শিল্ডে নামার আগে ময়দানে দুই প্রধানে হঠাৎ হাজির চিরকালের সেই ‘ভোকাল টনিক’। সকালে মোহনবাগান। বিকেলে ইস্টবেঙ্গলে।
বাগানে অর্থসচিব দেবাশিস দত্তকে নিয়ে সহ-সচিব সৃঞ্জয় বসু যা প্রয়োগ করে ওডাফাদের জোগালেন আত্মবিশ্বাসের সিলিন্ডার। আর বিকেলে ইস্টবেঙ্গল ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য, অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকাররা দলকে চাগিয়ে দিতে টেনে আনলেন লাল-হলুদের দুই ঘরের ছেলে ভাস্কর-মনোরঞ্জনের বিক্রম। যা শুনে ফুটছেন সুয়োকারা।
সোমবার সকালে অনুশীলনের পর রুদ্ধদ্বার তাঁবুতে ফুটবলারদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন বাগানের দুই শীর্ষকর্তা। সেখানেই তাঁরা ওডাফাদের বলেন, “ফেড কাপ তোমরা জিততেই পারতে। এখন সব ভুলে শিল্ডের জন্য ঝাঁপাও। তোমরা পারবেই।”
ইস্টবেঙ্গলেও বিকেলে অনুশীলন শেষ হতেই ফুটবলারদের ডাকেন দুই কর্তা। তবে সেই ‘পেপ টক’ পর্ব মোহনবাগানের চেয়েও টানটান সংলাপে পূর্ণ। ফুটবলারদের প্রথামাফিক শিল্ডের জন্য মনঃসংযোগ করতে বলেই তাঁরা বলেন, “ময়দানে সবাই চিমাকে তাঁর সেরা সময়ে ভয় পেত। আর চিমা সেখানে ভাস্করকে দেখলেই বলত, আমরা কিন্তু বন্ধু। নো ফাইট। মনে রাখবে লাল-হলুদ জার্সি পরে ভয়, ঘাবড়ানোর জায়গা নেই।” এখানেই শেষ নয়। এসেছে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যর কথাও। ফুটবলারদের বলা হয়, “আটের দশকে এক বার লেফট ব্যাক অলোক মুখোপাধ্যায়ের পা কেটে গলগল করে রক্ত পড়ছিল। ও উঠে যাবে বলতেই তেড়ে যায় মনা। কাটা জায়গায় মাটি ঘসে দিয়ে বলে, অ্যান্টিসেপটিক ঘসে দিলাম। পুরো ম্যাচ খেলবি। পরে পা বাদ গেলে যাবে।” |
|
|
শিল্ডে আর্মান্দোর প্রথম চ্যালেঞ্জ দক্ষিণ কোরিয়ার সানমুন এফসি।
সোমবার প্র্যাকটিসে সানমুনের জিম দাইহান। |
|
তবে এরই মাঝে চোটের জন্য আইএফএ শিল্ডে নামার আগে হোঁচট খেল মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলদু’দলই। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট এখনও না সারায় প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিরুদ্ধে অনিশ্চিত বাগান অধিনায়ক ওডাফা ওকোলি। কোচ করিম বেঞ্চারিফা বলছেন, “প্রথম ম্যাচে ওডাফার খেলা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কলকাতা লিগের ডার্বিতে পাওয়া চোট সারেনি। ডাক্তারের রিপোর্ট পেলে সিদ্ধান্ত নেব।”
বাগানের ‘কিং কোবরা’ নিজে যদিও প্রথম ম্যাচে না খেলার ব্যাপারে ঝেড়ে কাশেননি। বলে যান, “চোট এখনও সারেনি। চেষ্টা করছি যাতে প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলা যায়।” বাগানের গোলমেশিন যে একের পর এক চোট-আঘাতে কিছুটা হলেও বিধ্বস্ত তা তাঁর এ দিনের কথায় পরিষ্কার। বলছিলেন, “ফুটবল কেরিয়ারের অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। না খেলে বসে থাকতে কার ভাল লাগে?” পাশাপাশি আইএফএ পরিচালিত টুর্নামেন্টে (লিগ) ক্রিস্টোফার, উজ্জ্বল, প্রয়াসুরা এর আগে নথিভুক্ত হওয়ায় শিল্ডে খেলতে পারবেন না।
সবুজ-মেরুনে যখন ওডাফা-ক্রিস্টোফার জুটির শিল্ডে না থাকার জন্য হা-হুতাশ তখন চোটে কাবু ইস্টবেঙ্গল শিবির। গোড়ালির টেন্ডনের চোট না সারায় শিল্ড থেকেই ছিটকে গেলেন উগা ওপারা। এ ছাড়াও পিঠ এবং গোড়ালির চোটে গুরবিন্দর এবং সহ-অধিনায়ক হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরার খেলা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ক্লাব সূত্রে খবর, উগার মতো এই দু’জন এখনও হিসেবের বাইরে চলে যাননি। সাপোর্ট স্টাফ এবং ডাক্তাররা জোরদার চেষ্টা চালাচ্ছেন দু’জনকে মাঠে নামাতে। লাল-হলুদ সমর্থকদের আশার খবর, চোট সারিয়ে মেহতাবের মাঠে নেমে পড়া। আর্মান্দো কোলাসোর এই মিডফিল্ডার অনুশীলন সেরে বাড়ি ফেরার পথে বলে গেলেন, “চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছি। শিল্ডে প্রথম ম্যাচ থেকেই হয়তো খেলতে পারব।” |