|
|
|
|
|
|
|
ছবি: প্যারাডাইস: লাভ
দেশ: অস্ট্রিয়া
পরিচালক: উলরিখ সিড্ল
সাল: ২০১২
শান্তনু চক্রবর্তী |
|
সকালে
উঠেই টিন-এজার কন্যাটিকে এক বান্ধবীর বাড়ি গছিয়ে দিয়ে টেরেসা উড়ে যাবেন তাঁর স্বর্গের খোঁজে, কেনিয়ার পূর্ব উপকূলে। পূর্ব আফ্রিকার সেই বাতাসে একটা আশ্চর্য গন্ধ! উপকূলের আফ্রিকান পুরুষদের গায়েও নাকি অবিকল সেই একই গন্ধ সমুদ্র, বালি, নারকোল বনের সুবাসে মাখামাখি। টেরেসা এত কিছু জানতেন না। যে বান্ধবীদের জানকারির ভরসায় তিনি এই স্বর্গ-সফরে এসেছেন, তাদেরই এক জন বলেছিল কথাটা। টেরেসার এই বান্ধবীরাও টেরেসার মতোই। ওই পঞ্চাশের এ দিক-ও দিকে বয়স। চর্বি-থলথলে পৃথুল শরীর ছেড়ে যৌবন কবেই কেটে পড়েছে তাদের স্বামীদের মতোই। কিন্তু খিদেটা তো আছে! আর এই উপকূল আফ্রিকাতেই তো কিছু পাউন্ড বা ইউরো খরচ করলেই মেলে সেই খিদে মেটানোর সফরসঙ্গী তেজি, তাজা, সমুদ্রের মতোই পেশির ঢেউ-তোলা কৃষ্ণাঙ্গ শরীর। কিন্তু মধ্যবয়সিনীদের অঢেল যৌনতার সেই স্বর্গরাজ্যে এসেও শুধুই যৌন-খেলার হাট্টাকাট্টা জোয়ান কৃষ্ণাঙ্গ পুতুলে টেরেসার মন ওঠে না। তাঁর বায়না: বিছানার খেলাধুলোয় একটু প্রেমও থাকুক। আর এখান থেকেই টেরেসার সেই কল্প-প্রেমের স্বর্গ খুঁড়ে নরকের আগুন বের করে আনার খেলাটা শুরু করে দেন পরিচালক। অনবরত যৌন ঘনিষ্ঠতার মধ্যে দুঃসহ একাকিত্বের আখ্যান বোনেন। |
|
প্রথম দিনের সঙ্গীটিকে টেরেসার একদম পছন্দ হয় না। ছেলেটা ঘ্যানঘেনে। একটুও যত্ন জানে না। কিন্তু যাকে তাঁর মনে ধরে, তাকে তিনি এলিট-ইউরোপীয় রতি-কলা শেখান। যুবকের এক চিলতে বিশ্রী ঘরের আটপৌরে চৌকিতে শুয়ে তিনি শেখান, চুম্বনের সময় জিভটাকে মুখের ঠিক কতটা ভেতরে ঢোকাতে হয়। টেরেসা যে ভাবে চান, ছেলেটি ঠিক তেমনি করেই তাঁর বেঢপ শিথিল স্তনে আলতো-নরম হাত রাখে। তাঁর সৌন্দর্যহীন শরীরটাকে প্রেমিকের মতোই আদর করে। টেরেসা সেটাকে প্রেম বলেই ধরে নেন। তাই যুবকের ‘বিশ্বাসঘাতকতা’য় প্রায় কিশোরী প্রেমিকার মতোই রাগে-অভিমানে ফেটে পড়েন। আসলে ওটা কল্প-স্বর্গ থেকে পতনের আক্ষেপ।
ছবিতে একের পর এক যৌন দৃশ্য এসেছে। যেখানে উত্তেজনার ছিটেফোঁটাও কালো-কষটা তিতকুটে কমেডির, আর প্রায় নিউজরিলের মতো নির্মোহ ক্যামেরার ব্লটিং পেপার দিয়ে নিষ্ঠুর ভাবে শুষে নেওয়া হয়েছে। পয়সাওয়ালা, বিগতযৌবনা ওই ইউরোপীয় নারীদের সারি সারি রোদ-পোহানো একঘেয়ে শরীরের মতোই যেন এই দৃশ্যগুলোও ছবিতে সাজানো থাকে। ছবিটা দেখতে দেখতে আপাত ভাবে মনে হতে পারে গরিবগুর্বো, কালো আফ্রিকাকে এখানে হেয় করা হয়েছে। আসলে কিন্তু পাশার দানটাকেই উলটে দিয়েছেন পরিচালক। যৌন-উপনিবেশ বানাতে আসা ইউরোপকে তাদেরই ধান্দা-লোভ-ঠগবাজির অস্ত্রে মোকাবিলা করেছে এই কৃষ্ণাঙ্গ পূর্ব উপকূল। তাদের গরিবিকে ব্যবহার করতে আসা এই সাদা চামড়াওয়ালিদের তারা পালটা ব্যবহার করেছে। নিষ্ঠুর