একটি পুড়ে যাওয়া গাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার করা হল দুই ব্যক্তির দগ্ধ মৃতদেহ। গাড়ির কিছু দূরেই পড়েছিল আরও দু’জনের দেহ। তাঁদের একজনও আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন। আর এক জনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। গাড়িতে যে দু’জন ছিলেন, তাঁদের হাত গাড়ির আসনের সঙ্গে বাঁধা ছিল। গাড়িতে একটি গরুরও পোড়া দেহ পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, গরু পাচারকারীদের নিজেদের সংঘর্ষেই ওই চার জনকে খুন করা হয়েছে।
রবিবার ভোরে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বলরামপুর এলাকায় বলরামপুর-ভান্ডারিগছ রাস্তার উপরে ওই চার জনের দেহ ও গাড়িটি পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম জাফরুল মহম্মদ, জলিল মহম্মদ, গুরুঙ্গ এবং মহম্মদ সাবারি। এর মধ্যে সাবারির বাড়ি রাজগঞ্জ এলাকায়। |
পড়ে অগ্নিদগ্ধ গাড়িটি। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
বাকি তিন জন ভান্ডারিগছ এলাকার বাসিন্দা। ঘটনাস্থল থেকে একটি আধপোড়া দড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স মিলেছে। ওই লাইসেন্সে মহম্মদ সাবারির নাম লেখা রয়েছে। পুলিশের ধারণা, সাবারি সম্ভবত গাড়ির চালক ছিলেন। জাফরুল ও জলিলকে গাড়ির সামনের আসনে দগ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। গাড়ি থেকে ২০ মিটার দূরে পড়ে ছিল গুরুঙ্গের দেহ। সাবারির দেহ মেলে রাস্তার ধার থেকে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, গরু পাচারকারীদের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরেই এই চার জনকে খুন করা হয়েছে। গাড়ির পোড়া অংশ ফরেন্সিক বিভাগে পাঠানো হবে।” কমিশনার জানান, বলরামপুর এলাকায় একটি অস্থায়ী পুলিশ শিবির করা হচ্ছে। সেখানে মহিলা পুলিশকর্মী, পুলিশ ভ্যানও রাখা হবে। ঘটনার পর এলাকায় শিলিগুড়ি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারেরাও যান। তাঁরাও ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন ভোরে স্থানীয় একটি কারখানার নৈশপ্রহরী যোগেশ দাস প্রথম জ্বলন্ত গাড়িটি দেখতে পান। তিনিই স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জুঁই রায়কে খবর দেন। জুঁইদেবীর স্বামী প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য বাপিবাবুই থানায় ফোন করেন। পুলিশ এসে দেহগুলি উদ্ধার করে। যোগেশবাবু বলেন, “রাতে কয়েকজনের চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে যায়। বাইরে বেরিয়ে দেখি একটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।” |