্ঠ, অরাজনৈতিক ব্যক্তি যাঁকে তিব্বতিরা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন। তাই আমার উপরে অনেক দায়িত্ব। তিব্বতিদের প্রতিদিনের যন্ত্রণা কমানো, তাঁদের উপরে হওয়া অত্যাচার থামানোই আমার প্রাথমিক উদ্দেশ্য। সেই দিকে তাকিয়েই আমরা স্বাধীন তিব্বতের দাবির সঙ্গে আপস করতেও রাজি।” ১৬ বছর আমেরিকায় কাটিয়ে তিব্বতের নির্বাসিত সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ভারতে ফেরা প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারত তিব্বতিদের জন্য যা করেছে তার ঋণ শোধ হওয়ার নয়। এখন ভারত সরকার যদি চিন ও তিব্বতের মধ্যে এই স্বশাসনের ব্যাপারে মধ্যস্থতা করে তাহলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।”
দলাই লামা আজ শিলংয়ে বলেন, “চিনের চরমপন্থী রাজনীতিকরা বলপূর্বক তিব্বতি ভাষা নিষিদ্ধ করছেন। বুদ্ধের পবিত্র চিহ্ন মুছে দিচ্ছেন। তবু আলোচনাই সেরা রাস্তা। সংস্কৃতিকে বাঁচাতে চিনের সংবিধানের আওতায় থাকতেও আমরা রাজি।” এও জানান, চিনের আপত্তির পরোয়া না করে তিনি ও দলাই লামা অরুণাচলে আসবেন। কারণ, অরুণাচলের উপরে চিনের দাবি তাঁরা মানেন না। |
|
|
|
|
|