ভিনদেশ থেকে অঢেল টাকা ঝুপড়িবাসীর অ্যাকাউন্টে
য়স বাইশ। ঠিকানা ফুটপাথের ঝুপড়ি। পেশা ব্যাগ তৈরির কারখানায় দিনমজুরি। দিনে আয় ১০০ টাকার কিছু বেশি। কিন্তু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চারটি। প্রতি মাসে গড়ে সেই অ্যাকাউন্টে দুবাই, সৌদি আরব, বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে ১০-১৫ হাজার টাকা জমা পড়ে। গত এক বছরে চারটি সিমকার্ডে ১০০টি মোবাইল ব্যবহার করেছে ওই যুবক!
পুলিশ জানায়, মহম্মদ আবদুল্লা নামে ওই যুবকের বাড়ি বিহার শরিফে। গত ১৮ জানুয়ারি রাতে বৌবাজার থানার হরিণবাড়ি লেনে বিয়েবাড়িতে গাড়ি রাখা ঘিরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লাঠি, লোহার রড, টিউব নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছিল। তাতে জড়িত থাকার অভিযোগে দু’দিন পরে লালবাজারের কাছে ছাতাওয়ালা গলি থেকে আবদুল্লা ও তার সঙ্গী মহম্মদ ফৈয়াজ ওরফে গুড্ডুকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় আবদুল্লা জানায়, পাঁচ বছর ধরে সে ছাতাওয়ালা গলির ফুটপাথের এক ঝুপড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে থাকে।
বিষয়টি এখানেই থেমে যেতে পারত। কিন্তু থানায় তল্লাশির সময়ে তার কাছ থেকে ভুয়ো ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট পাওয়ার পরেই চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের। পাশাপশি এর আগে সে কোথায় থাকত, এ ব্যাপারে পুলিশি জেরার মুখে কোনও উত্তর দিতে পারেনি আবদুল্লা।
পুলিশ জানায়, জেরায় আবদুল্লা জানিয়েছে, সম্প্রতি সে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরা পড়া মহম্মদ সামসুলকে দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে ভুয়ো কাগজপত্র দাখিল করে ছাড়িয়েও নিয়েছে। পুলিশের দাবি, আবদুল্লার স্ত্রী রাবেয়া জানান, গত বছর ডিসেম্বরের গোড়ায় দুবাই থেকে তাঁর স্বামীর মোবাইলে একটি ফোন আসে। তাতে সামসুলকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেয় কেউ। সেই মতো অল্প কিছু দিনের ব্যবধানে ২৫ ও ১০ হাজার টাকা পাঠানো হয় আবদুল্লার একটি ব্যাঙ্ক আ্যাকাউন্টে। টাকা পেয়ে এক আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আবদুল্লা। নিজের ভুয়ো পরিচয়পত্রে সামসুলের ছবি বসিয়ে জাল হলফনামা দাখিল করে আদালতে পেশ করে সে। পুলিশের দাবি, তার ভিত্তিতেই সামসুল জেল থেকে ছাড়া পায়। ছাড়া পেয়ে সে প্রথমে ছাতাওয়ালা গলিতে আবদুল্লার কাছে আসে, দু’দিন পরে নিখোঁজ হয়।
লালবাজার সূত্রের খবর, আবদুল্লার পরিচয় নিয়ে ধন্দ তৈরি হওয়ায় কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স, স্পেশাল ব্রাঞ্চ-সহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থায় খবর পাঠানো হয়। পুলিশের দাবি, আবদুল্লা জেরায় জানায়, তার বাবা পশ্চিম এশিয়ায় থাকেন। তিনিই টাকা পাঠান।
পুলিশের দাবি, আবদুল্লার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, তার অন্য অ্যাকাউন্টে নিয়মিত টাকা আসে পাকিস্তান, সৌদি আরব, বাংলাদেশ থেকে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, যার কাছে হাজার হাজার টাকা আসছে, সে ফুটপাথে থাকবে কেন? দুবাই থেকে কে তাকে ফোন করে সামসুলকে ছাড়াতে বলেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সামসুল ছাড়া পেয়ে কোথায় রয়েছে, তার হদিস দিতে পারেনি আবদুল্লা।
আবদুল্লার মোবাইল কললিস্ট খতিয়ে দেখে পুলিশের দাবি, ধৃতের চারটি নম্বর থেকে বেশির ভাগ আইএসডি করা হয়েছে। তবে তার কোনও কারণ দেখাতে পারেনি সে বলে পুলিশের দাবি। লালবাজারের এক কর্তা জানান, কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে আবদুল্লার যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.