শিল্প করুন, বাংলা গড়ুন। এই স্লোগান কার্যকর করতে এ বার জেলা স্তরে শিল্পোদ্যোগী তৈরির জন্য কর্পোরেট জগতের হাত ধরছে রাজ্য। শিল্পোদ্যোগীদের আন্তর্জাতিক সংগঠন টাই-এর সঙ্গে জোট বেঁধে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট রূপরেখা (রোডম্যাপ) তৈরি করছে তারা। লক্ষ্য, জেলায় জেলায় ‘ইনকিউবেশন সেন্টার’ গড়ে তোলা। যেখানে শিল্পোদ্যোগীরা তাঁদের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, পুঁজির সন্ধান ও প্রাথমিক সহায়তা পাবেন। ওই সেন্টার তৈরির জন্য ডিস্ট্রিক্ট ইনডাস্ট্রিয়াল সেন্টারের পরিকাঠামো ব্যবহার করবে রাজ্য।
শুক্রবার শহরে আন্তর্জাতিক স্তরের সম্মেলন ‘টাইকন-২০১৪’ উদ্বোধন করেন শিল্প তথা অর্থ মন্ত্রী অমিত মিত্র। ওই মঞ্চ থেকেই বিনিয়োগ টানার পাশাপাশি রাজ্য জুড়ে শিল্পোদ্যোগী তুলে আনতে শিল্পমহলকে আহ্বান জানান তিনি। সওয়াল করেন, শুধু ছকে বাঁধা চাকরির স্বপ্ন দেখার পরিবর্তে বরং নিজে ব্যবসা করে আরও দশ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার। ভবিষ্যৎ শিল্পোদ্যোগীদের জন্য তাঁর বার্তা, “স্বপ্ন দেখুন।” |
অমিতবাবুর দাবি, ওই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে রাজ্য নিজেদের দিক থেকেও নতুন করে ভাবনাচিন্তা করছে। তিনি বলেন, “মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প দফতর ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। ওই দফতরের ৬০০ আধিকারিক ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম)-কলকাতায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। যা কাজে লাগিয়ে জেলায়-জেলায় শিল্পোদ্যোগীদের সাহায্য করবেন তাঁরা।”
লগ্নি টানার পাশাপাশি সারা রাজ্য থেকে শিল্পোদ্যোগী তুলে আনার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্প। টাই-এর কলকাতা শাখার প্রেসিডেন্ট বিক্রম দাশগুপ্ত বলেন, “ইনকিউবেশন সেন্টার গড়তে ইতিমধ্যেই সরকারের সঙ্গে কথা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিক্ট ইনডাস্ট্রিয়াল সেন্টারের পরিকাঠামো ব্যবহৃত হবে। প্রথম দফার কাজ শুরু হবে ৫ জেলা নিয়ে।” তিনি জানান, ব্যবসা শুরু করতে শুধু বাজারের হালহদিস নয়, প্রয়োজন পুঁজিও। সেই পুঁজির সন্ধান দিতেও সাহায্য করবে ওই কেন্দ্রগুলি।
এ দিন শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে হাজির ছিলেন মাইক্রোসফট ভেঞ্চার্স-এর মতো উদ্যোগ পুঁজি সংস্থার প্রতিনিধি। কলকাতা, দুর্গাপুর, শিলিগুড়ি -সহ নানা জেলা শহরের শিল্পোদ্যোগী ছাড়াও ছিলেন ভিন্ রাজ্যের প্রতিনিধিরা। যাঁরা সদ্য ব্যবসায় এসেছেন বা আসতে চলেছেন, তাঁদের কাছে ওই সব ব্যবসার পরিকল্পনা শুনেছেন অভিজ্ঞ প্রতিনিধিরা। সেগুলি মাপার চেষ্টা করেছেন বাণিজ্যিক সাফল্যের মাপকাঠিতে। তেমন সম্ভাবনা থাকলে পুঁজির আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। বিক্রমবাবুর দাবি, রাজ্যের নতুন প্রজন্মকে এ ধরনের সুযোগ দিতেই টাইকনের মঞ্চকে কলকাতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত। ১১ হাজার সদস্যের সংগঠন টাই-এর দাবি, নতুন প্রজন্মের শিল্পোদ্যোগী তৈরি করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। আর তা মাথায় রেখেই এ দিন টাইকনের মঞ্চ থেকে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন অ্যাক্টিওজেনের সিইও চন্দা জাভেরি ও মেক মাই ট্রিপ-এর দীপ কালরার মতো টাই সদস্যরা। |