হিংসা রুখতে পারে অনুবাদ সাহিত্যও, বললেন গুলজার
বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে হিংসা-বিবাদ মেটাতে অনুবাদ-সাহিত্যে জোর দিতে বললেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য গীতিকার গুলজার।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম প্রতিষ্ঠাদিবসে তিনিই ছিলেন প্রধান আকর্ষণ। সকলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন গুলজার। তিনি বলেন, “ভাষা যেমন ভাব প্রকাশের মাধ্যম, তেমনই ভাব প্রকাশে বাধাও। ভাষা না-বোঝার জন্য দু’টি জনগোষ্ঠীর মানুষ পরস্পরকে জানতে পারেন না।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, অসমের বন্যার কথা মরাঠি সাহিত্যে কতটা রয়েছে? মহারাষ্ট্রের ভূমিকম্পের ভয়াবহতা অসমিয়া সাহিত্যে আদৌ মেলে কি? ১৯৪৭ সালে গোটা দেশ যখন ভাগ হয়, সেখানে বাংলা বা পঞ্জাবি সাহিত্য ছাড়া আর কোথায় তা নিয়ে লেখালেখি হয়েছে? নিজেই জবাব দেন, “কবি-সাহিত্যিকরা বিশেষ অনুভূতিপ্রবণ। তাঁদের নিজের ভাষাগোষ্ঠীতে আটকে থাকলে চলে না। আবার একজনের পক্ষে কত ভাষা শেখা সম্ভব! সে কারণেই অনুবাদ সাহিত্যের বিশেষ প্রয়োজন।”
ভারতে যে অসংখ্য ভাষা রয়েছে তার উল্লেখ করে গুলজার বলেন, “অন্য দেশে ছবিটা এমন নয়। তাই ভাষার প্রশ্নে যেখানে বিবাদ হয়, অনুবাদ সাহিত্যই সেখানে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছতে পারে।” ওই অনুষ্ঠানে অতিথি-সঞ্চালক ছিলেন নাট্য-ব্যক্তিত্ব সেলিম আরিফ। তিনি জানতে চান, এত কবিতা লেখার পর অন্যের কবিতা অনুবাদ করতে গেলেন কেন? গুলজার বলেন, “ভিন্ন ভাষার সাহিত্য না-পড়লে বোঝা যায় না সেখানে কী হচ্ছে। আর অন্যদের না-জানলে কী আর জানা হল!” তাই কবিগুরু-সহ যাঁদের কবিতা পড়তে সক্ষম হয়েছেন, তিনি চেয়েছেন অন্যরাও তাঁকে জানুক। তাই তিনি বিভিন্ন ভাষার কবিতা অনুবাদ করেছেন।
প্রসঙ্গক্রমে গুলজার শোনান, ভাষা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। স্থান বিশেষেও পার্থক্য রয়েছে। স্বাধীনতা-পূর্ব হিন্দি বা উর্দুর সঙ্গে বর্তমানে সে সবের বেশ তফাত। আবার একই উর্দু পাকিস্তানে যে রকম, ভারতে হুবহু সে রকম নয়।
গুলজার একাধারে কবি, সঙ্গীত রচয়িতা, চলচ্চিত্র নির্দেশক। তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলার লোভ সামলাতে পারছিলেন না অনেকেই। ছাত্রছাত্রী, গবেষকদের সঙ্গে শিক্ষকরাও। গুলজার কাউকে হতাশ করেননি। দেড় ঘণ্টা ধরে নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। গান এবং কবিতার মধ্যে কোনটি প্রথম পছন্দের? তিনি জানান, গান রচনা তাঁর কাছে শুধুই বাণিজ্যিক। কাহিনি এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় গান লিখতে হয়। কবিতা পুরোপুরি নিজস্ব ভাবনা, অনুভূতি ও চিন্তা-চেতনার ফসল। গল্পের বই পড়া ও সেই গল্পের উপর নির্মিত সিনেমা দেখার মধ্যে কতটা ফারাক? তাঁর কথায়, “বই পড়লে দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে ওঠে। পাঠকের কাছে তা ভাবনার খোরাক জোগায়। কিন্তু সিনেমায় নির্দেশক বা চিত্রনাট্য রচয়িতার ভাবনা দর্শকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়।” আর থিয়েটারের সঙ্গে সিনেমা? এ বার গুলজার কাউকে এগিয়ে রাখতে চাননি। তিনি বলেন, “সিনেমা ও থিয়েটার দুটি আলাদা ক্ষেত্র। এদের তুলনা করা যায় না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.