গুরুত্ব দিচ্ছেন না শিল্ডকে
কোরিয়ার ছাত্রদের বিরুদ্ধে নতুন পরীক্ষা আর্মান্দোর
পাঁচ বার আই লিগ জিতেছেন তিনি। কিন্তু লাল-হলুদ সমর্থকদের আবেগ জড়ানো আইএফএ শিল্ড! এক বারও ওঠেনি বর্তমান ইস্টবেঙ্গল কোচ আর্মান্দো কোলাসোর হাতে!
এই শিল্ডেই তো ইরানের পাস ক্লাবকে হারিয়ে স্বাধীনতার পর কোনও বিদেশি দলের বিরুদ্ধে প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে জয় ইস্টবেঙ্গলের। এই টুর্নামেন্টেই তো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে পাঁচ গোল! এ রকম কত শত কীর্তির কথা মুখে মুখে ঘোরে লাল-হলুদ জনতার।
বুধবার দুপুরে বারাসতের বিদ্যাসাগর ক্রীড়াঙ্গনে সেই শিল্ডেরই ১১৮ তম পর্বের সূচনা। আর্মান্দোর ইস্টবেঙ্গল টুর্নামেন্ট শুরু করবে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান সানমুন এফসি-র বিরুদ্ধে। অতীতে এ রকম আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে তেতে থাকত ইস্টবেঙ্গল। পার্ক জি সুং-এর দেশের গতিময় বিশ্ববিদ্যালয় দলকে দুরমুশ করে সেই ধারা বজায় রাখতে পারবে চিডিরা? পারবে ফেড কাপের পর মুখ গোমড়া হয়ে যাওয়া লাল-হলুদ সমর্থকদের হাতে এ বারের শিল্ড জয়ের মশাল তুলে দিতে? আর্মান্দো পারবেন প্রথম বার ঐতিহ্য মোড়ানো আইএফএ শিল্ড হাতে তুলতে?
ফেড কাপে ব্যর্থতার পরে আইএফএ শিল্ডে উঠে দাঁড়ানোর লড়াই
মেহতাব হোসেনদের। মঙ্গলবার অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক।
মুহূর্তে চোয়াল শক্ত লাল-হলুদ কোচের। গোয়ান আর্মান্দো যা বললেন তা তাঁদের জমানায় শুনলে থ হয়ে যেতেন শান্ত মিত্র, গৌতম সরকাররা। শিল্ড অভিযান শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগে লাল-হলুদ কোচ বললেন, “আইএফএ শিল্ড নিয়ে কোনও আগ্রহই নেই। ক্লাব কর্তাদের তো সে কথা জানিয়েই ছিলাম। কিন্তু কী করা যাবে! অভিভাবক সংস্থার টুর্নামেন্ট তো খেলতেই হবে। তাই খেলা। আমার আসল লক্ষ্য কিন্তু সেই আই লিগ।”
এখানেই শেষ নয়। শিল্ড শুরুর আগের সকালেও পূর্বতন কোচ ব্রাজিলীয় মার্কোস ফালোপাকে নাম না করে বিঁধতেও ছাড়লেন না কোলাসো। “এত চোট-আঘাত! প্রাক্-মরসুম ট্রেনিংটাই ঠিক করে হয়নি। ফুটবলাররাও ক্লান্ত। শিল্ডে অভ্র, লেন, সুবোধদের সুযোগ দেব। আই লিগ ফের শুরুর আগে এটাই নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার টুর্নামেন্ট।”
কিন্তু সেই ঝালিয়ে নেওয়া বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে তিপ্পান্ন নম্বরে থাকা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে? জবাবটা দিলেন লাল-হলুদের জাপানি মিডিও সুয়োকা। “আরে ওরা তো কোরিয়ার প্রিমিয়ার ডিভিশনের টিম নয়। শুনলাম সবাই ছাত্র। সমস্যা হওয়ার তো কথা নয়।” কিন্তু সানমুন যে উইং ধরে গতিতে তিন-চারটে পাস খেলতে খেলতে বিপক্ষ বক্সে পৌঁছে যায়। সেটা সামাল দেওয়া যাবে তো? এ বার মুখ খুললেন মেহতাব। চোটের জন্য ফেড কাপে ছিলেন না। বুধবার শেষের কুড়ি মিনিট নামতে পারেন। লাল-হলুদ অধিনায়কই বলে ফেললেন আসল কথাটা, “ওদের গতিটাই চিন্তার। তবে তা সামলানোর গেমপ্ল্যানও রয়েছে।”
গতি সামলানোর সঙ্গে আরও একটা বিষয়ও তো রপ্ত করাতে বুধবার থেকেই অভিযান শুরু করছেন লাল-হলুদ কোচ। গোটা মরসুম রক্ষণাত্মক হাফ নেইএই হাহুতাশ বন্ধ করতে সানমুন ম্যাচ থেকেই ইস্টবেঙ্গল শুরু করবে ৪-৪-২। ক্লাবের স্বয়ংক্রিয় প্রধান ফটক বন্ধ করে এ দিন সেই অনুশীলনই হল পুরোদমে। অর্থাৎ ট্রেভর মর্গ্যানের ৪-১-৩-২-এর বিদায়। বিদেশি দলের বিরুদ্ধে হঠাৎ এই ছক বদল বুমেরাং হয়ে যাবে না তো? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার শুনেই প্রশ্ন ছুড়লেন, “কেন মঞ্জেরিতে বেঙ্গালুরু এফসিকে তো এই ছকেই দু’গোলে হারালাম। সমস্যা হওয়ার তো কথা নয়। আমরা তৈরি।”
দৌড় সানমুন ফুটবলারদের।
সমস্যা রয়েছে। তবে তা দল গঠনে। চোটের কারণে উগা, গুরবিন্দর, খাবরার মতো কেজো ফুটবলাররা নেই। এ দিন পেটের গণ্ডগোলে কাবু মোগাও আসেননি অনুশীলনে। আর্মান্দোর নোটবুকে গোলে অভ্র। আর রক্ষণে অভিষেক, রাজু, অর্ণব, রবার্ট পাকা। মাঝমাঠে জোয়াকিম-সুবোধ, সুয়োকা, তুলুঙ্গাদেরও এ দিন খেলিয়ে দেখে নিলেন। যদি মোগা সুস্থ থাকেন, তা হলে চিডির সঙ্গী হবেন তিনিই। না হলে লেন। তবে আর্মান্দো বলে গেলেন, “চূড়ান্ত দল বাছব সকালে মাঠে গিয়ে।”
বিপক্ষ কোচ কিম জে সো আবার ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে জেনেছেন ইন্টারনেট হাতড়ে। বিকেলে অনুশীলনের পর ধর্মতলা চত্বর ঘুরতে বেরিয়েছিলেন লোকাল ম্যানেজারের সঙ্গে। ঘোরার ফাঁকে আনন্দবাজারকে বললেন, “জিততেই এসেছি। দলে বিদেশি না থাকলেও আমরা তৈরি। কৃত্রিম মাঠে আমরা আগে খেলেছি।”
আর্মান্দোর নতুন ছক রপ্ত করার ‘টেস্ট ড্রাইভ’ না কোরিয়ানদের গতির ঝলক শিল্ড শুরুর দিনে কোনটা দেখা যাবে, সেটাই আজ আকর্ষণ ম্যাড়ম্যাড়ে শিল্ড শুরুর ম্যাচে।

ছবি: উৎপল সরকার।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.