ফের চুরি হয়ে গেল নবদ্বীপের শহরের একটি নামী মঠ রাধারমণ বাগ সমাজবাড়িতে। বৃহস্পতিবার রাতে নবদ্বীপের ওই মন্দির থেকে খোয়া গিয়েছে অলঙ্কার, বাসন-সহ প্রায় ৬০টি মূল্যবান সামগ্রী। বিগ্রহের রুপোর সিংহাসনটি প্রথমে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে ভাঙাচোরা অবস্থায় পরে তা মন্দিরের পাশের গলি থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। দুষ্কৃতীদের দলে মহিলারাও ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য দিনের মতোই রাত বারোটা নাগাদ নিত্য পূজা শেষ হওয়ার পর মন্দিরের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার ভোর চারটে নাগাদ পূজার জন্য যখন আশ্রমিকরা বাইরে বেরোতে যান, তখন দেখা যায় বাইরে থেকে সব দরজা কেউ বন্ধ করে দিয়েছে। এরপরই আশ্রমিকরা পাশের মঠের সন্ন্যাসী ও থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে হাজির হন নবদ্বীপ থানার আইসি-সহ অন্য পুলিশকর্মীরা। |
গয়না চুরির পরে। —নিজস্ব চিত্র। |
বাইরে থেকে আশ্রমিকদের দরজা খুলে বের করার পর মূল মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, মোট সাতটি তালা ভেঙে চুরি হয়ে গিয়েছে রাধা-কৃষ্ণ ও গৌর-নিতাইয়ের অলঙ্কার-সহ বহু প্রাচীন একটি রুপোর সিংহাসন। মন্দিরের সেবাইত জনক দাস বলেন, “শতাব্দী প্রাচীন রুপোর ওই সিংহাসনটি ললিতাসখীর আমলের। ওই সিংহাসনে চতুর্ভুজ নারায়ণ থাকতেন। তবে রাতে সিংহাসন ফাঁকা থাকত।” গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের সভাপতি অদ্বৈত দাস বলেন, “মন্দির থেকে চুরি গিয়েছে প্রায় ৬০ রকমের জিনিসপত্র। এর মধ্যে রয়েছে, ছোট-বড় মিলিয়ে দশটি মুকুট। তা ছাড়া হার, নথ, টায়রা, দুল সহ নানা অলঙ্কার। তবে আমাদের কাছে সবথেকে মূল্যবান একটি রুপোর ঘট, যেটি রাধারমণ দাস স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে বর্ধমানের সাতগাছিয়ার জমিদার বাড়ির মাটির তলা থেকে পেয়েছিলেন। খোয়া গিয়েছে শালগ্রাম শিলাও।”
পুলিশ তদন্তে নেমে সকাল বেলায় মন্দিরের পিছন দিকের বউবাজার রোড থেকে ভাঙাচোরা অবস্থায় সিংহাসনটি উদ্ধার করে। বউবাজারের বাসিন্দা কুনাল চক্রবর্তী বলেন, “রাত তিনটে নাগাদ বাইরের শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখি রাস্তার ধারে কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা জটলা করছে। কি করছে প্রশ্ন করতেই মহিলা উত্তর দেন, “বিছানা পাতছি।” আওয়াজ পেয়ে আমি প্রশ্ন করতেই ওরা মুখে একরকম শব্দ করেন। আমি চিৎকার করতেই ওরা রাস্তার আলো নিভিয়ে পালায়। তবে সিংহাসন ওরা নিয়ে যেতে পারেনি। সকালে বিষয়টি বুঝতে পারি।” |