অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র মানে শুধু ‘খিচুড়ি-স্কুল’ নয়। কিন্তু শুধু খাবারের টানেই অনেক বাচ্চা ওই কেন্দ্রে যায়। খাবার পেলেই বাড়ি চলে যায়। এই সংস্কৃতি বন্ধ হওয়া দরকার। এলাকার মানুষ ও জন-প্রতিনিধিরাই তা বদলাতে পারেন। মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের উদ্দেশে এই বক্তব্য রাখেন শিশু ও নারীকল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী শশী পাঁজা।
তিনি আরও জানান, শিশুর মানসিক ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য নানা ব্যবস্থা থাকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে। তাই সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের (আইসিডিএস) কেন্দ্রগুলির কাজে আরও নজরদারি প্রয়োজন।
এ দিন পুরসভার অধিবেশন শেষ হতেই সেখানে হাজির হন মন্ত্রী স্বয়ং। কাউন্সিলরদের তিনি বলেন, “এলাকার আইসিডিএস কেন্দ্রগুলি নিয়মিত ঘুরে দেখুন। শুধুমাত্র নজরদারির অভাবে ওই কেন্দ্রগুলি খিচুড়ি-স্কুলে পরিণত হয়েছে।” এই নজরদারির জন্যই বিশেষ কমিটি গড়ছে সরকার। মন্ত্রী জানান, আপাতত কলকাতার জন্য ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটি (ওয়ার্ড লেভেল মনিটরিং অ্যান্ড রিভিউ কমিটি) হচ্ছে। যেখানে স্থানীয় কাউন্সিলর-সহ এলাকার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক, সরকারি চিকিৎসক, স্থানীয় বাসিন্দারা থাকবেন। এ ছাড়া, মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন লেভেল মনিটরিং কমিটিও হচ্ছে। সেখানকার চেয়ারম্যান হবেন কলকাতার মেয়র। শশীদেবী জানান, মুখ্যমন্ত্রী চান, প্রকল্পের সব সুযোগ যাতে শিশুদের কাছে পৌঁছয়, তার ব্যবস্থা নিতে হবে।
মন্ত্রী জানান, গরিব শিশুদের অপুষ্টির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য এই সব প্রকল্পে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। এতে শিশুমৃত্যুর হারও কমে। পাশাপাশি, বাচ্চাদের স্কুলমুখী করাতেও জোর দেওয়া হয়। নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে সদ্যোজাত ও তার মায়ের জন্যও। যদিও শুধু নজরদারির অভাবে ওই প্রকল্পের সুফল পুরো পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করছেন শশীদেবী। তাই গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র ঘুরে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলছেন তিনি।
শিশু ও নারী কল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে প্রায় ১ লক্ষ ১৬ হাজার এমন কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে কলকাতায় রয়েছে ১৫২৮টি। শশীদেবী বলেন, “কেন্দ্রগুলি খোলা থাকার কথা চার ঘণ্টা। কিন্তু অধিকাংশ কেন্দ্র দু’ঘণ্টা খোলা রেখেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। খাবার দেওয়া শেষ হলেই সব গুটিয়ে বাড়ি চলে যান কর্মীরা।” মন্ত্রীর কথায়, “কোনও বাচ্চা অসুস্থ হলে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তার প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়ার কথা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের। কিন্তু সে সব হয় না বলে নানা অভিযোগ জমা পড়েছে।” এ দিন পুর-প্রতিনিধিদের তিনি জানিয়ে যান, নতুন ওই কমিটি এ সব ব্যাপারে তদারকি শুরু করলেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
|