|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ১... |
|
আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলা-র সময়েই এক সঙ্গে সব থেকে বেশি বাংলা বই
প্রকাশিত হয়। তেমন কিছু নতুন বইয়ের কথা নিয়েই এ বারের পুস্তক পরিচয়।
|
নতুন গদ্যভাষ্য |
|
তিন কাল, অরিন্দম চক্রবর্তী। গাঙচিল, ৩০০.০০ |
অতীতের স্মরণ, ভবিষ্যতের আশা, আর বর্তমানের প্রতি মুহূর্ত নিয়ে অরিন্দম চক্রবর্তীর নতুন গদ্যভাষ্য। তাতে রবীন্দ্রনাথ শেষ জীবনে কতটা সময়কালসচেতন হয়ে পড়েছিলেন, যুদ্ধবিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে সভ্যতার সংকট তাঁর বিশ্বাসের জগৎকে কী ভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিল— এমন প্রসঙ্গ থেকে অরিন্দম স্বচ্ছন্দে চলে যান পঞ্চাশ বছর ধরে ‘বিশ্রাম’ আমাদের জীবন থেকে কমতে-কমতে কী ভাবে উধাও হয়ে গেল— সে প্রসঙ্গে। ‘এত অবসরের আকাল কী করে ঘটে গেল?’— এ প্রশ্ন তোলার সঙ্গে বইটির কথামুখ-এ তিনি কবুল করেছেন ‘অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ নিয়ে, আর এই তিনের জড়ানো বিনুনি বাঁধা কল্পনাদেবীকে নিয়ে কিছু অম্লমধুর মনন সেই সব পাঠকের জন্য পরিবেশন করলাম যাঁরা পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও বাংলায় ফিলসফি পড়তে ভালবাসেন।’ |
শিল্পজীবন |
|
গণেশ পাইন/ সতত পুরাণকল্প, সম্পা: সমীর ঘোষ মধুময় পাল। দীপ প্রকাশন, ৩০০.০০ |
‘শিল্পী তাঁর মনটাকে পলকাটা হিরের মতো প্রস্তুত করবেন। যা পৃথিবীর সমস্ত কোণ থেকে আলো গ্রহণ করে নিজের অভ্যন্তরের কেন্দ্রীয় বিন্দু থেকে তা বিকিরিত করতে থাকে।’— এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন গণেশ পাইন। এমন সাক্ষাৎকারের সঙ্গে তাঁর আরও কিছু সাক্ষাৎকার এবং বেশ কিছু রচনা। তাঁকে নিয়ে নিজস্ব মেজাজে ব্যঞ্জনায় লিখেছেন তাঁর দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ঠ জনেরাও। এই রচনাদির ভিতর দিয়ে ফুটে উঠেছে তাঁর মেধা ও মননের ভুবন, এবং আড্ডার বিষয়— শিল্প, ইতিহাস, পুরাণ, স্মৃতিকথা, সামাজিক অনুষঙ্গ থেকে অস্থির রাজনীতি। সঙ্গে আছে ১৯৬৪-১৯৯০ পর্বে শিল্পীর করা প্রচ্ছদ ও অলংকরণের দুর্লভ সম্ভার। সংকলনটির সম্পাদক সমীর ঘোষ ও মধুময় পাল তাঁদের ‘প্রসঙ্গ কথা’য় খেয়াল করিয়ে দিয়েছেন, ‘শিল্পী নিয়ে কোনও সংকলন হলে আবশ্যিকভাবেই থাকে তাঁর শিল্পকৃতি বিষয়ে আলোচনা। এখানে যে লেখাগুলো আছে তা সম্প্রতি লেখা না হলেও এতটুকু পুরাতন নয়।’ |
মুক্তধারা |
|
রং কাঁকর রামকিঙ্কর, মণীন্দ্র গুপ্ত। অবভাস, ৩২৫.০০ |
