তিনিই নেতা, যিনি ময়দানে সামনে এগিয়ে লড়াই করেন। তাকেই নেতৃত্বের আদর্শ বলে উল্লেখ করে গিয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দ। নিজের জীবনে সেই আদর্শে বিশ্বাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বুধবার বেলুড় মঠে স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে তাদের মধ্যেও ওই চেতনাই জাগিয়ে তুলতে চাইলেন তিনি। |
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী আত্মস্থানন্দকে মমতার প্রণাম। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক। |
মাত্র ৩৯ বছরের জীববনকালে স্বামী বিবেকানন্দ যা বলে গিয়েছেন, তা পড়ুয়া এবং যুব সম্প্রদায়ের কাছে আদর্শ হওয়া উচিত বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বামী বিবেকানন্দের লেখা ‘কল টু দ্য নেশান’ বইটি থেকে একটি প্রসঙ্গ টেনে তিনিও ময়দানে নেমে কাজ করা ও নেতৃত্ব দেওয়ার কথা বলেন। মমতা বলেন, “সিপাহী বিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে স্বামীজি এক বার তাঁর এক বন্ধু জনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ‘আমাদের এত পেয়াদা, সেনা থাকতেও কেন আমরা হেরে গেলাম?’ উত্তরে জন বলেছিলেন ‘তোমাদের নেতৃত্বের অভাব ছিল। ময়দানে নেমে এগিয়ে লড়াই করতে পারে না।’” বইটি হাতে নিয়ে মমতা বলেন, “এটি আমার প্রিয় বই। এর প্রতিটি লাইন আমার কাজে লেগেছে। মন খারাপ হলেই বইটি পড়ি। আগে স্বামীজি সম্পর্কে এত কিছু জানতাম না। তবে বই পড়ে ওঁর সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। নিজের জীবনে সেগুলি প্রয়োগ করে তার মূল্য-গুরুত্ব বুঝতে পারছি।” স্বামী বিবেকানন্দ ‘গ্রাস ল্যান্ড’ থেকে উঠে এসে ঘষেমেজে নিজেকে তৈরি করেছিলেন। এমনকী কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেন। সেই আদর্শে মমতাও মনে করেন, প্রত্যেকেরই উচিত কঠিন লড়াই করে নিজের উন্নতি করা। বিবেকানন্দকে ‘একই অঙ্গে এত রূপ’ বলেও এ দিন মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “স্বামীজি রান্না করা থেকে ঘোড়ায় চাপা, গল্ফ খেলা সবই পারতেন।”
এর পাশাপাশি মঞ্চ থেকেই বেলুড় মঠের নিরাপত্তার জন্য একটি আলাদা পুলিশ ফাঁড়ি এবং দর্শনার্থীদের জন্য জিটি রোডে বাস টার্মিনাস ও অতিথি নিবাসের উদ্বোধনের কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী আত্মস্থানন্দ, সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুহিতানন্দ, সহ-সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ, সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। |