গর্ভবতী মায়েদের ভোগান্তি কমাতে কোচবিহারের প্রত্যন্ত এলাকার ৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের বৈঠকে ওই পরিকল্পনা হয়েছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাথাভাঙার আঙ্গারকাটা, মেখলিগঞ্জের কুচলিবাড়ি, তুফানগঞ্জের শালবাড়ি, কোচবিহার সদরে পুটিমারি ফুলেশ্বরী এবং কালজানি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ওই তালিকায় রয়েছে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই পাঁচটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লাগোয়া এলাকার গর্ভবতী মহিলারা ভর্তি হয়ে প্রসব করানোর সুবিধে পাবেন। এ দিন কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেছেন, “গর্ভবতীদের অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী এলাকায় প্রসবের ব্যবস্থা করার ভাবনা থেকে ওই সিদ্ধান্ত। প্রথম ধাপে ওই ৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রসবের ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা বলেন, “বাড়ি থেকে ছয় কিমি দূরত্বের মধ্যেই গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব করানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই আমরা আপাতত এগোতে চাইছি। এর ফলে জেলা এবং মহকুমা হাসপাতালগুলির উপর থেকে চাপ খানিকটা কমবে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারে ২৯টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। এর ১০টিতে সন্তান প্রসবের পরিকাঠামো রয়েছে। এছাড়াও জেলা, মহকুমা, ব্লক ও গ্রামীণ হাসপাতাল মিলিয়ে আরও অন্তত ১৫ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসবের ব্যবস্থা রয়েছে। কোচবিহারের কালজানি, পুটিমারি ফুলেশ্বরীর মতো প্রত্যন্ত এলাকার মহিলাদের অন্তত ২৫-৩০ কিমি দূরে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে আসতে হয়। একইভাবে শালবাড়ির বাসিন্দাদের তুফানগঞ্জ মহকুমা বা বক্সিরহাট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হয়। আঙ্গারকাটা, কুচলিবাড়ির মতো এলাকার বাসিন্দাদের কাছে এই সমস্যা বেশি। সোমবারের বৈঠকে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দূরত্ব, যাতায়াতের সমস্যার মতো নানা বিষয় খতিয়ে দেখে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাঁচটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, পরিকাঠামো চালু করতে বাড়তি অন্তত এক জন চিকিৎসক ও চার জন নার্স নিয়োগের ব্যাপারেও ঊর্ধ্বতন কর্তাদের কাছে বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ফেরুয়ারির মধ্যে তা না মিললে কী হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। জেলাশাসক এই দিন জানান, প্রয়োজনে যে সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অর্ন্তবিভাগ চালু নেই, সেখানকার কর্মীদের কাজে লাগিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিষেবা চালু করা হবে। |