এক জন মাত্র চিকিৎসক, তিন জন নার্স এবং এক জন কর্মীকে নিয়ে বছর দশেক ধরে চলছে হাওড়ার ডোমজুড়ের মহিয়াড়ি লক্ষ্মীকমল হাসপাতাল। অবশ্য এই লোকবল নিয়ে যেমন চলার কথা, তেমন ভাবেই চলছে পরিষেবা।
অবশেষে হাসপাতালটির হাল ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, জরুরি ভিত্তিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে ওই হাসপাতালের পুনরুজ্জীবন প্রকল্প পাঠাতে বলা হয়েছিল। তা এসে গিয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সরাসরি বিবেচনাধীন রয়েছে ওই প্রকল্প। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, “স্বাস্থ্যভবন থেকে আমাকে জরুরি ভিত্তিতে পুনরুজ্জীবন প্রকল্প পাঠাতে বলা হয়েছিল। আমরা ৩ কোটি টাকার প্রকল্প পাঠিয়েছি। সেটি অনুমোদিত হয়ে এলেই কাজ শুরু হবে।” |
সুদিনের আশায়। —নিজস্ব চিত্র। |
প্রায় দু’বিঘা জমির উপরে এই হাসপাতালটি এক সময়ে জমজমাট ছিল। ছিল ১০ শয্যার অন্তর্বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার, মহিলা ও প্রসূতি বিভাগ, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বসার আলাদা ব্যবস্থা এবং তাঁদের আবাসন। কিন্তু বছর দশেক আগে অন্তর্বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়াও, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হাসপাতাল ভবনটি ধীরে ধীরে জীর্ণ হয়ে পড়ে। বর্তমানে ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এমনকী, বর্ষায় ছাদ থেকে জল পড়ে।
বহির্বিভাগ চালু থাকলেও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী। হাসপাতালের এই বেহাল দশার কথা জেনেও এখনও রোগীদের একটা বড় অংশ এখানে চিকিৎসার আশায় যান। তাঁদের অধিকাংশই গরিব ও অসহায়। অভিযোগ, বেশির ভাগ সময়েই রোগীদের অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
হাসপাতালটির পুনরুজ্জীবনের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা গত বছর উদ্যোগী হন। গঠিত হয় ‘লক্ষ্মীকমল হাসপাতাল কল্যাণ সমিতি’। সমিতির সদস্য তথা ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সজল ঘোষ এবং আশিস চট্টোপাধ্যায়েরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের পুনরুজ্জীবনের জন্য তাঁরা ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দরবার করেছেন। এ ব্যাপারে তাঁরা পাশে পেয়েছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মন্ত্রী বলেন, “হাসপাতালটি পুরোদমে চালু হলে এলাকার মানুষদের সুবিধা হবে। আশা করছি, খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” |