নেই অন্তর্বিভাগ, মেলে না ডাক্তারও
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজনই চিকিত্‌সক। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টার পরে প্রায় দিনই তাঁর দেখা মেলে না। জ্বর, সর্দি-কাশি হলে ভরসা দু’জন নার্স। অন্ডালের বাসকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এখানেই শেষ নয়। বার তিনেক উদ্বোধন হয়েছে, কিন্তু এখনও চালু হয়নি এখানকার অন্তর্বিভাগ। চিকিত্‌সক ও কর্মীদের আবাসনে আসেনি বিদ্যুত্‌ সংযোগ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কুয়োর জল তোলার জন্য যে পাম্প হাউস রয়েছে, সেটিতেও বিদ্যুত্‌ নেই। ফলে, কোনও রকমে চলা বহির্বিভাগের পরিষেবাই সম্বল আশপাশের গ্রামের মানুষজনের।
ভালুকসোদার বাসিন্দা সুমন মণ্ডল, দামোদর কলোনির লালু ঠাকুরেরা জানান, গ্রামবাসীর দেওয়া জমিতেই বামফ্রন্ট আমলে চালু হয়েছিল এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। তাঁদের অভিযোগ, শুরু থেকেই কেন্দ্রটির পরিকাঠামো বেহাল। রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদলের পরে পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে তাঁরা আশা করলেও বাস্তবে তা হয়নি, দাবি এলাকাবাসীর। অন্ডাল ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে স্থানীয় বিধায়ক সোহরাব আলি বাসকায় পরিদর্শন করেন। এর পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একমাত্র চিকিত্‌সক চাকরি ছেড়ে চলে যান। তার পর থেকে এক বছর কোনও চিকিত্‌সক ছিলেন না। পাঁচ মাস আগে এক জন যোগ দিয়েছেন। তবে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আসার পরে ঘণ্টা দুয়েক থেকেই তিনি অধিকাংশ দিন চলে যান বলে এলাকার অনেকের অভিযোগ। ডাক্তার-নার্স ছাড়া এখন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন এক জন ফার্মাসিস্ট, এক সুইপার ও এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী।
অন্ডাল ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ধীমান মণ্ডল জানান, বিদ্যুত্‌ সংযোগের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চিকিত্‌সকের বেশিক্ষণ না থাকা নিয়ে তাঁদের কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি বলে জানান তিনি। বাসকা লাগোয়া এলাকার তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য তথা তৃণমূলের কিষান খেতমজুর ব্লক কমিটির সভাপতি ঘনশ্যাম দেওয়াসির দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হওয়ার সময়ে বিদ্যুত্‌ সংযোগ ছিল। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই কেব্‌ল কেটে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এর পরে আর নতুন করে বিদ্যুত্‌ সংযোগের জন্য চেষ্টা করা হয়নি। তিনি বলেন, “আমরা ক্ষমতায় আসার পরে পরিকল্পনা হয়েছে, জেলা পরিষদ ও বিধায়ক তহবিলের টাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিদ্যুত্‌ সংযোগ করা হবে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এই এলাকায় বেশ কিছু কলের খুঁটি পুতে জল সরবরাহ করবে বলেও জানিয়েছে।”
অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সিপিএমের শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকায় সরকারি বিদ্যুত্‌ সংযোগ আগেও ছিল না, এখনও নেই। আমরাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির জন্য বিদ্যুতের লাইন এনেছিলাম।” তাঁর দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিদ্যুতের লাইন থেকে এলাকার কিছু লোকজন হুকিং করতেন। ফলে, ট্রান্সফর্মার বারবার খারাপ হয়ে যেত। শেষ পর্যন্ত তা আর ঠিক করা হয়নি বলে জানান তিনি। তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি বলেন, “জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং জেলা পরিষদের সঙ্গে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। দ্রুত সমস্য মিটবে।” যত দিন না মেটে, ১২ কিলোমিটার দূরে খান্দরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা ছয় কিলোমিটার দূরে রানিগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালই ভরসা এলাকাবাসীর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.