মহিলা কমিশন প্রধানকে সরাতে উদ্যোগী আপ
বিদেশিনি নিগ্রহ কাণ্ডে দিল্লির আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতীকে সমন পাঠিয়েছিলেন তিনি। আইনমন্ত্রী নিজে না গিয়ে আইনজীবীকে পাঠালে তাঁর সঙ্গে তর্কাতর্কিতেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। দিল্লি রাজ্য মহিলা কমিশনের সেই চেয়ারপার্সন বরখা সিংহকে সরাতে উদ্যোগী হল অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। দিল্লি প্রশাসন সূত্রের খবর, চেয়ারপার্সন পদে বরখার পরিবর্তে হিন্দি সাহিত্যিক মৈত্রেয়ী পুষ্পার নাম প্রস্তাব করে ইতিমধ্যেই উপ-রাজ্যপাল নাজিব জং-এর কাছে পাঠানো হয়েছে।
বরখার কথায়, “ওই পদে আমার এখনও এক বছর চার মাস মেয়াদ বাকি রয়েছে। আইনমন্ত্রীকে ডেকে পাঠানোর অপরাধে আমাকে সরানোর জন্য চাপ বাড়াচ্ছে দিল্লি সরকার।” আম আদমি পার্টি (আপ) সমর্থকদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও করেছেন তিনি। তবে দিল্লি সরকার যে ভাবে আগ বাড়িয়ে নয়া চেয়ারপার্সনের নাম প্রস্তাব করে উপ-রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। এক আইনজ্ঞ জানান, মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন একটি সাংবিধানিক পদ। ওই পদাধিকারীকে অপসারণের নির্দিষ্ট রীতি রয়েছে। প্রথমে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে হবে। তার পর মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনকে অপসারণের ব্যাপারে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার স্পিকার, মুখ্য সচেতক ও বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে গঠিত একটি কলেজিয়ামকে একমত হতে হবে। এর পর সরকারি প্রস্তাব যাবে রাজ্যপালের কাছে। তিনি সেই প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। অপসারণের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেবেন রাষ্ট্রপতিই।
মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে বরখাকে সরাতে হলে এই ধাপগুলি পেরোতে হবে কেজরিওয়াল সরকারকেও। তা না করেই নয়া চেয়ারপার্সনের নাম কী ভাবে উপ-রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হল, স্বভাবতই এখন সেই প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করছেন, বরখা যে ভাবে তিন বার সোমনাথ ভারতীকে সমন পাঠিয়েছিলেন, তা মোটেই ভাল ভাবে নেননি আপ নেতৃত্ব। তা ছাড়া, বরখা ঘোষিত কংগ্রেস সদস্য। গত নির্বাচনেও কংগ্রেসের টিকিটে আর কে পুরম আসন থেকে লড়ে পরাজিত হয়েছেন তিনি। অতএব এমন একজনকে ওই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে রাখলে কথায়-কথায় বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে আপ নেতৃত্বের।
আপের বক্তব্য, তারা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করছে মাত্র। কোনও অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে মহিলা কমিশনের প্রধান করা হবে বলে ভোটের আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। বরখার সঙ্গে সোমনাথের আইনজীবীর তর্কাতর্কির দিন তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে বিবৃতি দিয়েছিল আপের মিডিয়া সেল। বরখা যে প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক, সে কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল ওই বিবৃতিতে।
দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দ সিংহ লাভলি কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরেই এই ধরনের সমস্ত কমিশন থেকে সদস্য ও চেয়ারপার্সনদের ইস্তফা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বরখা মহিলা কমিশনের পদে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম দিকে সব ঠিক থাকলেও সম্প্রতি বিদেশিনি বিতর্কের সূত্রপাত হয়। মালব্যনগরের খিড়কি এলাকায় জনা চারেক বিদেশি মহিলার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠে আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতীর বিরুদ্ধে। ওই বিদেশিনিরা ড্রাগ পাচার ও দেহব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ করে তাঁদের বাড়িতে সোমনাথের নেতৃত্বে চড়াও হয় আপ সমথর্কেরা। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় নিজে থেকেই তদন্তে নামে মহিলা কমিশন। ডেকে পাঠানো হয় সোমনাথকেও। প্রথম দু’দফায় তিনি অনুপস্থিত থাকলেও তৃতীয় দফায় আইনজীবীকে কমিশনে পাঠান সোমনাথ। তখনই চাপানউতোর চরমে ওঠে। বরখার বক্তব্য, তিনি শুধু নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তাঁর কথায়, “ওই বিদেশিনিরা আমার কাছে এসে সোমনাথ ভারতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। আমি কর্তব্যের খাতিরে তাঁকে তলব করি। সেই অপরাধে যদি আমায় সরে যেতে হয়, তা হলে সেটা খুব নিষ্ঠুর ব্যাপার হবে।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.