নিজের ঘাতকটিকে বিলক্ষণ চিনতেন অভিনেতা ফিলিপ সেমোর হফম্যান। হেরোইনের নেশা কাটিয়ে উঠতে না পারলে মৃত্যু যে অবধারিত সে কথা মৃত্যুর ছ’সপ্তাহ আগে এক বন্ধুকে বলেওছিলেন এই অস্কারজয়ী অভিনেতা। কিন্তু সব জেনেও এড়াতে পারলেন না অকালমৃত্যু।
অনেকে অবশ্য এ জন্য দায়ী করছেন ফিলিপ এবং তাঁর চোদ্দো বছরের বান্ধবী মিমি ও’ডনেলের ছাড়াছাড়িকে। সম্প্রতি শোনা গিয়েছিল, ফিলিপের সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্কের জেরে মিমির থেকে দূরে সরে যেতে হয় ফিলিপকে। নিউ ইয়র্কের ওয়েস্ট ভিলেজের যে ফ্ল্যাটে তিন সন্তান ও মিমির সঙ্গে থাকতেন ফিলিপ, তার কাছেই আর একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন এই চরিত্রাভিনেতা। কিন্তু হলিউডের একটি সূত্রের দাবি, তৃতীয় ব্যক্তি নয়, সেই ছাড়াছাড়ির নেপথ্যেও ছিল হেরোইন।
আসলে মিমি জানতেন, মারণ নেশা আবার ফিরে এসেছে ফিলিপের জীবনে। তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টাও করছিলেন ফিলিপ।
কিন্তু সেই জেহাদ যে তাঁকে অন্য রকম করে তুলছিল, তা-ও খেয়াল করেছিলেন মিমি। ভয় ছিল বাবাকে অন্য রকম অবস্থায় দেখে ছেলেমেয়েরা যেন বিগড়ে না যায়। সে জন্যই সন্তানদের থেকে ফিলিপকে দূরে সরিয়ে দেন তাঁর প্রাক্তন বান্ধবী।
তবে আখেরে যে সমস্যার সুরাহা হয়নি, সেটা স্পষ্ট। সোমবার রাতে ফিলিপের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৭০টি হেরোইন-ভর্তি ব্যাগের সন্ধান পায় পুলিশ। মিলেছে ব্যবহৃত ২০টি সূঁচও। তা ছাড়া, তাঁর হাতেও একটি সূঁচ ফোটানো ছিল। সব মিলিয়ে মাত্রাতিরিক্ত হেরোইন সেবনকেই খলনায়ক বলে মনে করছে পুলিশ। আর সেই অনুমানকে দৃঢ় করছে কয়েকটি ঘটনা। তার মধ্যে প্রথমটি ঘটে ফিলিপের মৃত্যুর ছ’সপ্তাহ আগে।
এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন ফিলিপ। তাঁর নেশা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, সে কথা ফিলিপকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করেছিলেন সেই বন্ধু। তাতে জবাব এসেছিল, “আমি যদি এখনই না থামি, তা হলে আমার মৃত্যু কেউ ঠেকাতে পারবে না।”
এর পরের ঘটনাটি ঘটে সপ্তাহ দু’য়েক আগে। এক চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলেন ফিলিপ। সেখানে এক অপরিচিতকে বলে বসেন, “আমি হেরোইনের নেশা করি।” পাশাপাশি এ-ও বলেছিলেন, যে নেশা নিরাময় কেন্দ্রে যাচ্ছেন তিনি। যাঁকে কথাগুলি বলেছিলেন, সেই জন আরানডেল প্রথম দর্শনে ঠিক চিনে উঠতে পারেননি অস্কারজয়ীকে। কথাগুলো কিন্তু মনে গেঁথে গিয়েছিল জনের।
পুরনো খবর: নেশার ইতিহাস অটুট রেখেই মৃত্যু ফিলিপের
|
ভূমিষ্ঠ হলেই মাতৃহারা
সংবাদ সংস্থা • অটোয়া
৪ ফেব্রুয়ারি |
জন্মের পরে মায়ের কোলে আর ওঠা হবে না শিশুটির। সে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই তার মা তাকে ছেড়ে চলে যাবে। তাই নিদারুণ টানাপোড়েনে জেরবার কানাডার বাসিন্দা ডিলান বেনসন। এক প্রিয়জন আসবে বলে অধীর অপেক্ষা, আনন্দ। তার পরেই আর এক প্রিয়জনের পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার বেদনা। তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রবিন জীবনদায়ী ব্যবস্থার সাহায্যে বেঁচে রয়েছেন। অন্তঃসত্ত্বা থাকার ২২ সপ্তাহে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পরে ব্রেন ডেথ হয় রবিনের। গত বছর ডিসেম্বর থেকে হাসপাতালে শয্যাশায়ী রবিন। চিকিৎসকরা এখন আপ্রাণ চেষ্টা করছেন রবিনের গর্ভে ৩৪ সপ্তাহ পর্যন্ত শিশুকে বাঁচিয়ে রাখার। মার্চ মাসের শেষ দিকে অস্ত্রোপচারের পরে শিশুটির জন্ম হলেই রবিনের জীবনদায়ী ব্যবস্থা খুলে দেওয়া হবে। তাই ডিলান জানেন না, সন্তান জন্মানোর পরে খুশি হবেন নাকি সজল চোখে স্ত্রীকে বিদায় দেবেন। ব্লগে ডিলান লিখেছেন, “সন্তানকে দেখব ভেবে একদিকে আনন্দ হচ্ছে। কিন্তু তার কিছু পরেই হয়তো আমায় ছেড়ে চলে যাবে রবিন। ওকে মিস করব। একা সন্তানকে বড় করা কঠিন কাজ।” |