|
|
|
|
ধানখেতে বালিকার দেহ, ধর্ষণ-খুনের নালিশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
ধানখেত থেকে উদ্ধার হল ৮ বছরের বালিকার দেহ। অভিযোগ, ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে তাকে। বৃহস্পতিবার সকালে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার পলশা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধাবল্লভচকে ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধারের পরে যথাযথ তদন্ত ও উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে সরব হন গ্রামবাসীরা। দীর্ঘক্ষণ দেহ ঘিরে রাখেন কয়েক হাজার গ্রামবাসী। পরে ঘটনাস্থলে যান পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। তদন্তে আসেন সিআইডি-র আধিকারিকেরা। পুলিশ কুকুরও আনা হয়। টানা ৯ ঘণ্টা দেহ ঘিরে জমায়েতের পরে পুলিশ নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই নাবালিকার বাড়ি পলশা পঞ্চায়েতেরই বনমালিচক গ্রামে। বুধবার সন্ধ্যায় এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিল সে। তারপর আর ফেরেনি। রাতেই এলাকায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। ভোরে গ্রাম থেকে ৫০০ মিটার দূরে রাধাবল্লভচকে একটি ধানখেতের মধ্যে ওই নাবালিকার দেহ পাওয়া যায়। তৃণমূলের অঞ্চল সম্পাদক দীপাংশু পড়িয়া বলেন, “রাতেই খবর আসে মেয়েটিকে পাওয়া যাচ্ছে না। সকলে মিলে সারারাত খুঁজেও হদিস পাইনি। তখনই সন্দেহ হয়েছিল কিছু একটা হয়েছে।” এ দিন সকাল হতেই জানা যায় ওই নাবালিকার দেহ পাওয়া গিয়েছে। স্থানীয় তেলিচক মহমায়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। |
পলশা গ্রামে পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
দেহ উদ্ধারের পরে সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে ভিড় জমতে শুরু করে। দেহ ঘিরে জমায়েত করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, ঘটনার যথাযথ তদন্ত করতে হবে। দোষীকে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। গ্রামবাসী সুকুমার দোলুই, মুনমুন দুয়ারি, পিঙ্কি মুদলি বলেন, “এত দিন আমরা এই ধরনের ঘটনার কথা টিভিতে দেখতাম, খবরের কাগজে পড়তাম। আমাদেরই গ্রামের একটি মেয়ের এমন পরিণতি হতে পারে, কখনও ভাবিনি। যে বা যারা নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও খুন করল তাদের কঠোর শাস্তি চাই।” গ্রামবাসীদের এই দাবির পরেই আনা হয় পুলিশ কুকুর। পৌঁছন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ, এসডিপিও সন্তোষকুমার বর্মন-সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাস্থলে আসে ডিএসপি পূর্ণশিব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিআইডি-র একটি দল। বিকেল তিনটে নাগাদ দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই নাবালিকার বাবা। তবে নির্দিষ্ট কারও নামে তিনি অভিযোগ করেননি। ওই নাবালিকার বাবা চাষের কাজ করেন। অভাবের সংসারে স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে দুই মেয়ে আর এক ছেলে। যে নাবালিকা মারা গিয়েছে, সে ছিল মেজ মেয়ে। এ দিন মেয়ের মৃতদেহ দেখে সংজ্ঞা হারান মা। আর এক কোণে গাছের নীচে বসে ছিলেন বিহ্বল বাবা। তিনি বলেন, “রাতে মুড়ি খাব বলে ঠিক করেছিলাম। তাই মুড়ি ভাজা হচ্ছিল। সন্ধেয় মেয়েকে বলি পড়শি পরেশ দুয়ারির বাড়িতে কুঁচিটা ফেরত দিয়ে আসতে। সেই যে গেল, আর ফিরল না।” প্রতিবেশী পরেশ দুয়ারি-সহ দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। |
|
|
|
|
|