আফতাব মডেলে এ বার ভিডিও-বিচার অন্যদেরও
ফতাব আনসারির বিচারের সময় প্রথম ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা করেছিল কারা দফতর। এ বার ফের সেই ব্যবস্থা করতে চলেছে তারা। তবে এ বার নির্দিষ্ট কোনও মামলা নয়, রাজ্যের বিভিন্ন স্পর্শকাতর মামলায় বন্দিদের ক্ষেত্রেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে কারা দফতর সূত্রের খবর। এতে নিরাপত্তা বাড়বে, খরচও অনেক কমবে বলে কারাকর্তাদের দাবি।
কারা দফতরের খবর, প্রাথমিক ভাবে কলকাতার তিনটি এবং মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানি চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক প্রকল্প সফল হলে ধাপে ধাপে রাজ্যের সব জেলেই এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তিহাড়-সহ দেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জেলে অবশ্য ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা আগে থেকেই চালু রয়েছে।
রাজ্যে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থায় হাতেখড়ি হয়েছিল আফতাব মামলার হাত ধরে। কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে হামলা এবং খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত জঙ্গি আফতাব। আদালতের রায়ে এখন ফাঁসির আসামি সে। তার বিরুদ্ধে ভিন্ রাজ্যেও মামলা রয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তার কারণেই ওই রাজ্যগুলিতে নিয়ে যাওয়া যায়নি তাকে। কলকাতার আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে আফতাবের সেলেই ক্যামেরা বসিয়ে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করেছিল কারা দফতর।
কারা দফতর সূত্রের খবর, এখন নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দেখা যাচ্ছে মাওবাদী-সহ অন্যান্য স্পর্শকাতর বন্দির ক্ষেত্রেও। সম্প্রতি মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বসে জেল ভেঙে পালানোর ষড়যন্ত্র করছে, এটা জানতে পারে পুলিশ। তার পরেই বেশ কয়েক জন মাওবাদী বন্দিকে কলকাতার তিনটি জেলে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মামলার শুনানির দিন ওই মাওবাদী বন্দিদের মেদিনীপুর-সহ অন্য জেলার আদালতে নিয়ে যেতে হয়। তা ছাড়া, রাজ্য জুড়ে যে সব মাওবাদী নেতারা বন্দি রয়েছেন, তাঁদেরও মামলার জন্য প্রায়শই আশপাশের জেলায় নিয়ে যেতে হয়। কারা দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “বারবার মাওবাদী বন্দিদের কলকাতা থেকে বিভিন্ন জেলার আদালতে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক ঝুঁকি রয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সিং চালু হলে সে সব ঝুঁকি কাটিয়ে ওঠা যাবে।”
শুধু নিরাপত্তার ঝুঁকি কাটিয়ে ওঠাই নয়, ভিডিও কনফারেন্সিং চালু হলে বন্দিদের আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতি বছর যে বিপুল অর্থ খরচ হয়, তার ধাক্কাও অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন কারা-কর্তারা। কিন্তু অনেকেই তো বলছেন, ভিডিও কনফারেন্সিং-এর যন্ত্রপাতি বসাতেই প্রচুর টাকা খরচ করতে হবে। প্রাথমিক ভাবে রাজ্যের চারটি জেলে এই ব্যবস্থা চালুু করতে প্রায় দু’কোটি টাকা খরচ হবে বলে কারা সূত্রের খবর। তা হলে খরচ কমবে কী করে?
কারা-কর্তাদের ব্যাখ্যা, এটা এককালীন খরচ। দীর্ঘমেয়াদি ভাবে এই প্রক্রিয়া চালু হলে খরচ অনেকটাই কমবে। কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, “বন্দিদের আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া করতে হয়। নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশকেও টাকা দিতে হয়।” রাজ্যের প্রতিটি জেলে প্রতি দিন গড়ে একশোরও বেশি বন্দিকে আদালতে হাজিরার জন্য নিয়ে যেতে বছরে কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়। এই খরচ বহন করতে হয় কারা দফতরকেই। “ভিডিও কনফারেন্সিং চালু হলে সেই খরচ অনেকটাই কমে যাবে।”বলছেন ওই কারা-কর্তা।
তবে এই ব্যবস্থা চালু কবে করা যাবে, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় কারা দফতর। কারণ, ওই প্রক্রিয়া চালু করতে কলকাতা হাইকোর্ট-সহ বিভিন্ন আদালতের সঙ্গে সমন্বয় প্রয়োজন। আলোচনা প্রয়োজন রাজ্যের আইন দফতরের সঙ্গেও। ওই সব প্রক্রিয়া শেষ করে ভিডিও কনফারেন্সিং চালু করতে সময় একটু লাগবে বলে মনে করছে কারা দফতর। “তাই প্রকল্প শেষের চূড়ান্ত কোনও সময়সীমা চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে।”মন্তব্য এক কারা-কর্তার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.