শহরের ব্যস্ততম রাস্তাকে ভাগ করেছে রেললাইন। দিনের অনেকটা সময় বন্ধ থাকে সেখানকার লেভেল ক্রসিং। ফলে, শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে অনেকটা সময় ব্যয় করতে হয়, এমন অভিযোগ তুলে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের কাছে একটি উড়ালপুল গড়ার দাবি জানিয়েছেন কুলটির বাসিন্দারা।
কুলটিতে রেললাইনের এক প্রান্তে রয়েছে কেন্দুয়া, শিয়ালডাঙা, লালবাজার ইত্যাদি গ্রাম। অন্য প্রান্তে রয়েছে মূল শহর, ইস্কো আবাসন-সহ নানা অঞ্চল। দু’প্রান্তের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একমাত্র রাস্তা কুলটি স্টেশন রোড। ফলে, দিনভরই ব্যস্ত থাকে এই রাস্তা। কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। আবার, পূর্ব রেলের এই গ্র্যান্ড কর্ড লাইনটিও খুব ব্যস্ত। বেশির ভাগ সময়েই এই লাইন দিয়ে মালগাড়ি ও ট্রেন চলাচল করে। ফলে, দিনের বেশির ভাগ সময়ে লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ থাকে। যানবাহন ও মানুষজনকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। |
রেললাইনের দু’প্রান্তেই একাধিক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল আছে। লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ থাকলে ছাত্রছাত্রী বোঝাই স্কুলের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। সময় মতো স্কুলে পৌঁছতে পারে না পড়ুয়ারা। দীপান্বিতা মাজি নামে এক ছাত্রীর কথায়, “অনেক সময়ে রেলের গেট বন্ধ থাকার জন্য ঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রেও পৌঁছতে পারি না।” সমস্যায় পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও। রোগী নিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে বাধ্য হয়। এলাকার বাসিন্দা তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ আখতারের কথায়, “অসুস্থ মানুষজনের কাছে এই রেল গেটটি আতঙ্কের।” বাসিন্দারা জানান, ঘুরপথে যেতে হলে তাঁদের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার বেশি রাস্তা পেরোতে হয়।
দিনের পর দিন এই সমস্যায় ভুগে সম্প্রতি এলাকার বাসিন্দারা ওই জায়গায় একটি উড়ালপুলের দাবি জানিয়ে কুলটি স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান। স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা। সেটির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের কাছেও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর আগেও তাঁরা বহু বার এই ধরনের আন্দোলন করেছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সাংসদ, বিধায়কের কাছেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগের দাবি জানিয়েছেন বলে তাঁদের দাবি।
এ বিষয়ে তিনি উদ্যোগী হয়েছেন কি না, তা জানতে চাওয়া হলে আসানসোলের সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরী জানান, তিনি রেল প্রতিমন্ত্রী ও পূর্ব রেলের জিএম-কে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন তিনি। কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, পুরসভার পক্ষ থেকে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে উড়ালপুল তৈরির জন্য রেল মন্ত্রককে চিঠি লিখেছেন। আসানসোলের ডিআরএম সঞ্জয় সিংহ গেহেলট অবশ্য জানান, রাজ্যের তরফে প্রস্তাব এলে উড়ালপুলের ব্যাপারে বিবেচনা করবেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। |