ইদানীং যখনই ভারতীয় দল নির্বাচনে বসেছেন জাতীয় নির্বাচকেরা, গৌতম গম্ভীর হয়তো নিঃশব্দ প্রার্থনায় বসেছেন দলের বাইরে থাকার মেয়াদ তার হয়তো এ বার ফুরোবে! কিন্তু একদা আইসিসি টেস্ট ব্যাটসম্যানদের বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর এবং ধোনির অনুপস্থিতিতে ভারতের সক্ষম অধিনায়ক হিসাবে ক্রিকেটমহলের চিহ্নিত ‘গোতি’ সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচক কমিটির সভাতেও ব্রাত্য থেকেছেন। এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভারতের ৩০ জন ক্রিকেটারের প্রাথমিক তালিকাতেও নিজের জায়গা হয়নি দেখে দিল্লি এবং কেকেআরের বাঁ-হাতি ওপেনারের দার্শনিক উপলব্ধি, “আমি বুঝে গিয়েছি জীবনে কোনও কিছুই চিরস্থায়ী নয়। সবই অস্থায়ী।”
এক বিদেশি দৈনিকে সাক্ষাৎকারে গম্ভীর এ দিন আরও বলেছেন, “এই অধ্যায়টা আমার জীবনে রীতিমতো শিক্ষণীয়। ঘরোয়া টুর্নামেন্টে বড় রান করতে নেমে আর সেই কাজে সফল হওয়ার পথে আমি নিজের এবং নিজের ব্যাটিংয়ের বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আবিষ্কার করেছি। এই সময়ের মধ্যে আমি কঠিন প্র্যাকটিস করেছি। ট্রেনিং করেছি। ব্যাডমিন্টন খেলেছি। বেশ কিছু ভাল ডকুমেন্টারি দেখেছি। এই তো অস্ট্রেলীয় ওপেন আমার দিনের অনেকটাই সময় আর মন দখল করেছিল। কিন্তু এ সমস্ত কিছুই যে চিরস্থায়ী নয় সেটাও আমি বুঝেছি।”
টেস্ট আর ওয়ান ডে মিলিয়ে ঠিক দু’বছর ভারতীয় দলের বাইরে গম্ভীর। এবং প্রত্যাবর্তনের চেষ্টায় কোনও খামতি রাখছেন না গম্ভীর! কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্সের হয়ে খেলা থেকে প্রাক্তন ভারতীয় বাঁ-হাতি ওপেনার এবং অধুনা জাতীয় স্তরের কোচ উরকেরি রামনকে নয়াদিল্লির নেটে ডেকে এনে পরামর্শ নেওয়াসবই করেছেন। দিল্লি নক আউটে উঠতে না পারলেও রঞ্জিতে গম্ভীরের ছ’শোর বেশি রান করায় প্রমাণিত, দু’টো চেষ্টাই তাঁর ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয়েছে। “এসেক্সে খেলা আর নেটে রামনের টিপস দু’টো দু’ভাবে আমার উপকার করেছে। রামন আমাকে আমার খোলস থেকে বার করে এনেছেন। আর কাউন্টি ক্রিকেট পুরোটাই ছিল নানা রকম চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে রান করে যাওয়া।” কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্সের পরেও তো টেস্টে ডাক এল না? তা হলে কি ঘরোয়া ক্রিকেটের ওই পারফরম্যান্স যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন? এ বার গম্ভীরের জবাব, “বোধহয় নয়। আর তাই হয়তো আমি টেস্ট টিমে নেই।” সঙ্গে সংযোজন, “তবে ভবিষ্যতেও আমি ঘরোয়া ম্যাচে বড়-বড় রান করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব। তার পর দেখা যাক, কী হয়!”
একইসঙ্গে গম্ভীর বলে দিচ্ছেন, ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে তিনি কী পরিচয়ে থাকতে চান! “আমার ইচ্ছে যে দিন অবসর নেব, আমাকে যেন দেখা হয় একজন নিঃস্বার্থ ক্রিকেটার হিসাবে। যে একজন পারফেক্ট টিমম্যান ছিল। সব সময় ব্যক্তিগত সাফল্যের চেয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছে টিমের সাফল্যকে।”
গম্ভীরের কাছে বোধহয় একটাই সুখবর যে, কেকেআর তাঁকে পরের আইপিএলে রেখে দিয়েছে। তিন বছর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের জুতোয় পা গলিয়ে থাকার পর কেকেআরে দু’জনের জমানার তুলনা কী ভাবে করতে চান তিনি? “দাদা সব সময় এক নম্বর ছিল, থাকবে। আমি আর আমার দল অনেকটা পিছনে থাকা দু’নম্বর। তবে আমি মনে করি, কেকেআর ভক্তেরা আমাদের টিমের স্পিরিটটার সমর্থক। নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির নন,” সাফ বলে দিচ্ছেন কেকেআর অধিনায়ক গম্ভীর।
এ দিকে, অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আসন্ন আইপিএলে খেলতে দেখা যাবে না মাইকেল ক্লার্ককে। তিনি ২০১৫ বিশ্বকাপ এবং পরবর্তী অ্যাসেজের জন্য নিজেকে সম্পূর্ণ ঝরঝরে রাখতে চান আইপিএল না খেলে। |