দরিদ্র অন্ত্যজ নিরক্ষর পরিবারের ছেলে রামকিঙ্কর যে গভীর স্বজ্ঞা থেকে শিল্পী হয়ে উঠেছিলেন, তা তাঁকে ভারতশিল্প বা নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলারও বাইরে এক আন্তর্জাতিক শিল্পের মুক্তধারায় পৌঁছে দিয়েছিল। তাঁর এই শিল্প-পরিক্রমার সঙ্গে কী ভাবে মিশে গিয়েছিল তাঁর প্রেমের দুঃখময় পরিণতি, অসমর্থিত ঘরকন্না, স্বজন, ছাত্রছাত্রী, দেশি মদ— মণীন্দ্র গুপ্তের কলমে। এমন এক কবির ছাঁচভাঙা গদ্যে যখন বর্ণিত হতে থাকে রামকিঙ্করের মতো চিত্রকরের শিল্পজীবন, তখন তাতে রঙের সঙ্গে মিশে যায় তিসির তেল আর খোয়াইয়ের কাঁকর। গত শতকে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের উপক্রমণিকা দিয়ে ‘আরম্ভ’ করেছেন মণীন্দ্র গুপ্ত, বাকিটা দূরত্ব থেকে তাঁকে, তাঁর ছবি বা ভাস্কর্যকে বোঝার চেষ্টা। সঙ্গে রঙিন আর্টপ্লেটে রামকিঙ্করের শিল্পকর্মের পরিচয়। |
যাত্রাসংস্কৃতি |
|
যাত্রার সঙ্গে বেড়ে ওঠা, প্রভাতকুমার দাস। কারিগর, ৬০০.০০ |
এ বই বাংলার যাত্রাসংস্কৃতির ধারাবাহিক ইতিহাস নয়, কিন্তু যাত্রা নিয়ে যাঁরা অনুসন্ধিৎসু, তাঁদের জন্য এর পাতায় পাতায় রয়েছে ইতিহাসের অজস্র গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যাত্রার সঙ্গেই বড় হয়েছেন প্রভাতকুমার দাস, বড় হয়ে মজেছেন তারই রসে। যাত্রাজগতের বহু নক্ষত্রকে খুব কাছে পেয়েছেন, রাতের পর রাত অভিনয় দেখেছেন। সাক্ষাৎকার, কথোপকথন, গবেষণা এসেছে পরবর্তী পরিণত পর্যায়ে। ষাট বছরের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় জারিত বিভিন্ন সময়ের আটচল্লিশটি লেখা এখানে বিষয় অনুযায়ী বিন্যস্ত হয়েছে: বিবর্তন, বরেণ্য যাত্রা-পথিক, স্মরণ, নকল-আসল, ঐতিহ্যের সন্ধানে, যাত্রার সঙ্গে শীর্ষকে। যাত্রার বর্ণাঢ্য অতীত প্রভাতকুমারের লেখনীতে সজীব হয়ে উঠেছে, সঙ্গে আছে বহু দুর্লভ ছবি ও নথিপত্র। |
অন্তঃসলিলা |
|
নির্বাচিত সম্পূর্ণা, সম্পা: কৃষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ণালী পাইন ঈশিতা চক্রবর্তী। পরি: ইন্ডিয়ানা, ২৫০.০০ |
আশাপূর্ণা দেবীর ছোট বোন সম্পূর্ণা দেবীর (১৯১১-১৯৮৬) সৃজনশীলতা সম্পর্কে বাংলা সাহিত্যের পাঠককুলের অজ্ঞতা ঘুচল। আপন মনে লেখায়-রেখায় আপ্লুত মেয়েটির ষোলো বছরে বিয়ে, শ্বশুরবাড়ির প্রতিকূলতার মধ্যেও ‘অলকা দেবী’ ছদ্মনামে কিছু গল্প-কবিতা ছাপা হয়। একদিন জানাজানি হতে বন্ধ হল সেই পথ। সম্পূর্ণা-র অবরুদ্ধ সত্তা গোপনে ব্যক্ত হতে থাকল মূলত কবিতায়, ছবি আঁকায়। নিবিড় একাকিত্ব ও সংস্কার-উত্তীর্ণ মুক্ত মন— দুয়েরই সাক্ষ্য তাঁর সৃষ্টি। প্রবীণ বয়সের অসমবয়সী বন্ধু সুষমা (কল্যাণী চক্রবর্তী) সযত্নে আগলে রেখেছিলেন তারই একাংশ। ‘সম্পূর্ণা দেবী শতবর্ষ স্মারক সমিতি’ প্রকাশিত বইটিতে আছে শতাধিক কবিতা, ৩৫টি ছবি, গল্প ও তাঁর আত্মজনের স্মৃতিচারণ। অনালোচিত, বিস্মৃত মানুষটির পরিচয় ‘সংকলন প্রসঙ্গে’ অংশে তুলে ধরেছেন তিন সম্পাদক। |
