বিদেশে লজ্জার শরশয্যা
ওপেনিংয়ে পূজারা ছাড়া গতি নেই ধোনির
ভারতের ম্যাচ রিপোর্ট নিয়ে নতুন কী লিখব, ভেবে পাচ্ছি না। প্রত্যেকটা ম্যাচ একই ভাবে, একই সমস্যার কারণে হেরে চলেছে ধোনিরা। যার সমাধান আছে, কিন্তু তার জন্য তো চেষ্টাটাও করতে হবে। সেটা এখনও হচ্ছে না। তাই ভারতের ম্যাচ মানে পুরো ব্যাপারটাই চর্বিতচর্বণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তবু বলব যে, এর পরেও যদি চেতেশ্বর পূজারাকে না ভাবে ধোনিরা, তা হলে আর কিছু বলার নেই। পাঁচটা ওয়ান ডে দেখার পর এটা আশা করি টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে পরিষ্কার যে, বিদেশে রোহিত শর্মা-শিখর ধবন ওপেনিং জুটি দিয়ে হবে না। সোজাসুজি বলছি, ওয়ান ডে-তে বিদেশে ওপেনিংয়ে চেতেশ্বর পূজারাকে দরকার। নিউজ্যিলান্ডের কাছে ০-৪ হারার পর তো আরও দরকার। পূজারার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হোক অজিঙ্ক রাহানেকে। আর শিখর ধবনকে ‘স্ট্যান্ড বাই’ ওপেনার হিসেবে রাখা হোক। তাড়াহুড়ো করে শট খেলতে গিয়ে আউট হওয়ার অভ্যেসটা শিখরকে পাল্টাতে হবে। একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন কি না জানি না। যখন ও রানের মধ্যে ছিল, তখনও কিন্তু ওর বেশির ভাগ ইনিংস নিখুঁত ছিল না। বহু বার ভাগ্যের জোরে, বা বিপক্ষ ফিল্ডারদের ‘দয়ায়’ বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু এখন আর সেটা হচ্ছে না। এখন বিপক্ষ বোলাররা জেনে গিয়েছে, তিনটে বল ধরে খেললে চার নম্বরটায় ধবন স্টেপ আউট করবেই। এটা ঠিক করতে হবে। নইলে এখনকার মতো বোলারদের কাছে ‘প্রেডিক্টেবেল’ থেকে যাবে।

ওয়ান ডে সিরিজ শেষের অনুষ্ঠানে টিম ধোনির বিষণ্ণতা।
আসলে ওপেনাররা ব্যর্থ হলে পুরো চাপটা এসে পড়ে মিডল অর্ডারের উপর। নিউজিল্যান্ডে প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই দেখা গেল, শেষ ২০-২৫ ওভারে ভারতের মিডল অর্ডারের সামনে আট-ন’য়ের আস্কিং রেট। হাতে চার-পাঁচটা উইকেট। এই অবস্থায় বড় রান তাড়া করে জেতা প্রায় অসম্ভব। ওপেনাররা যদি একটু উইকেটে টিকে থেকে নিয়মিত গতিতে রান তুলতে পারত, তা হলে এই চাপটা আসত না। সে জন্যই ওপেনিং জুটি বদলানোর এই ভাবনাটা আসছে।
রাহানের মতো ব্যাটসম্যানকে চার-পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ওকে যেমন সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না, তেমনই রোহিত শর্মাকেও ওপেন করিয়ে ওর কাছ থেকে যা পাওয়ার, তা পাওয়া যাচ্ছে না। আমার পছন্দের ব্যাটিং অর্ডারটা এ রকম পূজারা, রাহানে, শিখরের মধ্যে যে কোনও দু’জন ওপেনার। তিনে বিরাট কোহলি। চার থেকে সাতে রোহিত, রায়ডু, ধোনি ও জাডেজা। তার পর অশ্বিন ও তিন পেসার। এই ব্যাটিং অর্ডারটা ক্লিক না করলে অবাকই হব। পাঁচ নম্বর জায়গাটায় আগামী এক বছরের মধ্যে মনোজ তিওয়ারিকে দেখতে পেলে ভাল লাগবে। সে জন্য ওকে অবশ্য ঘরোয়া ওয়ান ডে-তে ভাল কিছু করে দেখাতে হবে। মনোজকে মনে রাখতে হবে, বাবা অপরাজিতের মতো ব্যাটসম্যান ওর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে।
ভারতের মিডল অর্ডার নিয়ে যাঁরা ‘গেল গেল’ আওয়াজ তুলছেন, বা ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা শর্ট বল খেলতে পারে না বলে যাঁরা হা-হুতাশ করছেন, তাঁদের বলি ওপেনিংয়ে ধারাবাহিকতা ফিরে এলে এগুলো তখন আর বড় সমস্যা হয়ে থাকবে না। আমাদের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ঠিক খেলাই খেলছে। সবচেয়ে বড় কথা জাডেজা, অশ্বিন পর্যন্ত রান পাচ্ছে। এই ওয়ান ডে সিরিজে এই একটাই যা পজিটিভ ব্যাপার।

বিরাট কোহলির ফেরার।
ম্যাচ ফিনিশ করার লোক আমাদের আছে। কিন্তু শুরুটা ঠিক না হলেই তো মুশকিল। বিদেশের পরিবেশের সঙ্গে ভারতীয়দের মানিয়ে নিতে না পারার ধারণাটাও আমি সমর্থন করতে পারছি না। এই সময়ের ক্রিকেটে এই কনসেপ্টটাই অচল। সমস্যাটা আসলে টেকনিকের, যা যে কোনও দেশেই হতে পারে, এমনকী, নিজেদের দেশেও। সহবাগ, গম্ভীর, যুবরাজদের মতো সিনিয়রদের জন্য দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে? নাকি আইপিএলে ভাল খেলতে পারলে ওরাও দলে ফিরে আসতে পারে, এই প্রশ্নটাও থেকে যাচ্ছে।
যা দেখছি, দক্ষিণ আফ্রিকায় যেমন হয়েছিল, নিউজিল্যান্ডেও তেমনই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। টেস্ট সিরিজে ভারত এর চেয়ে ভাল খেলবে। কারণ, ওটা পুরো অন্য খেলা। টেস্টে ব্যাট করবে পূজারা। সে দিক থেকে দুশ্চিন্তা কম। লাল বলে বোলিংও ভাল করবে ভারতীয়রা। জাহির খান চলে আসছে এই দলে। কিন্তু বিশ্বকাপটা আর বেশি দেরি নেই, এটাই যা চিন্তার। সেটা তো টেস্ট নয়, ওয়ান ডে।
কিউয়ি কোপে ০-৪
• প্রথম ওয়ান ডে
হার ২৪ রানে
• দ্বিতীয় ওয়ান ডে
হার ১৫ রানে
• তৃতীয় ওয়ান ডে
টাই
• চতুর্থ ওয়ান ডে
হার ৭ উইকেটে
• পঞ্চম ওয়ান ডে
হার ৮৭ রানে

ছবি এএফপি-র।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.