গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনবার বার গিয়েছিলেন একটা শীত বস্ত্রের জন্য। তা পাননি। কনকনে ঠান্ডায় কাহিল হয়ে এক বৃদ্ধার মত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাতে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের কুশডাঙি এলাকার ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম ভাদিয়া মিশর (৬৬)। কয়েকদিন ধরেই চাঁচল মহকুমা জুড়ে প্রবল শৈত্যপ্রবাহ চলছে। ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পঞ্চায়েত, প্রশাসনের কাছে আবেদন নিবেদন করলেও ওই বৃদ্ধাকে কেন গরম পোশাক বা কম্বল দেওয়া হল না তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। ওই ঘটনা প্রশাসনের ব্যর্থতা বলে দায়ী করেছেন হরিশ্চন্দ্রপুরের ফব বিধায়ক তজমূল হোসেন। বৃদ্ধার মেয়ে সীমাদেবী এ দিন বলেন, “মায়ের জন্য একটা গরম কাপড় চেয়েও মেলেনি। রাতে ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে চোখের সামনেই মায়ের মৃত্যু হলেও কিছু করতে পারিনি।” কথাগুলি বলেই তিনি ঝরঝর করে কাঁদতে থাকেন। মালদহের জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী বলেন, “কী ভাবে ওই বৃদ্ধা মারা গিয়েছেন জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” চাঁচলের সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন বিশ্বাস বলেছেন, “বিএমওএইচ-এর কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।” পাশাপাশি তিনিও জানান, ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে গরম পোশাক জরুরি। সেই ব্যবস্থা পঞ্চায়েত-প্রশাসনেরই করা দরকার। হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত সিপিএম প্রধান মহাবীর ওঁরাও বলেন, “মৃতা গরিব পরিবারের। আমরা ওকে কিছু দিতে পারিনি। প্রশাসন আমাদের সরবরাহ না করলে কীই বা করতে পারি?” হরিশ্চন্দ্রপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে সিপিএমের সভাপতি জামিল ফিরদৌসের দাবি, ব্লকে যে গরম পোশাক মজুত ছিল না সে কথা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে দেওয়া হয়েছিল। আপাতত ব্লকে ত্রাণ মজুত নেই। সে কারণে ত্রাণের জন্য জেলাপ্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাদিয়ার স্বামী ভোদর মিশর কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। নিজের বিধবা মেয়ে সীমা মিশরের সঙ্গে থাকতেন ভাদিয়া। ভাঙাচোরা বেড়ার ঘর। ফলে কয়েক দিন ধরে শৈত্যপ্রবাহের জেরে ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। শনিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তার পর একসময় ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে রাত ১১টা নাগাদ তিনি মারা যান। |