দীর্ঘদিন ধরেই চন্দননগরের গৌরহাটি ইএসআই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ তুলছিলেন রোগীরা। সোমবার সকাল ও দুপুরের খাবার বয়কট করে বিক্ষোভও দেখালেন। হাসপাতালের সুপার রোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজ্যের ইএসআই মেডিক্যাল বেনিফিট স্কিমের ডিরেক্টর মৃগাঙ্কশেখর কর বলেন, “ওই হাসপাতালের সমস্যা নিয়ে আলোচনা চলছে। শীঘ্রই বৈঠক করে সমস্যার সমাধান করা হবে।”
গৌরহাটির ওই হাসপাতালটিতে শয্যাসংখ্যা ২১৬। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই রোগী থাকেন তার চেয়ে বেশি। স্থায়ী চিকিৎসক রয়েছেন ১০ জন। চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী চিকিৎসক রয়েছেন ১৮ জন। রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা বেহাল। চিকিৎসকেরা রোগীদের ঠিকমতো দেখেন না। অনেক সময়েই প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় না। তা ছাড়াও, রোগীদের ঠিকমতো ওষুধ দেওয়া হয় না এবং মাঝেমধ্যেই এমন খাবার দেওয়া হয় যাতে নুন কম থাকে, ভাতে কাঁকড় মেলে। পরিমাণেও তা কম দেওয়া হয়। এই সব অভিযোগ তুলেই এ দিন রোগীরা প্রাতঃরাশ খাননি। দুপুরের খাবারও বয়কট করেন।
রোগীদের মধ্যে ডালহৌসি জুটমিলের কর্মী আখতার আলি বলেন, “বুকে, পিঠে, পায়ে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছি। মাঝে মাঝে চিকিৎসক এসে দেখে ওষুধ দেন। কিন্তু কী রোগ বা তার জন্য কী পরীক্ষা করাতে হবে, সে সব কিছুই বলা হচ্ছে না। খাবার দেওয়া হয় কম এবং নিম্ন মানের।”
রোগীদের পরিমাণে কম বা নিম্ন মানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, সরকার নির্ধারিত মূল্যে রোগীদের যে পরিমাণ খাবার দেওয়ার কথা তা-ই দেওয়া হচ্ছে। প্রাতঃরাশে দেওয়া হয় চা বা দুধ, কলা, পাউঁরুটি। দুপুরে বরাদ্দ থাকে ভাত, ডাল, তরকারি, মাছ বা ডিম, সপ্তাহে এক দিন মাংস। বিকেলেও টিফিন দেওয়া হয়। রাতে থাকে ভাত বা রুটি, ডাল, তরকারি এবং কোনও দিন মিষ্টি।
তবে পরিকাঠামোগত সমস্যা মেনে নিয়ে হাসপাতালের সুপার অভ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “চিকিৎসক কম থাকায় ও যন্ত্রপাতির অনেকগুলিই না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। বাইরে থেকে পরীক্ষা করানোর কথা বললে রোগীরা রাজি হন না। তবে ওষুধে কোনও ঘাটতি থাকে না। পরিস্থিতি শ্রম দফতর এবং জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। স্থায়ী চিকিৎসক এবং যন্ত্রপাতি কেনা হলে সমস্যার সমাধান হবে।” |