সুতোকল বন্ধের নোটিস, সঙ্কটে আটশো শ্রমিক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কাজ হারানোর আশঙ্কা ছিলই। ধীরে ধীরে শ্রমিকদের কাজ দেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছিলেন মেদিনীপুর শহরের কেশর মাল্টিয়ান কটন মিলের কর্তৃপক্ষ। নতুন বছরের শুরু থেকেই তাই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন শ্রমিকেরা। আবুধবার সকালে কারখানার সামনে বন্ধ হয়ে যাওয়ার নোটিস ঝুলতে দেখা গেল।
দ্রুত কারখানা খোলার দাবিতে এ দিন বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক শশধর পলমল বলেন, “কারখানাটি স্বাভাবিক ভাবে চালানোর দাবি জানিয়ে সর্বস্তরে গিয়েছিলাম। লেবার কমিশনে এই নিয়ে দু’বার বৈঠকও হয়েছিল। কিছু দিনের মধ্যেই আরও একটি বৈঠক হওয়ার কথা। আলোচনা চলাকালীন কারখানা বন্ধ করা বেআইনি। এর বিরুদ্ধে আমরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।” |
|
বন্ধ কেশর মাল্টিয়ান কটন মিল। —নিজস্ব চিত্র। |
এই সুতোকলটি বহু দিনের পুরনো। আগে বিড়লা গোষ্ঠীর মালিকানাধীন ছিল কারখানাটি। পরবর্তীকালে মালিকানা পরিবর্তন হয়। নতুন বছরের শুরু থেকেই কর্মী ছাঁটাই শুরু করতে থাকেন কর্তৃপক্ষ। এই কারখানায় প্রায় ৮০০ জন শ্রমিক রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ২০৯ জন স্থায়ী, বাকিরা অস্থায়ী। স্থায়ী বা অস্থায়ী যা-ই হোক না কেন কাজ করলে তবেই মাইনে মেলে। কয়েকমাস ধরে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কয়েকজন করে কর্মীকে কাজ দেওয়া হত। নতুন বছরের শুরু থেকে হাতে গোনা ৮-১০ জনকে কাজ দেওয়া হত। কর্তৃপক্ষ মৌখিক ভাবে জানিয়েও দিয়েছিলেন আর কারখানা চালাবেন না।
রাজ্যের সমস্ত দফতরে, এমনকী শ্রমমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানানো হয়। শ্রম দফতরের অতিরিক্ত কমিশনার উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন। দু’দফায় বৈঠক হয়। কিন্তু সমাধান সূত্র না মেলায় ফের তৃতীয় দফায় আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। তার আগেই কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধের নোটিস দিলেন। কারখানার শ্রমিক শ্যামানন্দ ঝাঁর কথায়, “বহু বছর ধরে কাজ করছি। হঠাৎ কাজ বন্ধ হয়ে গেলে পরিবারের সকলকে না খেয়ে মরতে হবে।” কারখানার মালিক পবন পাতুরিয়া বলেন, “শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি। ওঁরা কারখানার গেট বন্ধ রেখে সমস্যার সৃষ্টি করছে। তাই বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ রেখেছি।” |
|