কান্তকবি অর্থাৎ রজনীকান্ত সেনের জন্মের সার্ধশতবর্ষ আসন্ন। তাঁর জন্ম ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই (১২ শ্রাবণ ১২৭২ বঙ্গাব্দ) অখণ্ড বঙ্গের পাবনা জেলার অন্তর্গত সিরাজগঞ্জ মহকুমার ভাঙ্গাবাড়ি গ্রামে। পরে তিনি পেশাগত জীবনে রাজশাহিতে থিতু হন। পেশায় তিনি ছিলেন আইনজীবী। তবে রাজশাহিতে তিনি সাহিত্য ও সংগীত চর্চাতেই বেশি আত্মনিয়োগ করেন। ক্রমশ কবি ও গীতিকার রূপে তাঁর খ্যাতি হয়। কিন্তু ৪৪ বছর বয়সে তাঁর গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে। রোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় কৃত্রিম নলের সাহায্যে শ্বাসগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁকে এই অবস্থায় মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন কটেজ ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়। এখানে তিনি সপরিবার ১২ নং কটেজে ২৮ মাঘ ১৩১৬ থেকে ২৮ ভাদ্র ১৩১৭ অবস্থান করেন। বহু প্রখ্যাত ব্যক্তি এই সময় তাঁকে দেখতে আসেন। সেই তালিকায় আছেন: আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ, ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ, পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেশচন্দ্র সমাজপতি, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী প্রমুখ স্বনামধন্য ব্যক্তি। ১৩১৭ সনের ২৮ জ্যৈষ্ঠ এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এই কটেজে বসে বাকরুদ্ধ অবস্থায়ই বহু মর্মস্পর্শী গান রচনা করেন কান্তকবি। লেখেন হাসপাতালের ডায়েরি। এখানেই ১৩১৭ সনের ২৮ ভাদ্র তাঁর প্রয়াণ।
রজনীকান্ত সেনের আসন্ন সার্ধশতবর্ষের সূচনায় তাঁর অন্তিম আলয় এবং বহু সুধীজনের পদধূলিধন্য এই কটেজের নাম কান্তকবির নামে রাখা হোক এবং সম্ভব হলে এটিকে হেরিটেজ বিল্ডিং রূপে ঘোষণা করা হোক
সিদ্ধার্থ পাল। রাধানগর, ঘূর্ণী, নদিয়া |