ভাবে ঠকিয়েছে। দোহন করেছে ষোলো আনা। ইউরোপ তার অক্ষম বাসনা দিয়ে তাদেরকে যত অপমান করেছে, কালো মানুষেরাও ততই পালটা অপমান করেছে। তাকে প্রতিরোধও বলা যেতে পারে। যেমন হোটেলের ঘরে মহিলারা তাদের সম্মিলিত, নির্লজ্জ কামুকতা দিয়েও স্ট্রিপটিজ-নাচিয়ে ছেলেটির পুরুষাঙ্গ জাগাতে পারে না। টেরেসার জন্মদিনের সন্ধেটার সমস্ত হাসি-হুল্লোড়-আলো এক ফুঁয়ে নিভিয়ে সেই কৃষ্ণ-কিশোর ঘর ছেড়ে চলে যায়।
কোনও সঙ্গী না পেয়ে, হোটেলের বারটেন্ডারকে নিজের ঘরে ডেকে, ভাল করে সাবান ঘষে চান করিয়ে, টেরেসা তাকে তাঁর গোপনাঙ্গে চুমু খেতে বলেন। শান্তশিষ্ট লোকটিও মুখ ফিরিয়ে চলে যায়, তার ইচ্ছে করে না। টেরেসাকে সেই প্রত্যাখ্যান হজম করতে হয়। দুটিমাত্র সোয়াহিলি শব্দ শিখে আর টাকার দেমাকে স্বর্গসুখ কিনতে আসা টেরেসা সেই রাত্তিরে ভীষণ একা। তাঁর মেয়ে সারা দিন তাঁকে জন্মদিনের ‘উইশ’ করেনি। শেষ দৃশ্যে আমরা দেখি, পিকচার-পোস্টকার্ডের মতো সাজানো ভোরে সাগরবেলায় হাঁটতে বেরিয়েছেন টেরেসা। আফ্রিকান ছেলেরা বালির ওপর কসরত করছে। গোটা ফ্রেমে কী ভীষণ স্বর্গ-স্বর্গ ভাব! যৌবন চলে যাওয়ার আর অন্তহীন নিঃসঙ্গতায় বন্দি হয়ে যাওয়ার কষ্ট থেকে বাঁচতে বেপরোয়া ঝাঁপ দিয়েছিলেন টেরেসা, ‘শরীর টানলেই মন আসবে’ এই ভরসায়। তাঁর এই ভুল স্বর্গে নির্বাসনের বেদনা ভোরের আলোর মতোই চকচক করে বালির ওপর। |
|
১৬ অগস্ট ২০৪৩ |
গতকাল ফ্রেজারগঞ্জ মত্স্যবন্দরে অন্যান্য মাছের সঙ্গে একটা দশ ইঞ্চি লম্বা রুপোলি রঙের মাছ ধরা পড়েছে। উপস্থিত মত্স্যজীবীরা মাছটাকে দেখে অবাক হয়ে যান। কী মাছ? কী মাছ? কিছুতে উত্তর খুঁজে পাচ্ছিলেন না। হঠাত্ এক বছর দশেকের বাচ্চা ভিড় দেখে দৌড়ে আসে আর এক ঝলক মাছটাকে দেখেই চিত্কার করে ওঠে, ‘আরে, এ তো ইলিশ মাছ! বইতে কত ছবি দেখেছি!’ শুনেই উপস্থিত সকলে হাঁ। এটাই সেই ইলিশ মাছ? যা তারা চোখে দেখেনি বটে, তবে বাপ-দাদার মুখে কত যে গল্প শুনেছে ইয়ত্তা নেই! শোনা যায়, অতীতে বেপরোয়া মাছশিকারের ফলে এরা হারিয়ে যায়। সকলেই জানত ইলিশ মাছ আর নেই। তাই, কেউ বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না কিছু ক্ষণ। যখন সম্বিত ফিরল, শুরু হল লড়াই। মাছ দখলের। তবে মারামারি করে নয়, নিলামে দর হেঁকে। চোখে না দেখলেও সবাই জানে, এই মাছটা ছিল বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় মাছ, দারুণ সুস্বাদু। তাই নিলামে হারতে রাজি নয় কেউই। দর চড়তেই থাকল। পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বুঝে এক জন পরামর্শ দিল মাছটাকে মিউজিয়ামে দিতে। দেশের কোনও মিউজিয়ামেই নাকি ইলিশ মাছের জীবাশ্ম নেই। এ দিকে খবর ছড়িয়ে পড়ল। