উপেক্ষিত পড়ে ঠাকুর পঞ্চাননের গ্রাম
ক সময় এলাকাটি ছিল জঙ্গলে ঘেরা। দিনের বেলাতেও বন্য জন্তুরা ঘুরে বেড়াত। জঙ্গলের সুড়িপথ ধরে পঞ্চানন বর্মা প্রতি দিন হেঁটে যেতেন দিলদরিয়া নদীতে। স্নান সেরে বাড়ি ফিরতেন। সেই দিলদরিয়া আর নদী নেই, এখন এক ছোট্ট ডোবায় পরিণত হয়েছে। আর পঞ্চানন বর্মার বাড়িও ভগ্নপ্রায়। কাঠের দরজা জানালাগুলির করুণ দশা। পঞ্চানন বর্মার জন্মভিটায় এখন তাঁর ভাইয়ের নাতি তিমির বর্মা, সমীর বর্মা, অরুণ বর্মারা থাকেন। ঠাকুর পঞ্চানন বর্মাকে ঘিরে নানা গল্প, স্মৃতি এখন বেঁচে রয়েছে কোচবিহারের মাথাভাঙার খলিসামারি গ্রামে।
বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভও রয়েছে প্রচুর। তাঁদের নালিশ, পঞ্চানন বর্মার স্মৃতিতে সেখানে একটি মিউজিয়ামের কাজ শুরু করা হলেও শেষ হয়নি। দিলদরিয়া নদী ঘিরে পার্ক তৈরি করার আশ্বাস নেতা ও মন্ত্রীরা একাধিক বার দিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তাঁরা জানান, বাম আমলে মিউজিয়াম তৈরি করার কাজ শুরু হয়। সীমান্ত পাঁচিল দিয়ে একটি বড় ভবন তৈরি করা হয়। কিন্তু ভবনের জানলা, দরজা সহ বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি। দুই বছর ধরে কোনও কাজ হচ্ছে না। মহকুমাশাসক শশীকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রকল্পের কাজ প্রক্রিয়ার মধ্যেই রয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ হবে আশা করছি।” প্রাক্তন এক পঞ্চায়েত সদস্য সিদ্দিক মিঁয়া এই প্রসঙ্গে বলেন, “রায় সাহেবকে নিয়ে দুটি প্রকল্পের একটি প্রায় শেষের পথে। অন্য কাজটির জন্য দ্রুত টাকা বরাদ্দ করা হবে বলে শুনেছি।” ১৮৬৬ -র ১৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন কোচবিহার রাজ্যের মাথাভাঙার খলিসামারিতে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার জন্ম হয়। তিনি রাজবংশীদের প্রথম এম এ, আইনের স্নাতক বলে জানা যায়। রাজবংশী জাতির জনক বলে অনেকে পঞ্চাননকে অভিহিত করেন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার পরেও কাজ না পেয়ে তিনি রাজ্য ছেড়ে রংপুরে চলে যান। অনেকের দাবি, মহারাজার সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় তাঁকে রাজ্য ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
পঞ্চানন বর্মার উত্তরপুরুষ তিমির বর্মা বলেন, “রায়সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার নানা কথা বাবা-ঠাকুর্দার কাছে শুনেছি। তাঁদের কাছেই শোনা এক দিন হাতিতে চড়ে রাজা লোকজন নিয়ে এই বাড়িতে হাজির হন। মহারাজা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রায় সাহেবকে রাজ্য ছাড়তে বলেন। তিনি প্রথমে নলগ্রাম ছিটমহলে আশ্রয় নেন। পরে রংপুরে চলে যান।” পঞ্চানন বর্মার আর এক আত্মীয় অরুণ বর্মা বলেন, “ওঁর নামে কোচবিহারে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু রায় সাহেবের গ্রামটি উপেক্ষিতই রয়ে গিয়েছে। আমরা চাই সরকার এই দিকে নজর দিক।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.