|
|
|
|
পুরসভায় স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন, নেই বামেদের কেউ
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
নতুন পুরবোর্ডের প্রথম বৈঠকে ৬টি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হল। সঙ্গে অ্যাকাউন্টস্ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির কনভেনর হয়েছেন কংগ্রেসের শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়।
বুধবার বিকেলে পুরসভার সভাকক্ষে নতুন পুরবোর্ডের প্রথম বৈঠক হয়। ছিলেন পুরপ্রধান প্রণব বসু, উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস। ২৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২৩ জন উপস্থিত ছিলেন। আসেননি তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর শ্যামল ভকত এবং লিপিকা পাণ্ডব। তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের প্রথম বৈঠকে কেন দলেরই দুই কাউন্সিলর অনুপস্থিত, তা নিয়ে জল্পনাও শুরু হয়েছে। যদিও তৃণমূল সূত্রের দাবি, গরহাজিরার অন্য কোনও কারণ নেই। শ্যামলবাবু ওই দিন শহরে ছিলেন না। আর লিপিকাদেবী পারিবারিক অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন। ওই দু’জন বৈঠকে থাকতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়েছিলেন।
বুধবার যে ৭টি কমিটি গঠিত হয়েছে, তার একটিতেও বামজোটের প্রতিনিধি নেই। পুরসভা সূত্রে খবর, বামজোটের কাউন্সিলরদের কমিটির সদস্য হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, তাঁরা রাজি হননি। শহরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা বামজোটের সহযোগী মেদিনীপুর বিকাশ পরিষদের আহ্বায়ক নাজিম আহমেদ বলেন, “এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। শহরবাসী আমাদের বিরোধী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। আমরা সেই ভূমিকা পালন করতে চাই।” স্ট্যান্ডিং কমিটিতে কংগ্রেস কাউন্সিলররা অবশ্য রয়েছেন।
গত ২২ নভেম্বর মেদিনীপুরে পুরভোট হয়। ২৫ নভেম্বর ফল বেরোয়। ১৬ ডিসেম্বর পুরবোর্ড গঠন হয়। দ্বিতীয়বারের জন্য পুরপ্রধান নির্বাচিত হন প্রণব বসু। এরপর পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন নিয়ে গড়িমসি চলে। পুরপ্রধান নির্বাচনের এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ পুরবোর্ড গঠন করতে হয়। সেই হিসেবে ১৫ জানুয়ারি এক মাসের মেয়াদ ফুরোচ্ছিল। শেষ দিনেই পূর্ণাঙ্গ পুরবোর্ড গঠিত হয়। উপপুরপ্রধান হিসেবে শপথ নেন জিতেন্দ্রনাথ দাস। পুর-পারিষদ হন অনিলচন্দ্র দলবেরা, শিপ্রা মণ্ডল এবং মৌ রায়। সদর শহরে পুর-পারিষদের তিনটি দফতর রয়েছে। পূর্ত, জল এবং জঞ্জাল। এরমধ্যে পূর্ত দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন অনিলচন্দ্রবাবু। জল দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন মৌদেবী। জঞ্জাল দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন শিপ্রাদেবী।
আগের বার পুরসভা ছিল কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের দখলে। এ বার একক ভাবে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। শহরবাসীর আশা, নতুন পুরবোর্ড আরও গতিশীল হবে। শহরকে আধুনিক চেহারা দেবে। নতুন পুরবোর্ডের আমলে ইতিমধ্যে কিছু কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠনের পরেও কেন পুরবোর্ডের বৈঠক ডাকা হচ্ছে না, সম্প্রতি এই প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, ২৯ জানুয়ারি পুরবোর্ডের বৈঠক হবে।
সেই মতো বুধবার বিকেলে পুরসভার সভাকক্ষে নতুন পুরবোর্ডের প্রথম বৈঠক হয়। পুরসভার ৬টি স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে। এগুলি হল জল, জনস্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা, পূর্ত, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এবং ফিনান্স অ্যান্ড রিসোর্স মোবিলাইজেশন। প্রতিটি কমিটির সদস্য সংখ্যা ৭। এর মধ্যে ৫ জন কাউন্সিলর। তাঁরা সরাসরি সদস্য হিসেবে রয়েছেন। বাকি ২ জন পুর- আধিকারিক। তাঁরা সহযোগী সদস্য। ফিনান্স স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হয়েছেন নির্মাল্য চক্রবর্তী, সহ-সভাপতি অনিমা সাহা। এ ছাড়া রয়েছেন অনিলচন্দ্র দলবেরা, শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়, সৌমেন খান। সলিড ওয়েস্টের সভাপতি হয়েছেন শ্যামল ভকত, সহ-সভাপতি টোটন সাসপিল্লী। এ ছাড়া রয়েছেন পূর্ণিমা পড়্যা, সৌমেন খান, বিশ্বেশ্বর নায়েক। পূর্ত কমিটির সভাপতি হয়েছেন অনিলচন্দ্র দলবেরা, সহ- সভাপতি নির্মাল্য চক্রবতী। এ ছাড়া রয়েছেন লিপিকা পাণ্ডব, হিমাংশু মাইতি, মণিলাল দাস। স্বাস্থ্য-শিক্ষার সভাপতি হয়েছেন শিপ্রা মণ্ডল, সহ-সভাপতি কল্পনা মুখোপাধ্যায়। এ ছাড়া রয়েছেন রাধারানি বেরা, কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায়, রোকাইয়া খাতুন। জনস্বাস্থ্যের সভাপতি হয়েছেন পূর্ণিমা পড়্যা, সহ-সভাপতি লিপিকা পাণ্ডব। এ ছাড়া রয়েছেন শিপ্রা মণ্ডল, কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায়, রোকাইয়া খাতুন। এবং জল স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হয়েছেন মৌ রায়, সহ-সভাপতি শ্যামল ভকত। এ ছাড়া রয়েছেন কল্পনা মুখোপাধ্যায়, হিমাংশু মাইতি, মণিলাল দাস।
অ্যাকাউন্টস্ কমিটির কনভেনর হয়েছেন শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়। অন্য কাউন্সিলরদের মধ্যে এই কমিটিতে রয়েছেন শ্যামল ভকত, অনিমা সাহা, বিশ্বেশ্বর নায়েক এবং পূর্ণিমা পড়্যা। সাধারণত, মাসে একটি করে পুরবোর্ডের বৈঠক হওয়ার কথা। নতুন পুরবোর্ডের আমলে তা হয় কি না, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|