বাম-তৃণমূলের বিরোধিতা, ৪ প্রস্তাব থমকে
প্রস্তাবে অনিয়ম থাকার অভিযোগে বাম ও তৃণমূল কাউন্সিলরদের বাধায় শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে তা আটকে গেল। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে যে সমস্ত প্রকল্প এবং প্রস্তাব পাশ হয়নি তার মধ্যে রয়েছে, বর্ধমান রোডে ২৯ লক্ষ টাকা খরচে বাতি বসানোর পরিকল্পনা, শহরের বিভিন্ন রুটে ১০টি ব্যাটারি চালিত ইকোফ্রেন্ডলি রিকশা চালানোর পরিকল্পনা, মাসের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ শুক্রবার পুরসভায় ছুটি ঘোষণা এবং বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে সামনে বিশেষ ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব। এই চারটি বিষয়ে অনিয়ম রয়েছে বলে বাম এবং তৃণমূল কাউন্সিলরা তাদের মত জানান।
তবে বামেদের যে সব বিষয়ে আপত্তি তার অধিকাংশ বিষয়ে তৃণমূল কাউন্সিলররা আপত্তি করেননি। আবার তৃণমূলের যে সব বিষয়ে আপত্তি তার অধিকাংশ ক্ষেত্রে বামেরা আপত্তি করলেন না। কেবল চারটি বিষয় বাম ও তৃণমূল উভয়পক্ষের বাধায় আটকে যায়। পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “কিছু বিষয়ে বাম এবং তৃণমূল কাউন্সিলরদের আপত্তি রয়েছে। আর আমাদেরও মনে হয়েছে কয়েকটি বিষয় আরও ভেবে দেখা দরকার।”
বাম কাউন্সির রমেশ প্রসাদ গুপ্তা ও অন্যরা জানান, যেখানে বর্ধমান রোড জুড়ে বাতি রয়েছে সেখানে ৮৮টি বাতি বসানোর জন্য কী কারণে ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এক একটি বাতির দাম ৩৩ হাজার টাকা করে পড়ছে। তৃণমূল কাউন্সিলরদের পক্ষে কৃষ্ণ পাল জানান, আগেও বোর্ড মিটিংয়ে তাঁরা একই রকম পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন। সেখানে এক একটি বাতির দাম পড়ছিল ১৪ হাজার টাকা। এ দিন তার চেয়েও বেশি দর দিয়ে কী কারণে ওই বাতিগুলি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে তারা বুঝতে পারছেন না। বিদ্যুৎ বিভাগের মেয়র পারিষদ সবিতা অগ্রবাল জানান, টেন্ডার ডেকে বাতির দাম অনুসারে তাঁরা ওই বিষয়টি ঠিক করেছিলেন।
ই-রিকশা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরদের অভিযোগ, শহরের সিটি অটোর দাপট, বেআইনি রিকশার জেরে রাস্তায় চলাফেরার জায়গা নেই। এই বোর্ড ই-রিকশা এ ভাবে ইচ্ছে মতো চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে তারা মেনে নেবেন না। বামেদের পক্ষে মুন্সি নুরুল ইসলামও জানান, পরিবহণ মন্ত্রী সম্প্রতি শিলিগুড়িতে এসে ট্যাক্সির সাইসেন্স দেওয়ার কথা বলেছেন। ই-রিকশা চাললে শহরের পরিস্থিতি কী হবে তা ভাল করে ভেবে তবে ওই পদক্ষেপ করা দরকার।
পুরসভা মাসে ২টি ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত ও মেয়র পারিষদের বৈঠকেই প্রস্তাব পাশ করানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান তৃণমূল এবং বামেরা। কৃষ্ণবাবু বলেন, এমনিতেই পুরসভা কাজ করতে পারছে না। কর্মীরা কে কখন অফিসে আসেন তার ঠিক নেই। তার মধ্যে এ ভাবে আরও ২ দিন ছুটি ঘোষণা ঠিক নয়। ছুটি ঘোষণা করতে গেলে রাজ্যের অনুমতি দরকার। সে সব না মেনে ১৪ জন কাউন্সিলর নিয়ে সংখ্যা লঘু বোর্ড হয়েও তারা অনৈতিক কাজ করছেন। বামেরা এক মত দেন।
এ দিন পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের বেতন ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পেশ করেন পুর কর্তৃপক্ষ। কৃষ্ণবাবুর দাবি তা ২৫ শতাংশ বাড়ানো হোক। এ দিন আইএনটিটিইউসি নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমবঙ্গ পুর কর্মচারী সমিতির রক্ষ থেকে অস্থায়ী কর্মীদের মাসে ৬৬০০ টাকা বেতন এবং স্থায়ীকরণের দাবি করা হয়। তারা পুরসভার সভাকক্ষের ঢোকার মুখে অবস্থান বিক্ষোভ দেখান। তার জেরে আধিকারিকরা বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দিতেও পারেননি। বোর্ড মিটিংয়ে বামেরাও অস্থায়ী কর্মীদের বেতন মাসে ৬৬০০ টাকা করার পক্ষে মত দেন। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত জানান, পুরসভার আর্থিক পরিস্থিতি অনুযায়ী এখনই ১৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়। সমস্ত দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে প্রতিনিধি দল রাজ্য সরকারের কাছে গিয়ে আর্জি জানানোর প্রস্তাব দেন কংগ্রেস কাউন্সিলর সঞ্জয় পাঠক। কৃষ্ণবাবু তার পক্ষে মত দেননি। ঠিক হয় ১৫ শতাংশ মজুরিবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পাশ হলেও সাত দিনের মধ্যে ফের আলোচনায় বসা হবে। মিটিংয়ের পর কাউন্সিলররা গিয়ে আন্দোলনকারীদের বোঝালে তাঁরা অবস্থান তোলেন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.