|
|
|
|
ভাগলপুর দাঙ্গার স্মৃতি উস্কে নীতীশের আক্রমণ কংগ্রেসকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা
২৯ জানুয়ারি |
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) কিষাণগঞ্জ ক্যাম্পাসের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে নীতীশকে আমন্ত্রণ জানিয়েও তাঁকে ‘শান্ত’ করতে পারল না কংগ্রেস। আজ প্রকাশ্য জনসভায় কংগ্রেস ও বিজেপিকে এক বন্ধনীতে এনে আক্রমণ শানালেন নীতীশ। সাড়ে তিন দশক আগের ভাগলপুর দাঙ্গার স্মৃতি উস্কে দিয়ে নীতীশ কাঠগড়ায় দাঁড় করাল রাজ্যের তৎকালীন শাসক দল, কংগ্রেসকে। বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণে নীতীশ হাতিয়ার করলেন গুজরাত দাঙ্গাকে।
আজ বাঁকায় জেডিইউয়ের ‘সঙ্কল্প র্যালি’-র সভা থেকে নীতীশ রাজ্যে তাঁর ভোট প্রচার কার্যত শুরু করে দিলেন। গত কাল দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গে লালুপ্রসাদের নির্বাচনী সমঝোতা চূড়ান্ত হওয়ার পর রাজ্যে কংগ্রেস ও বিজেপি-র সঙ্গে সমদূরত্ব রক্ষা করা ছাড়া নীতীশের সামনে কার্যত আর কোনও পথই খোলা ছিল না।
সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে রাহুল মোদীকে বিঁধতে গিয়ে গুজরাত দাঙ্গার উল্লেখ করেন। তার জের টেনে নীতীশ জানালেন কংগ্রেস জমানায় ঘটে যাওয়া ভাগলপুর দাঙ্গা, দিল্লির শিখ-বিরোধী দাঙ্গার কথা। বক্তব্য, “প্রথমে কংগ্রেস, পরে ক্ষমতায় এসে আরজেডি ভাগলপুরের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যত কিছুই করেনি। বরং দোষীরা ছাড়া পেয়ে যায়।” তাঁর বক্তব্য, “আমরা ক্ষমতায় এসে নতুন করে ভাগলপুর দাঙ্গার তদন্ত শুরু করাই। দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করি। ক্ষতিগ্রস্তদের মাসিক পেনশনের ব্যবস্থা করি।” উল্লেখ্য, নীতীশের জমানায় ভাগলপুর দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাসিক ৫০০০ টাকা পেনশনের ব্যবস্থা করা হয়। একই ভাবে মোদীকে আক্রমণ করেন নীতীশ। তাঁর বক্তব্য, “বিহারে কোনও দাঙ্গাকারীরই স্থান নেই।” রাজ্যের বর্তমান জাতি বিন্যাস এবং আগামী লোকসভা ভোটের প্রধানত ত্রিমুখী লড়াইয়ে অ-বিজেপি দলগুলির বড় ভরসা রাজ্যের ১৪.৭ শতাংশ মুসলিম ভোট। মুসলিম ভোট যে দিকে যাবে পাল্লা ভারি হবে সেই দিকের। এই পরিস্থিতিতে, বহু প্রতিশ্রুত এএমইউ-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে মুসলিম অধ্যুষিত কিষাণগঞ্জে আসছেন সনিয়া গাঁধী। দু’বছর আগে প্রয়োজনীয় জমি হস্তান্তর করে নীতীশ সরকার। তারপর কাজ শুরুর কোনও উদ্যোগ নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাভাবিক ভাবে ভোটের আগে আগে সনিয়ার আগমন প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্র তথা কংগ্রেসের মনোভাব নিয়ে।
প্রাথমিক ভাবে সনিয়ার এই অনুষ্ঠান-মঞ্চ থেকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে দূরে রাখার কেন্দ্রীয় প্রয়াসে জটিলতা আরও বাড়ে। বিষয়টি নিয়ে নীতীশ সরব হওয়ায় অস্বস্তি ঢাকতে এএমইউ ও কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে আজ নীতীশের কাছে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়। কিন্তু তাতে যে চিড়ে বিশেষ ভেজেনি তা স্পষ্ট হয়েছে নীতীশের বাঁকার ভাষণেই।
|
নীতীশকে চিঠি |
লোকসভা ভোটে টিকিট দেওয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে চিঠি লিখলেন তাঁরই দলের নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি। লিখেছেন, “এই সিদ্ধান্তে আমি খুবই দুঃখ পেয়েছি। লোকসভায় প্রার্থী করে আপনি আসলে আমাকে হারানোর চেষ্টা করছেন।” নীতীশের এই সিদ্ধান্তের জন্য তাঁর জবাবও চেয়েছেন শিবানন্দ। আগে ২০০৮-এ আরজেডি ছাড়ার সময় লালুকে এমনই একটি চিঠি লিখেছিলেন তিনি। বিহার রাজনীতির লোকজন মনে করছেন, ফের দল বদলাতে চলেছেন শিবানন্দ। তাঁর ছেলে মন্টু তিওয়ারি এখনও আরজেডিতে রয়েছেন। এ বার সম্ভবত ছেলের দলে ফিরবেন তিনি। নীতীশকে চিঠি তারই প্রস্তাবনা। |
|
|
|
|
|