এক শিক্ষিকাকে অটোতে তুলে মারধর, তার পরে স্প্রে করে অজ্ঞান করার পরে তাঁর গয়না ও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক অটোচালক-সহ তিন যুবকের বিরুদ্ধে।
বুধবার বিকেলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানা এলাকার সপ্তগ্রাম মোড় থেকে ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া মোড়ের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ওই শিক্ষিকার পরিবারের লোকজন। উস্তিরই প্রাণবল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর সাতাশের ওই তরুণী বর্তমানে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে কিছুটা ধন্দে পড়েছে পুলিশ। তরুণীর বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলে পুলিশের দাবি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানিয়েছেন, ওই শিক্ষিকাকে মারধর এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাঁকে অন্য কোনও ভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে কি না, তা জানার জন্য ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করানো হয়েছিল। মহিলা তাতে রাজি হননি। গোটা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই তরুণী সপ্তগ্রামে একটি কোচিং সেন্টারে পড়ান। সেখান থেকে তাঁর বাড়ি কয়েক কিলোমিটার দূরে। মোটরভ্যান বা ছোট যাত্রীবাহী গাড়িতে তিনি যাতায়াত করেন। ওই রুটে নিয়মিত অটো চলে না। পুলিশকে তরুণী জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ তিনি কোচিং থেকে বেরিয়ে অটোটি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে উঠে পড়েন। অটোতে চালক ছাড়াও আরও দুই যুবক ছিল। তিনি উঠতেই অটোটি ছাড়ে। কিছুটা এগোতেই দুই যুবক তাঁর মুখে মাটি ঢুকিয়ে দেয়। মারধর করে। তার পরে স্প্রে করায় তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। বিকেল পাঁচটা নাগাদ জ্ঞান ফিরতে তিনি দেখেন, পারুলিয়া মোড়ে পড়ে রয়েছেন। তাঁর সোনার হার, দুল বা বালা নেই। সঙ্গের টাকার ব্যাগটিও উধাও। তিনি হেঁটে কিছুটা দূরের কপাটহাট মোড়ে পৌঁছে এক দোকানদারের সাহায্য নিয়ে বাড়িতে ঘটনার কথা জানান।
পারুলিয়া মোড় সপ্তগ্রাম থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার। এলাকাটি জনবহুল। বুধবার বিকেল পাঁচটার সময়ে এক তরুণীকে অটো থেকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে দেওয়া হল, অথচ ওই এলাকার কেউ দেখতে পেল না কেন, এ নিয়ে ধন্দে রয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা পারুলিয়ায় কোনও প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ পাননি। তা ছাড়া, পারুলিয়াই মোড়েই ওই মহিলা কেন কারও সাহায্য নিলেন না এ প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। ওই শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার বলেন, “অটো-চালক বা আরও দুই যুবকের কাউকেই চিনতাম না। অটোটি সপ্তগ্রাম যাবে বলাতেই উঠে বসি। তার পরে ওই কাণ্ড। কপাটহাট মোড় থেকে বাড়িতে ফোন করি। বাড়ির লোকজন এসে আমাকে নিয়ে যান।” |