জঙ্গি লিঙ্কম্যান সন্দেহে গ্রেফতার ফুচকা-শঙ্কর
সারাদিনের কাজ একটি প্রতিবেশী দেশে গাড়ির স্ট্যান্ডে ফুচকা বিক্রি করা। রাত নামলেই সেই ফুচকাওয়ালা হয়ে উঠত কেএলও জঙ্গিদের ‘লিঙ্কম্যান’। জলপাইগুড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় কেএলও জঙ্গিদের নানা মদতের অভিযোগে ধৃত ফুচকা বিক্রেতা রামশঙ্কর বসাককে গ্রেফতারের পরে এমনই দাবি করছে পুলিশ।
আদতে জলপাইগুড়ির মান্তাদাড়ি এলাকার টাকিমারির বাসিন্দা হলেও প্রায় প্রায় দেড় দশক ধরে একটি প্রতিবেশী দেশে ব্যবসা করত বছর আঠাশের রামশঙ্কর। তবে তার শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এলাকায় সে ‘ফুচকা-শঙ্কর’ নামেই বেশি পরিচিত। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ দাবি, ধৃত কেএলও জঙ্গি ইকবাল সিদ্দিকি ও তরুণ থাপাকেও ওই প্রতিবেশী দেশে ভাড়ার ঘর ঠিক করে দিয়েছিল ওই ফুচকাওয়ালা। ওই দুজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ার পরে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে ফুচকা তৈরির সরঞ্জাম কেনাকাটার জন্য শিলিগুড়ি যাতায়াতের সময়েই কেএলও-র হুমকি ফোনে শঙ্কিতদের কাছ থেকে টাকা আদায়ও করত শঙ্কর। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে শঙ্করের কাছ থেকে কেএলও-র টাকা আদায় সংক্রান্ত নানা তথ্য মিলেছে। এমনকী, ধৃত ফুচকাওয়ালার মোবাইল ফোন
থেকেও জঙ্গি যোগসাজশের স্পষ্ট সূত্র মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। উত্তরবঙ্গের এক পুলিশ কর্তা জানান, ‘ফুচকা-শঙ্কর’কে জেরা করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ধৃত ওই ফুচকা বিক্রেতার অতীতের কাজকর্ম সম্পর্কেও মান্তাদাড়ি এলাকায় গিয়ে কিছু তথ্য মিলেছে। পৃথক রাজ্যের দাবিদার একটি সংগঠনের সঙ্গেও দীর্ঘদিন ধরে ওই ফুচকা বিক্রেতার যোগাযোগ রয়েছে বলে পুলিশের দাবি। সেই সুবাদেই কেএলও জঙ্গিরা ওই প্রতিবেশী দেশে আত্মগোপনের ডেরা তৈরি করতে ফুচকা বিক্রেতার দ্বারস্থ হয় বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। জলপাইগুড়িতে বিস্ফোরণের পরে রাজ্য সরকার ব্যাপক কড়াকড়ি শুরু করায় সেই প্রতিবেশী দেশেও ঘনঘন ডেরা বদলাতে শুরু করে জঙ্গিরা। কিন্তু, রামশঙ্কর অবশ্য পুরনো ভাড়া বাড়ি ছেড়ে নড়েনি। কারণ, উত্তরবঙ্গে কেএলও নিয়ে যে পুলিশ অফিসাররা তদন্ত করেন, তাঁদের কাছে এতদিন রামশঙ্করের নাম ছিল না।
তবে জলপাইগুড়ি বিস্ফোরণ মামলায় যুক্ত সন্দেহে ধৃত এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনের কল-রেকর্ডের সূত্রে পুলিশের কাছে রামশঙ্করের নাম পৌঁছয়। তখনই পুলিশ নজরদারি আরও বাড়িয়ে দেয়। যেহেতু ওই প্রতিবেশী দেশে রোজই শিলিগুড়ির একাধিক ফেরিওয়ালা যাতায়াত করে থাকেন, সেই সুবাদে ‘ফুচকা-শঙ্কর’-এর গতিবিধি সম্পর্কে সন্দেহজনক কিছু তথ্য পুলিশ পায়। ‘ফুচকা-শঙ্কর’ ১২ বছর বয়সে বাড়ি থেকে নেপালে কাজের খোঁজে চলে যায়। সেখানে ফুচকার কারবারে নেমে পড়ে। ১৬ বছর ধরে এলাকায় ফুচকা বিক্রি করছে বলে এলাকায় নানা মহলে পরিচিত হয়ে ওঠে সে। পুলিশ সূত্রের খবর, স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের অফিসাররা প্রথম পর্যায়ে ‘ফুচকা-শঙ্কর’কে জেরা করে তেমন কোনও তথ্য পাননি। কিন্তু, যে বাড়িতে ওই ফুচকা বিক্রেতা ভাড়া থাকতেন, সেখানে গিয়ে পুলিশ কেএলও জঙ্গিদের দু’জন ভাড়া ছিলেন বলে স্পষ্ট প্রমাণ পায়। ইতিমধ্যে মোবাইলের সূত্রে পুলিশ নিশ্চিত হয়, শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় কেএলও-র হয়ে টাকা তোলার কাজ করেছে ‘ফুচকা-শঙ্কর’। এর পরেই তাকে গ্রেফতারের ছক কষে পুলিশ।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.