লোকসভা ভোটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দরবারে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল তৃণমূল-সিপিএমের।
লোকসভা ভোটের নিরাপত্তা, কেন্দ্র পিছু প্রচারের খরচ, জনমত সমীক্ষা-সহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আজ রাজনৈতিক দলগুলিকে বৈঠকে ডাকে নির্বাচন কমিশন। সেখানেই সিপিএম নেতৃত্ব অভিযোগ করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটেও তারা একই ভাবে সন্ত্রাস চালাবে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে লোকসভা ভোটে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছে সিপিএম। তাদের ওই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়।
পশ্চিমবঙ্গে গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সংঘর্ষের নজির তুলে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য এস আর পিল্লাই দাবি করেন, নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার সময় থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। নির্বাচনী আধিকারিকদেরও রাজ্যে পাঠানো হোক। যাতে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলি তাদের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন।
পাল্টা যুক্তিতে মুকুল রায় জানান, পালাবদলের পরে রাজ্যে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে যে ক’টি ভোট হয়েছে, তাতে কমিশনের কাছে একটিও অভিযোগ জমা পড়েনি। মুকুল জানান, ২০১১ সালে জঙ্গলমহল ও পাহাড়ে পরিস্থিতি অশান্ত ছিল। উপদ্রুত এলাকাগুলিতে শান্তিতে ভোটের লক্ষ্যে কমিশনকে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করার পাশাপাশি ভোট গ্রহণের সময় কমিয়ে আনতে হয়েছিল। এখন দু’টি এলাকাই শান্ত।
সিপিএম নেতৃত্বের ধারণা, প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো সন্ত্রাস চালাতে পারবে না তৃণমূল। একই ভাবে রাজ্য প্রশাসন নির্বাচনী আধিকারিকদের অকেজো করে রাখতে পারবে না। ফলে কিছুটা হলেও বামেদের পক্ষে ভোটের হার বাড়বে। যত বেশি পর্বে ভোট হবে, ততই তৃণমূলের অসুবিধা হবে বলেও মনে করেন তাঁরা। কত পর্বে ভোট হওয়া উচিত, তা নিয়ে মুকুল বলেন, “যত পর্বেই ভোটগ্রহণ হোক না কেন, তৃণমূলের কোনও সমস্যা নেই।” তৃণমূলের দাবি, এপ্রিল মাসে বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষা থাকে। ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করার আগে সেই বিষয়টি মাথায় রাখা হোক। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এই বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্যগুলির সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলছে তারা।
বৈঠকে জনমত সমীক্ষা বন্ধ করার জন্যও আজ দাবি তুলেছে কংগ্রেস। আবার সিপিএম মনে করে, নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হওয়ার পরে আর জনমত সমীক্ষার ফল প্রকাশ করা উচিত নয়।
নির্বাচনী প্রচারের খরচ নিয়েও আজ সর্বদলীয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এখন প্রতিটি সংসদীয় কেন্দ্রের জন্য ৪০ লক্ষ টাকা খরচের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু সব দলই মনে করছে, বর্তমান মূল্যবৃদ্ধির বিচারে এই ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো উচিত। কমিশনের কাছে তারা সেই দাবিও জানিয়েছে। |