অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে হাসনাবাদের মহিষপুর গ্রামের ঘটনা। গুরুতর আহত অবস্থায় রোজিপুরের বিনোদ কলোনির বাসিন্দা ওই কর্মীকে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার সন্ধ্যায় অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাসনাবাদের শিশুবিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক অজয় সমাদ্দার বলেন, “এক জন সরকারি মহিলা-কর্মীর গায়ে হাত তোলা হয়েছে। তাঁকে মারধর করা হয়েছে। একটি মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় পাটলিখানপুর পঞ্চায়েত প্রধানকেও বলা হয়েছে। সোমবার আমরাও ওই গ্রামে যাব।” হাসনাবাদ থানার ওসি বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শনিবার রাতে ওই নিগৃহীতা কর্মীও থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রতি মাসে মায়েদের নিয়ে একটি সভা হয়। সেখানে উপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় সই করা মায়েদের জন্য বাধ্যতামূলক। শনিবার হাসপাতালে শুয়ে ওই নিগৃহীতা মহিলা জানান, সারমিন সুলতানা নামে এক শিশুর মা বেশ কিছুদিন এই বৈঠকে আসছিলেন না। ১৬ জানুয়ারি ওই বৈঠকে তিনি আসেননি। ১৯ তারিখ ফের বৈঠক ডাকা হলে তিনি এক কিশোরীকে দিয়ে সারমিনাকে পাঠান। তখন তিনি ওই কিশোরীকে বলেন, সারমিনার মাকেই আসতে হবে। এই নিয়ে এক প্রস্থ ঝামেলা হয়। এরপরে ফের গত শুক্রবার ওই কিশোরী সারমিনাকে নিয়ে এলে তিনি আবার তার মাকে নিয়ে আসতে বলেন। অভিযোগ, এর পরেই সারমিনের কাকা সামসুর জামান তাঁর পেটে ও বুকে লাথি মারে। মুখে, পিঠে কিল চড় ঘুষি মারে। সারমিনের মা-ও তাঁকে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। এর পরে ওই কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকার লোকজন তাঁকে গাড়িতে তুলে দেন। তাঁর ভাই খবর পেয়ে তাঁকে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন। নিগৃহীতা বলেন, “ঘটনার পরে ওই এলাকায় গিয়ে কাজ করতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।” তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সামসুর জামানের বক্তব্য, “ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী প্রায়ই আসেন না। সারমিনের মা না আসায় তিনি অশালীন ভাষায় কথা বলায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। মারধর করা হয়নি।”
শুক্রবারই হাসনাবাদ শিশুবিকাশ কেন্দ্রের আধিকারিক থানায় অভিযোগ করেন। ওই আধিকারিক, সুপারভাইজার, পাটলিখানপুর পঞ্চায়েত ও হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে হাসপাতালে গিয়ে নিগৃহীতার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেওয়া হয়। |