তীক্ষ্ন এবং স্বতন্ত্র |
|
জনপ্রতিনিধি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্টুপ, ২০০.০০ |
এক ডজন লেখা। নানা মাপ, নানা বিষয়। নানা ধরনেরও— আনুষ্ঠানিক বক্তৃতা, বই নিয়ে আলোচনা, সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রবন্ধ। কিন্তু একটি যোগসূত্র আছে। ভূমিকায় সূত্রটি ধরিয়ে দিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় লিখছেন, ‘... আমাদের বর্তমান ব্যবস্থার প্রকরণ আর কৃৎকৌশলের উৎপত্তি কীভাবে হলো, তার রীতিনীতির বর্তমান চেহারা কেমন করে প্রতিষ্ঠা পেল, আর ভবিষ্যতে তার বিকাশের সম্ভাবনা কী...’ এই প্রবীণ সমাজবিজ্ঞানীর সব লেখাতেই এক তীক্ষ্ন এবং স্বতন্ত্র দৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়, এই সংকলনও তার ব্যতিক্রম নয়। বিশেষত, প্রথম প্রবন্ধটিতে আঠারো-উনিশ শতকের ভারতে ‘আদি-আধুনিকতা’র যে লক্ষণগুলি তিনি বিচার করেছেন, তা কেবল ইতিহাসচর্চায় নতুন চিন্তার খোরাক জোগায় না, ভারতের বর্তমান রাজনীতিকেও নতুন চোখে দেখার প্রেরণা দেয়। |
গাঁধীচিন্তন |
|
মহাত্মা গান্ধি ১-২, নির্মলকুমার বসু। সম্পা: অভীককুমার দে। পুনশ্চ, ১২৫০.০০ |
গাঁধীজিকে দেবত্ব আরোপে আপত্তি ছিল নির্মলকুমার বসুর, তাতে তাঁর পথনির্দেশকে সাধ্যের বাইরে বলে সহজেই পাশ কাটানো যায়। লিখেছেন ‘গান্ধিজি যেসব শিক্ষা দিতে এসেছিলেন, সেগুলি অত্যন্ত সোজা; কিন্তু সেগুলি অভ্যাস করতে গেলে আমাদের চলতি জীবনে বিষম ওলট পালট বেধে যায়। সেইজন্য সহজে ওপথে কেউ হাঁটতে চায় না।’ গাঁধীজি সম্পর্কে তাঁর সব বাংলা রচনা এ বার দুই খণ্ডে সংকলিত হল। সম্পাদক জানিয়েছেন ‘প্রবন্ধগুলির দুইদিক। একদিকে তাঁর বৌদ্ধিক চর্চার দ্বারা পরিজ্ঞাত গান্ধি, আর একদিকে তাঁর গান্ধি-সংস্পর্শে-আসা অভিজ্ঞতায় প্রাপ্ত গান্ধি।’ আর এই প্রসঙ্গে উপস্থাপনায় গৌতম ভদ্র: ‘পরাধীন জাতির দেশসেবক সমাজবিজ্ঞানিরূপে গান্ধির রচনা পাঠ, বোঝা ও প্রচার, এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে গান্ধি পরিকররূপে গান্ধির দিনচর্যা ও দর্শনের কথক এবং স্বাধীন ভারতীয় রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ও প্রাতিষ্ঠানিক মেধাজীবীরূপে গান্ধিচিন্তন।’ |
হরিদাসের গুপ্তকথা |
|
হরিদাসের গুপ্তকথা, ভুবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, সম্পা: অর্ণব সাহা। সপ্তর্ষি, ৫০০.০০ |
