নিউ টাউনে মোনোরেল চালানোর পরিকল্পনা হয়েছিল আগেই। কেন্দ্রের একটি সংস্থা প্রাথমিক সমীক্ষা করে জানিয়েছিল, নিউ টাউনে মোনোরেল ভবিষ্যতের পক্ষে খুবই উপযোগী গণ-পরিবহণ হয়ে উঠতে পারে। সেই প্রাথমিক সমীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পরে এ বার বিস্তারিত সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে হিডকো। হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, “চলতি বছরেই এই প্রকল্পের প্রযুক্তিগত নানা দিক খতিয়ে দেখা হবে। খরচেরও একটা খসড়া তৈরি হবে। ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি’র পরেই বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করা হবে।” |
মুম্বইয়ের মোনোরেল। ছবি: এ এফ পি। |
সম্প্রতি মুম্বইয়ে চালু হয়েছে মোনোরেল। জনবহুল ও ঘিঞ্জি ওই শহরে উড়ালপুল দিয়ে চলতে শুরু করল চার কামরার মোনোরেল। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ঘনবসতিপূর্ণ শহরে মোনোরেল খুবই উপযোগী গণ-পরিবহণ। হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন জানান, ভবিষ্যতে নিউ টাউনের জনসংখ্যা হবে ১০ লক্ষের কাছাকাছি। যা সল্টলেকের তিন গুণ। শুধু আবাসনই নয়, সেখানে প্রচুর অফিসও তৈরি হবে। ভবিষ্যতের কথা ভাবলে নিউ টাউনে মোনোরেল খুবই উপযোগী গণ-পরিবহণ হয়ে উঠবে।
নিউ টাউনে এখন মেট্রো রেল তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। নিউ টাউন রোডের মাঝ-বরাবর মেট্রোর জন্য উড়ালপুলের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে কয়েক মাস আগে। নিউ টাউনে যদি মেট্রোই চলে, তা হলে সেখানে মোনোরেল কী দরকার? হিডকো-র আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এখন যেখানে মেট্রোর কাজ চলছে, সেখান থেকে নিউ টাউনের কয়েকটি জায়গা বিশেষ করে ‘অ্যাকশন এরিয়া ৩’ অনেকটা দূরে। ‘অ্যাকশন এরিয়া ৩’ ভবিষ্যতে নিউ টাউনের খুব গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হয়ে উঠবে। কারণ, এখানে তৈরি হচ্ছে বেশ কয়েকটি বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার অফিস। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠছে এখানে। এখনই প্রতিদিন এখানে কয়েক হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করেন, যে সংখ্যাটা পরে আরও বাড়বে। এই এলাকা থেকে মূল নিউ টাউনের দূরত্ব কম-বেশি ন’কিলোমিটার। নিউ টাউনে পরবর্তী কালে গাড়ির সংখ্যা এতই বেড়ে যাবে যে, ওই ন’কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে এসে মেট্রো ধরতে অনেক সময় লেগে যাবে। দেবাশিসবাবু বলেন, “এখনও নিউ টাউনে সে ভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। বছরখানেকের মধ্যে যদি মোনোরেলের কাজ শুরু করা যায়, তা হলে অনেকটাই দ্রুত কাজ এগোনো যাবে।” হিডকো সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানেও মুম্বইয়ের মতোই মেট্রো হবে চার কামরার। বিশেষজ্ঞেরা জানান, কামরার সংখ্যা কম হওয়ায় মোনোরেল দ্রুত বাঁক ঘুরতে পারে। মেট্রো রেলের মতো অনেকখানি জায়গা লাগে না। তাই শহরের ঘন বসতি বা ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে, যেখানে মেট্রো চলতে পারে না, সেখানে খুব অনায়াসেই মোনোরেল চলতে পারে।
রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কমলে দূষণ কমে। দেখা গিয়েছে, কোনও শহরে গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা ভাল হলে সেখানে নাগরিকদের মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের প্রবণতা কমে। মোনোরেল দূষণহীন যান। দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, মোনোরেল চালু হলে নিউ টাউনের রাস্তায় গাড়ির চাপ কমে যাবে। তাই প্রাথমিক ভাবে নিউ টাউনের ‘অ্যাকশন এরিয়া ৩’-তে মোনোরেল চালুর পরিকল্পনা থাকলেও ভবিষতে একে সল্টলেক-উল্টোডাঙা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হতে পারে। |