খাতায়কলমে পড়ুয়া সংখ্যা ১১২। এই শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছে ২ জন। যদিও বেশির ভাগ পড়ুয়া স্কুলে আসে না। তাই মাঠে চেয়ার পেতে আড্ডা মেরে ফিরে যাওয়া ছাড়া কাজ নেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। শুধু তাই নয়, পড়ুয়ারা না আসায় ক্লাসেই অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শক দফতর বসছে। এই ছবি আলিপুরদুয়ার কলেজিয়েট স্কুলের।
স্কুল সূত্রের খবর, শুধু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল হওয়ায় কেউ অন্য স্কুল ছেড়ে এখানে ভর্তি হতে চায় না। শিক্ষকদের অনেকেই বদলি হতে চান স্কুল থেকে। স্কুলে ক্লাস হয় না জানেন দফতরের আধিকারিকরাও। জেলা স্কুল পরিদর্শক স্বপন সামন্ত বলেন, “স্কুলটির বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। ছাত্রছাত্রী না আসায় ক্লাস হয় না। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে কী করা যায় তা দেখব।” ১৯৬২ সালে তৈরি এ স্কুলে কুমারগ্রাম, ফালাকাটা, কালচিনি, তপসিখাতা আর মাদারিহাট থেকে জুনিয়র হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এসে ভর্তি হত। ব্লকগুলির অধিকাংশে জুনিয়র হাইস্কুল মাধ্যমিকে, মাধ্যমিক স্কুলগুলি উচ্চ মাধ্যমিক হয়ে যাওয়ায় পড়ুয়ারা এই স্কুলে ভর্তি হতে চায় না। |
এই ভাবেই সময় কাটে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা-কর্মীদের।
আলিপুরদুয়ার কলেজিয়েট স্কুলে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
প্রধানশিক্ষক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “স্কুলের আট জন শিক্ষক ও তিন জন শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। কাজের অভাবে তাঁরা কার্যত হতাশায় ভুগছেন।” তিনি জানিয়েছেন, পাশ-ফেল উঠে যাওয়ায় অষ্টম থেকে নবম শ্রেণিতে উঠতে সমস্যা নেই। আগে অন্য স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ফেল করা পড়ুয়ারা এখানে ভর্তি হত। তাদের বিশেষ ভাবে ক্লাস করিয়ে পাশ করানোর চেষ্টা করা হত। স্কুলের কয়েক জন শিক্ষক জানান, স্কুলে ক্লাস প্রায় হয় না তা ভাল করেই জানেন বিদ্যালয় পরির্দশক। সে জন্য স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ঘরে মাস দুই ধরে দফতর খোলা হয়েছে।
রানাঘাট থেকে পড়াতে আসা এক শিক্ষক গোপাল বিশ্বাস, স্থানীয় সুশান্ত পাল বলেছেন, “আমরা বসে থেকে কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছি। ক্লাস নেই। কোনও কাজ নেই।” পরিচালন সমিতি সভাপতি রতন নাগ বলেন, “এলাকার এক জুনিয়র হাইস্কুল ও কলেজিয়েট স্কুল যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে নানা কারণে তা হয়নি। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।”
প্রায় একই রকম অবস্থা এলাকার অরবিন্দনগর বালিকা বিদ্যালয়ের। ওই স্কুল সূত্রে খবর, সেখানে এ বছর ১০ জন মাত্র ভর্তি হয়েছে। মোট ছাত্রী সংখ্যা ১০০। ১২ জন স্থায়ী শিক্ষিকা ও ৫ জন পার্শ্বশিক্ষিকা আছেন। এই প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা নন্দিতা ঘোষ বলেছেন, “ক্লাস নিয়মিতই হয়। স্কুলে কম্পিউটার সহ বিভিন্ন রকমের সুবিধাও রয়েছে। এলাকার অন্য স্কুল সব নির্দিষ্ট আসনের থেকে বেশি ছাত্রী ভর্তি করালে এখানে ভর্তি কমছে। |