বাবার ভাঙা দেরাজ থেকে বের করে সে বই বাড়ির গোয়ালঘরে গিয়ে পড়তেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। আর, ষোলো বছর বয়স থেকেই চলিত বাংলায় গদ্য লেখার স্বপ্ন যে প্রমথ চৌধুরী দেখতেন তারও প্রেরণা ছিল সেই হরিদাসের গুপ্তকথা। শরৎচন্দ্রের ভাষায় ‘বদ্ছেলের সেই অপাঠ্য পুস্তক’ বহু দিন বাঙালির প্রাণে সুপ্ত বাসনার মতো ছিল। রবীন্দ্রনাথের ‘খাতা’ গল্পের উমা নতুন লিখতে শিখে বউঠাকুরানীর বালিশের নীচ থেকে সেই গুপ্তকথা বের করে তার পাতায় পাতায় লিখেছিল কালো জল, লাল ফুল। বাঙালি সংস্কৃতির অন্দরমহলের সঙ্গে এমন ভাবে জড়িয়ে থাকা বইটির সটীক সংস্করণে প্রায় প্রতিটি প্রসঙ্গের টীকা দেওয়া হয়েছে। এটি আসলে ভুবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের লেখা কি না সে বিষয়ে তর্ক সম্পর্কেও অনুসন্ধান করা হয়েছে। সুলিখিত ভূমিকায় পপুলার ফিকশন এবং সমসাময়িক বঙ্গসংস্কৃতির সম্পর্কটিও নতুন চোখে দেখা হয়েছে। |
পুরীর কথা |
|
পুরীর কথা, গুরুদাস সরকার, সম্পা: প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত সৌম্যেন পাল। চর্চাপদ, ৬৫০.০০ |
পুরীর বৃত্তান্ত ছড়িয়ে আছে শত শত বই-পুথিতে। গুরুদাস সরকারের মন্দিরের কথা-র (১৯২১) স্থান সে সবের প্রথম সারিতেই। উনিশ শতক থেকে শুরু করে যে সব অপেশাদার বাঙালি প্রত্নবিদ প্রত্যক্ষ বিবরণ-সংগ্রহ ও যুক্তিসিদ্ধ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভারতীয় প্রত্নচর্চাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, গুরুদাস সরকার (১৮৮৬-১৯৬৮) তাঁদের অন্যতম। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা সহ মূল মন্দিরের কথা বইয়ে ছিল তিনটি ভাগ: পুরী, ভুবনেশ্বর ও কোনারক। এ বার আলাদা ভাবে ‘পুরীর কথা’-র সটীক সংস্করণ প্রকাশিত হল। দুই সম্পাদক প্রচুর প্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়েছেন। মূল বইয়ের পুরনো-নতুন টীকা ছাড়াও আছে বিভিন্ন ইংরেজি ও বাংলা বই থেকে দীর্ঘ সংযোজন। পুরনো সব ছবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন রঙিন ছবিও। |
অভিনব অভিধান |
|
বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধান ১, সম্পা: গোলাম মুরশিদ। বাংলা একাডেমি (ঢাকা), ১০০০.০০ |
‘উপকণ্ঠ’ শব্দের অর্থ কী? আপাতত চালু অর্থ, নগরীর কাছে। কিন্তু ‘উপকণ্ঠ’ মানে একদা আকণ্ঠও বোঝাত। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘মুহূর্তে করিব পান মৃত্যুর ফেনিল উন্মত্ততা/উপকণ্ঠ ভরি।’ তার পরে জীবনানন্দের কবিতায় শব্দটির অর্থ বিস্তার পেল, ‘বিকেলের উপকণ্ঠে সাগরের চিল’। শব্দের প্রথম ব্যবহার এবং পরবর্তী পরিবর্তিত অর্থের সময়-সহ দৃষ্টান্ত দিয়ে তৈরি হয়েছে এই অভিধান। পূর্বপ্রকাশিত অভিধান থেকে কাট অ্যান্ড পেস্ট এবং কিছু নতুন সংযোজন নয়, পত্রপত্রিকা, বইপত্র, এমনকী কলকাতার মেয়র্স কোর্টের কাগজপত্র, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত তাঁতিদের চিঠিপত্রের মতো সম্পূর্ণ নতুন উপাদানও ব্যবহার করা হয়েছে এই অভিধানে। কলকাতা বইমেলায় এসেছে প্রথম খণ্ডটি। তিন খণ্ডে সম্পূর্ণ হবে এই অভিনব অভিধান। |
