খনিতে কাজে নেমে সঙ্গীদের তিনি বলেছিলেন, ‘এগিয়ে যান, আমি এখানে একটু বসি...।’
অন্ডালের খাসকাজোড়া ৬ নম্বর খনির গুহাগর্ভ ধরে এগিয়ে গিয়েছিলেন সঙ্গীরা। পরে ফিরে দেখেন, বছর ছাপান্নর
|
পাঁচকড়ি নন্দী। |
সার্ভেয়র পাঁচকড়ি নন্দী নেই। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি নিখোঁজ হওয়ার পরে খনি কর্তৃপক্ষকে এমনটাই জানিয়েছিলেন তাঁর চার সঙ্গী। বুধবার রাত পর্যন্ত পাঁচকড়িবাবুর খোঁজ না মেলায় তাঁর পরিবার সঙ্গীদের বিরুদ্ধেই চক্রান্ত ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের অভিযোগ করেছেন। একই অভিযোগ আনা হয়েছে খনির এজেন্টের বিরুদ্ধেও।
বুধবার দফায়-দফায় তল্লাশি চালিয়েও পাঁচকড়িবাবুর সন্ধান পায়নি ইসিএলের উদ্ধারকারী দল। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি অজয় প্রসাদ জানান, এজেন্ট রামচন্দ্র মুদি-সহ তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের দাবি, “পরিবারের অভিযোগ ঠিক নয়। পাঁচকড়িবাবুর খোঁজ চলছে।”
ইসিএল সূত্রের খবর, বর্ধমানের কাজোড়া এরিয়ার ওই খনিতে আরও একটি প্যানেল (কয়লা কাটার জায়গা) তৈরি হবে। তার কাজেই মঙ্গলবার সকালে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার গোড়েলাল সিংহ, সার্ভেয়র শ্যামল কর্মকার ও দুই কর্মী ভোলানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাশীনাথ সাউয়ের সঙ্গে খনিতে নেমেছিলেন পাঁচকড়িবাবু। শ্যামলবাবু জানান, ভূগর্ভে কিছুটা গিয়েই পাঁচকড়িবাবু বলেন, তাঁর গরম লাগছে, একটু বসতে চান। তাঁদের এগোতে বলেন। ঘণ্টা চারেক পরে কাজ সেরে ফেরার সময়ে আর তাঁকে সেখানে দেখতে পাননি। উপরে উঠে তাঁরা জানতে পারেন, পাঁচকড়িবাবু ওঠেননি। ডুলি বা ইনক্লাইন (খনিতে ওঠা-নামার ঢালু পথ) ধরেও তাঁকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়নি।
তা হলে পাঁচকড়িবাবু গেলেন কোথায়? খনি সূত্রের খবর, খনিতে নামেনি যে ওই কর্মী চাপা পড়ে যাবেন। মঙ্গলবার দুপুরেই ইসিএলের উদ্ধারকারী দল নেমেছিল খনিতে। এ দিনও তিন দফায় তল্লাশি চলে। নীলাদ্রিবাবু বলেন, “খনির একটি অংশে জল জমে রয়েছে। ওই কর্মী সেখানে গিয়েছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পাঁচকড়িবাবুর আত্মীয়-পরিজনের অভিযোগ, খনির কাছে রাখা তাঁর মোটরবাইক ডিকি খোলা ও হ্যান্ডেল বাঁকা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। এর পিছনে চক্রান্ত রয়েছে। অন্ডালে সিটুর খনিকর্মী সংগঠনের নেতা মলয় বসুরায়েরও বক্তব্য, “গোটা ঘটনাটি রহস্যজনক। তবে এখন দোষারোপের সময় নয়।” |