আন্ডারপাস তৈরির জন্য ৬ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কথা জানানো হলেও, যান্ত্রিক ক্রটির কারণে প্রায় দ্বিগুণ সময় ধরে কাজ চলায় নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) থেকে অসম এবং হলদিবাড়ি লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকল। এর জেরে রবিবার সকাল থেকে ওই দুই লাইনে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দুরপাল্লার সব ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরিতে চলাচল করেছে। দু’জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিলও করে দেওয়া হয়েছে। দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। এ দিন বিকেলে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে একাংশ যাত্রী বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।
নিউ জলপাইগুড়ি এবং আমবাড়ি ফালাকাটা স্টেশনের মাঝে সাহুডাঙি এলাকায় ও বেলাকোবা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে দু’টি রেল আন্ডারপাস তৈরির কাজ চলছে। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে ওই আন্ডারপাস তৈরির জন্য রবিবার সকাল চারটে থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত এনজেপি থেকে অসম এবং হলদিবাড়ি লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কথা জানানো হয়। তবে রেল জানিয়েছে, যান্ত্রিক ক্রটির কারণে সকাস দশটার মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। দশটার পরিবর্তে কাজ শেষ হয় বিকেল চারটের কিছু পরে। ট্রেন চলাচল শুরু হয় আরও কিছু পর থেকে। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের এরিয়া ম্যানাজার পার্থ শীল বলেন, “দু’টি কাজই বড় ছিল। যান্ত্রিক ক্রটির কারণে কাজ শেষ করতে দেরি হয়ে যায়। তার জেরে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। তৈরিতে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় সময়ে কাজ শেষ করা যায়নি।” আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের এডিআরএম বোনিফেস লাকড়া বলেন, “প্রায় বারোও ঘণ্টারও বেশি সময় লাইন বন্ধ থাকায়, এদিন হলদিবাড়ি-এনজেপি লাইনে চলা দু’টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়।” হলদিবাড়ি-কলকাতাগামী সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং তিস্তা তোর্সা সময়মতো ছাড়তে পারেনি। সকাল সাড়ে আটটার সময়ে বলদিবাড়ি-কলকাতা সুপারফাস্ট ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রাত আটটায় শিয়ালদহগামী দার্জিলিং মেল ছাড়ার কথা থাকলেও, এ দিন রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়ার সময়সূচি ঠিক করা হয়। একই অবস্থা ছিল অসমগামী ট্রেনগুলিরও। অসমের ডিব্রুগড় থেকে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেসের দুপুর একটার সময় এনজেপির থেকে ছাড়ার কথা থাকলেও, সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ছাড়ে। ডিব্রুগড়গামী ট্রেনটি সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা থাকলেও সন্ধ্যা ৭টায় ছাড়ে। হাওড়া থেকে ডিব্রুগড়গামী কামরূপ এক্সপ্রেসও প্রায় ১২ ঘণ্টা দেরিতে চলছে। অন্যদিকে, ডাউন অবোধ আসাম ও কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ঘুর পথে চালানো হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানানো হয়েছে।
অধিকাংশ ট্রেন দেরিতে চললেও এনজেপির অনুসন্ধান কাউন্টার কর্মীরা সাহায্য করেননি। ট্রেনের পরিবর্তিত সময় জানতে চাইলে কর্মীরা দুর্বব্যহার করেন বলে অভিযোগ। এদিন গুয়াহাটি থেকে হাওড়াগামী কামরূপ এক্সপ্রেসে ওঠেন কলকাতার বাসিন্দা প্রলয়কিংকর রায়। তাঁর অভিযোগ, “প্রথমে নিউ কোচবিহার স্টেশনে দু’ঘণ্টা তার পরে অন্য স্টেশনে আরও ৩ ঘণ্টা ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।” এনজেপি রেল যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি দীপক মোহান্তি অভিযোগ করে বলেন, “ট্রেন দেরিতে চলাচল করার জন্য যাত্রীদের ভুগতে হয়। অনুসন্ধান কেন্দ্রের থেকে তথ্য পেতে নাকাল হয়েছেন যাত্রীরা।” |