|
|
|
|
দিনভর শব্দ-তাণ্ডব, সন্ধের পর মাইক খুলে নিল পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কত রকমের ‘থিম’। প্রত্যেকেই কোনও না কোনও বার্তা দিতে চেয়েছেন। যে বার্তাই রাজনীতি, খেলাধূলা, নারী নির্যাতন, অপসংস্কৃতি থেকে শুরু করে খাদ্যে ভেজালসব কিছুই রয়েছে। এক কথায় জমজমাট। এ সব খুঁটিয়ে দেখতে হলে এক একটি মণ্ডপেই বেশ কিছুক্ষণ সময় দিতে হবে দর্শনার্থীদের।
কিন্তু সারাদিন সেই সুযোগ মেলেনি। দর্শনার্থীরা এসেছেন। কিন্তু সাউন্ড বক্সের দম ফাটা শব্দে বেশিক্ষণ এলাকায় টিকতে পারেননি। অনেক চেষ্টা করে বড় জোর ৫-১০ মিনিট কাটাতে পেরেছেন কেউ কেউ। বাকিরা ছিটকে পালিয়ে বেঁচেছেন। মেদিনীপুর শহরের কলেজ স্কোয়ারের সরস্বতী পুজোয় ট্র্যাডিশন মেনেই এ বারও সকাল থেকে শব্দ-তাণ্ডব চলে। তবে সন্ধের পর পুলিশি সক্রিয়তা দেখা যায়। খুলে নিয়ে যাওয়া হয় মাইক। পাল্টা হিসেবে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা মণ্ডপের আলো নিভিয়ে দেন। |
|
তীব্র স্বরে সাউন্ড বক্সের দাপট আর থেকে বাঁচার মরিয়া চেষ্টা। মঙ্গলবার। |
তাঁদের বক্তব্য, “পুলিশ আমাদের আগে সতর্ক করতে পারত। তা না করে সাউন্ড বক্সের মেশিন তুলে নিয়ে গেল। এটা আমাদের নীরব প্রতিবাদ।” এর ফলে দর্শনার্থীদের রাস্তার আলোতেই দেখতে হয়েছে প্রতিমা। পরে পুলিশ মাইক ফিরিয়ে দেয়। শব্দসীমা মেনে মাইক বাজাতে বলে।
কলেজ স্কোয়ারে মাইক বাজানো নিয়ে নানা সময়ে প্রতিবাদ হয়েছে। মতভেদ দেখা গিয়েছে পুজো কমিটির সদস্যদের মধ্যেও। পুজোর অনুমতি দেওয়ার আগে প্রশাসনিক বৈঠকেও এ বিষয়ি উঠেছে। জোরে মাইক বাজানো যাবে না, প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেই অনুমতি মিলেছে। দু’-একটি ক্লাব মাইক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ম মেনেও চলেছে। কিন্তু বেশিরভাগ উদ্যেক্তাই হেঁটেছেন উল্টো পথে।
এর বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে এ দিন ফ্লেক্স টাঙায় মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল। মেদিনীপুর কলেজ সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক কালচার ও মানবিক সংস্থান ও সায়েন্স সেন্টারের উদ্যোগে শব্দ মাপক যন্ত্রও আনা হয়। দেখা যায়, শব্দ-তাণ্ডব ১০৫ ডেসিবেল ছুঁয়েছে। অর্থাত্ সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ৪০ ডেসিবেল বেশি স্বরে বেজেছে মাইক। কেন শব্দ বিধি মানা গেল না? প্রশাসনিক কর্তারা মুখ খুলতে নারাজ। এক পুজো উদ্যোক্তা বুদ্ধ মণ্ডলের বক্তব্য, “প্রশাসনিক বৈঠকে সকলেই বলেছিল মাইক জোরে বাজাবে না। এতে আমরাও বিরক্ত।” আর এক পুজো উদ্যোক্তা নীলরতন মহাপাত্র বলেন, “আমরা মাইক বাজায় না। তবে এই শব্দ-তাণ্ডব বন্ধ হওয়া উচিত।”
শব্দের দাপটে সকলেই কানে আঙুল দিয়েছেন। সব থেকে কষ্ট পেয়েছেন প্রবীণেরা। বৃদ্ধ সাগর পালের কথায়, “এখানে মডেলে নানা ব্যাঙ্গ চিত্র দেখতে বেশ ভাল লাগে। কিন্তু মাইকের চোটে ঢুকতেই তো পারলাম না।” সন্ধের পরে পুলিশ সক্রিয় হওয়ায় স্বস্তি ফেরে। |
|
|
|
|
|