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করল। মত্স্যমন্ত্রীর কানে এ কথা পৌঁছতেই, দলবল নিয়ে পৌঁছে যান ফ্রেজারগঞ্জে। মাছটার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে সেটাকে সংরক্ষণের নির্দেশ দেন তিনি। পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘শুধু ইলিশই নয়, একে একে বিলুপ্ত হয়েছে পুঁটি, কই, শিঙি, মাগুর, ল্যাটা। বাজারে আছে এখন শুধু রুই, কাতলা আর সামুদ্রিক কিছু মাছ। সেগুলো হজম করেই বাঙালির মত্স্যপ্রীতি কোনও রকমে টিকে আছে। তাই এ সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। বরং ইলিশ মাছের জিন থেকে কোনও ভাবে আবার এই প্রজাতিটিকে ফিরিয়ে আনা যায় কিনা, সে বিষয়ে জীববিজ্ঞানীদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।’
রতন কুমার দত্ত, বাঘা যতীন, কলকাতা |
|
|
|
|
দুটো মাথা থাকার
দশটা যাচ্ছেতাই অসুবিধে
উপল সেনগুপ্ত |
|
|
১ |
২ |
৩ |
হেড করতে উঠলে
মাথায় মাথায় জঘন্য ঠোকাঠুকি। |
একটার জয়বাংলা হলে
অন্যটার পালানোর পথ নেই। |
অন্য মাথার আবদার রাখতে
সিনেমা হলে ঢুকে টোটাল বোর। |
|
|
৪ |
|
নিশ্চিন্তে একটু প্রেম করার উপায় আছে? ঘাড়ের ওপর পাহারাদার।
|
৫ |
৬ |
৭ |
এক জন তো বাউন্সার
দারুণ ‘ডাক’ করল, অন্য জন? |
দুই মাথায় ঝগড়া বাধলে,
নিজের হাতেই টেরিফিক মার খাওয়ার চান্স।
|
এক জন চিংড়ি সাঁটালে
অন্য জনের অ্যালার্জি ফ্রি। |
|
|
৮ |
৯ |
সেলুনে ডবল খরচের ধাক্কা। |
নাম জানতে চাইলেই চূড়ান্ত কনফিউশন। |
|
|
১০ |
এক জনের নাক ডাকায় অন্য জনের ঘুম বরবাদ। |
|
|
|
উলটো
উল দিয়ে তৈরি যার toe
রাতে সেথায় বেজায় রোদ, দিনে চাঁদের আলো
নেত্রী-নেতা শিক্ষিত লোক, চরিত্তিরও ভাল!
জ্যাম নেইকো রাস্তাঘাটে, বিষ নেইকো চালে
নর্মাল সব মানুষ দেখায় সন্ধে-সিরিয়ালে! |
|
|
|
• আমি উলটো প্যারানয়েড। আমার সন্দেহ, লোকে আমার ভাল করতে চাইছে!
জে. ডি. স্যালিংগার
• যখন কোনও যুবককে দেখি নাকে তিন-চারটে আংটা ফুঁড়ে চলেছে, তখনই বুঝি, লোকটার মধ্যে কিচ্ছু অন্যরকমত্ব নেই।
পি. জে. ও’রুর্ক
• শত্রুরা তোমায় দেখায়, তোমার কোন জিনিসগুলো পালটানো উচিত। তাই শত্রুরাই সেরা বন্ধু।
গ্যারি বাসি
• একঘেয়েমি হল আকর্ষণেরই উলটো পিঠ। দুটোই ঘটে জীবনের ‘ভিতরে’ না থেকে ‘বাইরে’ থাকার জন্য, আর একটা অবধারিত ভাবে অন্যটায় গড়ায়।
শোপেনআওয়ার
• প্রঃ উলটো ভাল?
গর্গরেফ: যদি তার সঙ্গে ‘পালটা’ জোরসে সেঁটে থাকে। যা বড্ড চলছে, তাকে উলটে পালটে ফেলা দারুণ, যদি ব্যাপারটা আগের চেয়ে একটু খারাপ হয়, তা হলেও। কারণ সেই ওলটানোর সাহসটা দেখে better-উলটোকারী এগিয়ে আসবে।
প্রঃ তা বলে সব কিছুকেই ওলটানো হবে?
গর্গরেফ: না, সত্য বা সুন্দরকে হরদম ওলটানো গেলেও, কচ্ছপকে উলটে দেওয়া ভাল নয়।
|
|
|
আপনিও লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের একটা রিপোর্ট? ঠিকানা:
টাইম মেশিন,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০ ০০১ |
|
|
|
|
|
|
|