|
|
|
|
দেবগৌড়ার নিশানাও দিল্লি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১ ফেব্রুয়ারি |
বয়স ৮০ পেরিয়েছে তো কী হয়েছে! জোটের কথা বলে আবার দিল্লিতে চোখ হারদানহাল্লি ডাড্ডেগৌড়া দেবগৌড়ার।
নীতীশ কুমারের পরে লোকসভা নির্বাচনের আগে একটি প্রস্তাবিত জোট গড়ার কথা বলে এ বারে আসরে নেমে পড়লেন এই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীও। জানিয়েছেন, দিল্লিকেই পাখির চোখ করে নীতীশের মতো তিনিও অন্য আঞ্চলিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন।
সব মিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি দলগুলিকে নিয়ে জোট গড়ার উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যেই বিজেডি প্রধান নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে দেখা করেছেন সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাট। আগামী সপ্তাহে এডিএমকে-নেত্রী জয়ললিতার সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। এর মধ্যেই আজ প্রস্তাবিত ফ্রন্ট নিয়ে মুখ খুলে দেবগৌড়া জানান, তিনি নীতীশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেছেন। কারাট, এ বি বর্ধন, নবীন এবং মুলায়মের সঙ্গেও কথা বলেছেন। দেবগৌড়ার কথায়, “আমি নিজের মতো করে অল্প চেষ্টা করছি। সবাইকে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করছি।” সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়ম বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও আজ সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “লখনউ দখল হয়ে গিয়েছে। এ বার আসল খেলা দিল্লিতে।”
নরেন্দ্র মোদীকে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মনোনীত করার পর গত অক্টোবরে বামেদের উদ্যোগে দিল্লিতে ১৪টি দলের সমাবেশ হয়। এ বার সেই দলগুলিই দিল্লিতে ৫ ফেব্রুয়ারি ফের বৈঠকে বসছে। সেখানেই জোট নিয়ে চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই দিনই শুরু হচ্ছে সংসদের অধিবেশন।
আঞ্চলিক দলের নেতারা চাইছেন, মনমোহন জমানার শেষ সংসদ অধিবেশনে একজোট হয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির উপর চাপ তৈরি করতে। নীতীশ বলেছিলেন, বিকল্প জোট তৈরির প্রথম পদক্ষেপ হবে সংসদে সমমনোভাবাপন্ন দলগুলির একটি ব্লক তৈরি করা। বাম সূত্রে খবর, সেই সূত্র মেনেই ৫ তারিখ সব দলের নেতারা এক সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের রণকৌশল ঘোষণা করবেন। ভোটের আগে সংসদের শেষ অধিবেশনে ইউপিএ-সরকার কোনও জনমোহিনী ঘোষণা করলে তাতেও এক সুরে বাধা দেবেন এই সব দলের সাংসদরা। নীতীশ ও বাম নেতারা প্রাথমিক ভাবে মোদীকে সামনে রেখেই বাকিদের এক মঞ্চে আনার চেষ্টা করছেন। জেডি (ইউ) নেতা কে সি ত্যাগীর কথায়, “আমরা কংগ্রেস ও বিজেপি-র থেকে সমদূরত্ব রেখেই চলছি। কিন্তু আমাদের প্রধান নিশানা মোদী।” অনেকেই মনে করছেন, এ সবই আসলে লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়া। ভোটের আগে আনুষ্ঠানিক কোনও ফ্রন্ট খাড়া করা যাবে কি না, তা নিয়ে কেউই নিশ্চিত নন। ভোটে কে কত আসন পাবে, তার উপরেই অনেক অঙ্ক নির্ভর করছে। যার শক্তি বেশি হবে, তাকে কেন্দ্র করেই বাকিরা ভিড় জমাবে। তা সে মমতা বা বামেরাই হোন কিংবা নীতীশ বা মুলায়ম। কিন্তু ভোটের আগে কেন্দ্রে পরবর্তী সরকারে নিজেদের ভূমিকার কথা না বললে শুধুই কংগ্রেস ও বিজেপির বিরোধিতা করে ভোট চাওয়া মুশকিল। সে কারণেই সব দলই বোঝাতে চাইছে, লোকসভা ভোটের পরে কেন্দ্রে অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি সরকার হলে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। এ কথা বলেই নিজের নিজের রাজ্যে ভোট চাইছেন এই সব আঞ্চলিক দলের নেতারা।
আঞ্চলিক দলগুলিকে একত্র করা গেলেও নির্বাচনী জোট গড়া যে সম্ভব নয়, তা বুঝতে পারছেন নীতীশ-কারাটরা। বাম নেতারা কিছু বিকল্প নীতি খাড়া করার চেষ্টা করছেন, যাতে সব দল একমত হয়। সেই অভিন্ন কর্মসূচির কথা বলেই দলগুলি নিজেদের মতো ভোটে যাবে। দেবগৌড়ার কথায়, “নির্বাচনের আগে যদি জোট খাড়া করা সম্ভব না হয়, দলগুলি কোনও একটি বিষয়ে একমত হয়ে এক মঞ্চে আসতেই পারে। পরবর্তী কালে তা আনুষ্ঠানিক জোটের চেহারা নিতে পারে।” রামগোপাল যাদবেরও মত, লোকসভার ফল প্রকাশের পরেই এই জোট তৈরি হবে। |
|
|
|
|
|