চল্লিশের লক্ষ্য ঠিক করে এ বারের বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে খেলতে গিয়েছিল সে। চল্লিশ মানে চল্লিশটা উইকেট। না, সেটা পূরণ করতে পারেনি কণিষ্ক। তার চেয়ে ছ’টা কম উইকেট হয়েছে। তাতেও অবশ্য টুর্নামেন্টের সেরা শিকারিদের তালিকায় এক নম্বরে। এ বার আর এক লক্ষ্যের দিকে দৌড় শুরু বাংলার উঠতি বাঁ হাতি পেসার কণিষ্ক শেঠের। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রার হাতে নিজেকে তৈরি করে তোলার লক্ষ্য। তা পূরণ করার স্বপ্ন নিয়েই চেন্নাইয়ে এমআরএফ পেস অ্যাকাডেমিতে ট্রায়াল দিতে যাচ্ছে বাগুইআটির শেঠ পরিবারের আদরের ‘মিকু’।
গত বারের বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে (অনূর্ধ্ব ১৬ জাতীয় ক্রিকেট) ১৮টি উইকেট পেয়েছিল কণিষ্ক। সে বার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যায় বাংলা। ঝাড়খন্ডের বিরুদ্ধে ন’রানে পাঁচ উইকেট পেয়েছিল। এ বার কণিষ্কের শিকার ৩৪। হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে সেরা বোলিং, ৬-৪২। বাংলা অবশ্য সেমিফাইনালে হেরে যায় মধ্যপ্রদেশের কাছে। |
কণিষ্কের এই উত্থানের পিছনে যেমন রয়েছে গত বছর চেন্নাইয়ে বোর্ডের স্পেশালিস্ট ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে নিজেকে মাজা-ঘষা ও এই মরসুমের শুরুতে বাংলার অনূর্ধ্ব ১৬ দলের কোচিং সুপারভাইজার গৌতম সোম (জুনিয়র)-এর এর কাছ থেকে পাওয়া মূল্যবান পরামর্শ। দমদম সেন্ট স্টিফেন স্কুলের ক্লাস টেনের ছাত্রটির বক্তব্য, “গত বছর আমার ওজন বেশি ছিল। সঠিক উপায়ে ওজন কমানো ও ফিটনেস বাড়ানোর কথা বলেছিলেন চেন্নাইয়ের কোচেরা। এখানে এসে গৌতম স্যর ও অন্য কোচেরা আমাকে এই কাজে প্রচুর সাহায্য করেছেন। উচ্চতাও বেড়েছে। আমার টেকনিকেও উন্নতি ঘটিয়েছেন ওঁরা।”
বাবার নাম কপিল। ছেলে কপিল দেবের মতো বড় ক্রিকেটার হোক, সেই ইচ্ছে মনের মধ্যে পুষেই এই নাম রেখেছিলেন কণিষ্কের ঠাকুরদা। “আমি তো পারিনি। বাবা-মায়ের সেই ইচ্ছে তাঁদের নাতি পূরণ করুক, এখন এটাই আমাদের স্বপ্ন,” বলছিলেন কণিষ্কের বাবা।
ওয়াসিম আক্রমের অন্ধ ভক্ত কণিষ্ক এ বার চলেছে গ্লেন ম্যাকগ্রার হাতে নিজেকে আরও বড় পেসার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে। তিন দিনের ট্রায়ালে (৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি) ম্যাকগ্রা নিজে বেছে নেবেন তাঁর শিক্ষার্থীদের। তার পর সেখানে আসল শিবির। এখন তাঁর নজর কাড়াই কণিষ্কের প্রধান লক্ষ্য। “ম্যাকগ্রা স্যারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেলে দুটো জিনিস জিজ্ঞাসা করার ইচ্ছা আছে,” বলছিল কণিষ্ক, “ব্যাটসম্যানের হাতে মার খাওয়ার পরও কী ভাবে মানসিক ভাবে নিজেকে ঠিক রাখতে হবে ও ম্যাচের আগের প্রস্তুতি ঠিক কেমন ভাবে নেওয়া উচিত। সেরা বোলিংয়ের টেকনিক শেখার পাশাপাশি এই দুটো ব্যাপার ওঁর কাছ থেকে জানার খুব ইচ্ছা আমার।” |