টেট-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর বাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগ উঠল। বুধবার গভীর রাতে বিধায়কের বাড়ির দরজায় বোমা ছোড়া হয়। তাতে সদর দরজা ও গ্রিলের একাংশ ভেঙেছে বলেও বিধায়কের পরিবারের দাবি। বিশ্বজিৎবাবু অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। যদিও সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির দাবি অভিযোগ ভিত্তিহীন।
বৃহস্পতিবার সকালে কালনা থানায় লিখিত অভিযোগে বিশ্বজিৎবাবুর দাদা অভিজিৎ কুণ্ডু জানান, শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখি কয়েকজন পালাচ্ছে। আমাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তাঁর দাবি, প্রাণে মারার জন্যই সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই হামলা চালিয়েছে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই বহু তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ভিড় জমে যায় বাড়ির আশপাশে।
|
বিধায়কের অনুগামীদের দাবি, ব্রিগেড সমাবেশে যাতে বেশি লোক জমা না হতে পারে তাই পরিকল্পনা করেই সিপিএম এমনটা করিয়েছে। তবে সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বোমা, গুলির রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। ঘটনাটি তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। দায় এড়াতে আমাদের দিকে মিথ্যে আঙুল তোলা হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, রাজ্য জুড়েই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় তৃণমূল নানা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। স্বজনপোষণে নাম জড়িয়েছে কালনার বিধায়কেরও।
তবে বোমাবাজির আগে একটি লিফলেট বিলিকে কেন্দ্র করে শহরে উত্তেজনা ছড়ায়। হলুদ কাগজের ওই লিফলেটে লেখা ছিল, ‘আপনি কি আগামী প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় (২০১৪-র ৩০ মার্চ) উত্তীর্ণ হতে চান? তাহলে আজই বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর (বিধায়ক, কালনা) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’ লিফলেটের তলায় লেখা ছিল, ‘জনস্বার্থে প্রচারিত।’ বুধবার রাতেই বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তন্ময় ঘোষ কালনা থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, শহরের সিদ্ধেশ্বরী মোড়ে উজ্জ্বল হাওলাদার ও সুজয় মণ্ডল নামে দুই যুবক লিফলেট বিলি করার কাজ করছিল। তাদের বাধা দেওয়া হলে সোমনাথ পণ্ডিত ও সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। কালনায় সোমনাথবাবু বিধায়কের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবেই পরিচিত। |
বৃহস্পতিবার সোমনাথবাবু বলেন, “লিফলেট বিলির সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। মিথ্যে আমাদের নাম জড়ানো হয়েছে।” তবে বিধায়ক গোষ্ঠীর দাবি, শুধু লিফলেট নয়, বিধায়ককে হেয় করতে একই কথা লিখে শহরের নানা জায়গায় পোস্টারও সাঁটা হয়েছে। ফোনে যোগাযোগ করা হলে দু’টি বিষয় নিয়েই বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “ব্রিগেডে রয়েছি। দু’টি ঘটনার কথাই শুনেছি। কালনায় পৌঁছে ভাল করে খোঁজখবর নিই, তারপর কথা বলব।”
বুধবার রাতে বিধায়কের বাড়িতে বোমাবাজির খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কালনা থানার পুলিশ। তদন্তে নামেন কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার, সিআই রাকেশ মিশ্র প্রমুখ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বেশ কিছু বোমার সুতো উদ্ধার করে। মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, দু’টি ঘটনার জন্য পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। |