ভয় দেখালে পিছিয়ে আসবেন না, বরং যাঁরা ভয় দেখাচ্ছে তাঁদের নাম-ধাম লিখে রেখে দিন- বুধবার, প্রায় চার বছর পরে কেতুগ্রামের কান্দরায় সভা করে এভাবেই দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আহ্বান জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য সুর্যকান্ত মিশ্র।
গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই কান্দরা এলাকায় সিপিএমের পা পড়েনি বললেই চলে। গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে সিপিএম প্রার্থী মার খান। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কার্যত প্রার্থীই দিতে পারেনি সিপিএম বা বামফ্রন্ট। এ বার তাই ‘হতোদ্যোম’ কর্মীদের মনে ‘আগুন জ্বালাতে’ সূর্যকান্তকে দিয়ে সভা করানোর উদ্যোগ করেছিল সিপিএম। |
কেতুগ্রামের ১ ব্লকের সদর দফতর কান্দরাতে কার্যত চার বছর পর সিপিএম এ দিন কোনও সমাবেশ করল। সেখানেই বিরোধী দলনেতা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ফেরানোর চেষ্টা করেন। বর্ধমান জেলা সিপিএমের সম্পাদক অমল হালদারও দলীয় সভায় ‘প্রতিরোধ’ করার জন্য শপথ নেওয়ার ডাক দেন। এ দিন সভায় হাজির ছিলেন বীরভূমের জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়। ছিলেন কাটোয়া মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজন ও বর্ধমান লাগোয়া বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলার সমর্থকেরাও।
বক্তব্যের শুরুতেই বিরোধী দলনেতা বলেন, “চার বছর পরে এই এলাকায় মানুষ সিপিএমের ডাকে জমা হয়েছেন। এখানে দলীয় দফতর বন্ধ হয়ে রয়েছে।” এরপর তাঁর অভিযোগ, শুধু কেতুগ্রাম নয়, বীরভূমের নানুর, লাভপুর-সহ গোটা এলাকা জুড়েই তৃণমূল ভয় দেখাচ্ছে। তৃণমূলের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যাঁরা আজকের সভায় আসছেন আপনার রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুখগুলো চিনে রাখছেন নাম লিখে রাখছেন। পরে নাকি বিচার করবেন! আপনারা এ সব কাজ করবেন না।” আর দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মনের জোর বাড়াতে বলেন, “যাঁরা নাম লিখছে, ভয় দেখাচ্ছে আপনার তাঁদের নাম লিখে রাখুন। তারপর দেখি কী রকম ভয় দেখায়।” তাঁর কথায়, “চার বছর ধরে অনেক যন্ত্রণা সহ্য করেছেন। এ বার মনের মধ্যে আগুন জ্বালান। ভয় পাওয়ার কী আছে?” এ দিনের সভায় পুলিশকেও এক হাত নেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য। তিনি পুলিশকে মনে করে দিয়ে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থেকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সব সময় ‘ইয়েস ম্যাডাম, ইয়েস ম্যাডাম’ করত, গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পরে তাঁকেও শাস্তির মুখে পড়তে হয়। এরপর তিনি বলেন, “কাজেই আপনারাও কী বাঁচতে পারবেন?”
সভায় লোক সমাগম দেখে সূর্যকান্তবাবু বলেন, “আপনারা এক পা এগিয়েছেন, আর পিছনোর পথ নেই। দু’পা ফেলার জন্য প্রস্তুত হন। তৃণমূলকে দু’পা পিছোনর ব্যবস্থা করুন।” কী ভাবে? তাঁর দাওয়ায়, “মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। মন পেতে হলে মানুষকে ভালবাসতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে।”
এ দিন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষাতেও দূর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর টিপ্পনি, “তাহলে কী শিক্ষকতার চাকরি পেতে গেলে তৃণমূলের যুব কর্মী হলেই চলবে না, তৃণমূলের বিধায়ক-নেতার আত্মীয় হওয়াটাও দরকার!” এ দিনের সভা থেকে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলেন তিনি। সঙ্গে টেট পরীক্ষা বাতিলেরও দাবি জানান। এ দিনের সভা শেষে কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেন, “গণতন্ত্র আছে বলেই সিপিএম বাইরে থেকে লোক এনে সভা করল তবে ওঁদের কথায় মানুষ কান দেবেন না। |