ছোট দল কোন দিকে, চিন্তায় কংগ্রেস-বিজেপি
ভোটের মুখে বেসুরো গাইছে কংগ্রেসের শরিকরা। এমনকী কংগ্রেসকে বেগ দিতে তাদের মুখে নরেন্দ্র মোদীরও প্রশংসা শোনা যাচ্ছে। আর কংগ্রেসের উপরে এমন চাপ তৈরি হওয়ায় আশার আলো দেখছে বিজেপি।
ইউপিএ শরিক ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা এবং জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা দু’দিন আগেই সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে তাঁর অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। জোট ভাঙার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ঠারেঠোরে। তার পর আজই আবার তাঁর বাবা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা সুর নরম করেছেন মোদীর প্রসঙ্গে। বলেছেন, “মানুষ চাইলে মোদী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।” অস্বস্তির এখানেই শেষ নয়। দু’দিন আগেও রাহুল গাঁধী গুজরাত দাঙ্গার জন্য মোদীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। কিন্তু ইউপিএ-রই শরিক দল এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পটেল আজ বললেন, “আদালতের রায়ই শেষ কথা। গুজরাত দাঙ্গায় আদালত মোদীকে ক্লিনচিট দেওয়ার পর অহেতুক আর টানাটানি করা ঠিক নয়।” বিজেপির অবস্থানের সঙ্গেই যা সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদিও তাঁর মন্তব্যে গুরুত্ব দিচ্ছেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব।
ভোটের আগে আঞ্চলিক দলের রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টানো নতুন কিছু নয়। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের ধারণা, কংগ্রেসের ডুবন্ত নৌকায় সওয়ার হতে চাইছে না কোনও দলই। সম্ভাব্য শরিকদের কাছে টানতে বিজেপি তলে তলে যোগাযোগ রাখছে সকলের সঙ্গে। ভোটের আগেই জোটে শরিক না হলেও মোদী যদি দুশোর কাছাকাছি আসন পান, তা হলে দিল্লির অশোকা রোডের বাইরে এই দলগুলির লাইন পড়বে সমর্থন দেওয়ার জন্য। আপাতত কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে এখন বিজেপিকেই বার্তা দিতে চেষ্টা করছে তারা।
কাশ্মীরের দলগুলিকে কাছে টানতে গত মাসেই ৩৭০ ধারা নিয়ে বিতর্ক চেয়ে বিজেপির অবস্থান কিছুটা পাল্টানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন মোদী। মোদীর বিরোধিতা করে সেই বিতর্কে সামিল হওয়ার কথাও বলেন ওমর। কিন্তু এখন সেই ওমরই হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন কংগ্রেসকে। অন্যদিকে প্রফুল্ল পটেলের সঙ্গেও বিজেপির তরফে যোগাযোগ রাখছেন নিতিন গডকড়ী। শরদ পওয়ারের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক। দু’জনকে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে বহুবার। মোদী নিজে যোগাযোগ রাখছেন জয়ললিতার সঙ্গে। নবীন পট্টনায়ক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বার্তা পাঠানো হচ্ছে। বিজেপি নেতাদের মতে, ক্ষেত্র প্রস্তুত। ফলের অপেক্ষা।
কিন্তু কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, ভোটের আগে চাপ বাড়িয়ে বাড়তি সুবিধা আদায়ই ছোট দলগুলির লক্ষ্য। তাঁদের মতে, লোকসভা ভোটের সময়েই জম্মু কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন চাইছেন ওমর। তিনি ভাবছেন, কংগ্রেস সর্বভারতীয় স্তরে এখন দুর্বল। তাই আসন বণ্টন নিয়ে নতুন করে দরকষাকষি করার এটাই সুযোগ। তাই জোট ভাঙার ছুতো খুঁজছেন। লোকসভা ভোটের পরে কেন্দ্রে যার দিকে পাল্লা ভারী, সে দিকে ঝুঁকতে পারেন তিনি। তবু কংগ্রেস নেতৃত্ব ওমরকে পাশে রাখার চেষ্টাই করছেন। জম্মু কাশ্মীরে কংগ্রেসের এক নেতা আজ বলেন, জোট ভাঙার ঝুঁকি নিয়ে ওমরের বিশেষ লাভ হবে না। তখন কংগ্রেস জোটে যেতে পারে পিডিপি-র সঙ্গে।
প্রফুল্লের বক্তব্য নিয়েও কংগ্রেস ভাবিত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি বরাবরই মোদীর প্রতি নরম। কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষ সারির নেতা আজ বলেন, কংগ্রেস-এনসিপি জোট না থাকলে কংগ্রেসের যেমন ক্ষতি হবে, এনসিপি-রও লাভ হবে না। যদিও তেমন কিছু হচ্ছে না। এনসিপির সঙ্গে আসন বণ্টনও প্রায় চূড়ান্ত। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, এনসিপি নেত্রী আশা মিরজে কাল ধর্ষণ নিয়ে বিতর্কিত যে মন্তব্য করেন, তা থেকে নজর ঘোরাতেই মোদী সম্পর্কে বেমক্কা মত দিয়েছেন প্রফুল্ল। শরিকদের এই জোড়া অস্বস্তির মধ্যেই আজ বিহারে নয়া জোট সমীকরণ চূড়ান্ত করতে একধাপ এগোলেন সনিয়া। লালুর পরে আজ রামবিলাস পাসোয়ান ও তাঁর ছেলে চিরাগ দেখা করেন সনিয়ার সঙ্গে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.