রবীন্দ্র চর্চার আকর |
|
রবীন্দ্রনাথ-সম্পাদিত তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা সংগ্রহ ১-৪। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, ২০০০.০০ |
তত্ত্ববোধিনী সভার মুখপত্র ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’-র সূচনা ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে। ধর্ম চর্চার বাইরে বিবিধ বিষয়ে বিশ্লেষণী প্রবন্ধনিবন্ধ প্রকাশ করে পত্রিকাকে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন প্রথম সম্পাদক অক্ষয়কুমার দত্ত। অক্ষয়কুমার ১৮৪৩-’৫৫ সম্পাদক ছিলেন এই পত্রিকার, সে সময় শিবনাথ শাস্ত্রীর কথায় ‘তত্ত্ববোধিনী বঙ্গদেশের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ পত্রিকা হইয়া দাঁড়াইল।’ পত্রিকাটি টিকে ছিল ৯০ বছর। তবে অক্ষয়কুমারের পর পত্রিকার কদর ও প্রচার দুইই কমতে থাকে। রবীন্দ্রনাথ চার বছর এই পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তিনি তাকে সংকীর্ণ গণ্ডি থেকে মুক্ত করে আবার বৃহত্তরে পরিসরে স্থাপন করেন। সেই চার বছরের সব ক’টি সংখ্যা অপরিবর্তিত আকারে চার খণ্ডে প্রতিলিপি-সংস্করণে প্রকাশ করল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ। রবীন্দ্র চর্চার অন্যতম এই আকরগ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন পরিষৎ-সভাপতি বারিদবরণ ঘোষ। |
তরুবিলাসী |
|
তেজেশচন্দ্র সেনের বিজ্ঞান রচনা সংগ্রহ, সম্পা: সুবিমল মিশ্র। পরি: দে’জ, ৪০০.০০ |
এন্ট্রান্স না দিয়েই ঢাকা থেকে শান্তিনিকেতন ব্রহ্মচর্যাশ্রমে এসে যোগ দিয়েছিল এক বালক। পরের অর্ধশতাব্দী শান্তিনিকেতনকেই আপন নীড় করে নিয়েছিলেন তেজেশচন্দ্র সেন। তাঁর ‘তালধ্বজ’ গৃহ আজও সেখানে অন্যতম দিকচিহ্ন। প্রকৃতিপ্রাণ তেজেশচন্দ্রকে ‘তরুবিলাসী’ আখ্যা দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ, শান্তিনিকেতনের গাছপালা নিয়ে তাঁর এক চিঠির উত্তরে লিখেছিলেন, ‘তোমার গাছপালার প্রতি ভালোবাসা আমার মনের সুরের সঙ্গে ভারি মেলে...’। ১৩১৭ বঙ্গাব্দ থেকেই তাঁর বিজ্ঞানরচনার সূত্রপাত। মাঝে কিছুটা ছেদ, আবার ১৯৪৬-১৯৬০ পর্যন্ত সর্বজনবোধ্য বহু বিজ্ঞান রচনা লিখেছেন। অথচ অপর এক আশ্রমিক জগদানন্দ রায়ের বিজ্ঞানরচনা যতটা সুপরিচিত, তেজেশচন্দ্র ততটাই বিস্মৃত। আন্তরিক শ্রমে তাঁর শতাধিক বিজ্ঞানরচনা একত্র করে এই পথিকৃৎকে ফিরিয়ে আনলেন সুবিমল মিশ্র, চেষ্টা করেছেন তাঁর জীবনীর একটি রূপরেখা তৈরিরও। |
|
|
|
|
|