এসজেডিএ কাণ্ডে জোড়াপানি নদী খাত সংস্কারে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত ঠিকাদার সংস্থার ৩ কর্ণধারকে ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিল আদালত। সোমবার শিলিগুড়ি অতিরিক্ত মুখ্য বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ওই নির্দেশ দেন। আলাদত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অভিযুক্তরা হলেন সঞ্জয় পাল, সিদ্ধার্থ পাল এবং পার্থ পাল। পুলিশ তাঁদের আগে থেকেই খুঁজছিল। সম্প্রতি তাঁরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। গত ২২ জানুয়ারি জামিনের আবেদন খারিজ করে আদালত ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। ধৃতেরা এসজেডিএ’র আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ঠিকাদার শঙ্কর পালের আত্মীয়। এ দিন আদালতে অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। সরকারি পক্ষের আইনজীবী সুদীপ বাসুনিয়া জানান, ধৃতদের নিয়ে পুলিশ খেলাঘর মোড়ে ঠিকাদার সংস্থার অফিসে গিয়েছিল। সেখানে নথিপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। কাগজে কলমে জোড়াপানি নদীর ১ হাজার ঘন মিটার মাটি টাকার কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল। প্রতি ঘনমিটার মাটি কাটার দর ছিল ১২৩৭ টাকা। সেই মতো ১২ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা দেওয়ার কথা। অথচ বরাত পাওয়া সংস্থাকে দুই দফায় ৮ কোটি ৩১ লক্ষ ৩৪ হাজার ২৮৬ টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অথচ সেই সংক্রান্ত সঠিক নথি দেখাতে পারেনি অভিযুক্তরা। তাতে সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে।
তৎকালীন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, তাঁকে অন্ধকারে রেখে ওই কাজ করছে দফতরের একাংশ বাস্তুকার। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে তিনি বিস্তারিত জানিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন। দফতরের একাংশ বাস্তুকার এবং ঠিকাদার সংস্থার কর্মধারদের যোগসাজোশে জোড়াপানি নদী খাত সংস্কার এবং বাঁধ নির্মাণে আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে পরে প্রধাননগর থানায় এসজেডিএ’র তরফে আলাদা করে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ শঙ্কর পালকে ধরলেও তাঁর আত্মীয় বাকিরা গা ঢাকা দিয়েছিলেন। পুলিশের একটি সূত্রই জানিয়েছে, শঙ্করবাবুর আত্মীয়দের নামে থাকা নন্দিনী কনস্ট্রাকশন নামে ওই কোম্পানিকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল। বাস্তবে, শঙ্করবাবুই তাঁদের চালাতেন। শঙ্করবাবুর নিজের নামেও একটি কোম্পানি রয়েছে। সেই কোম্পানিও বরাত পায়। তা ছাড়া সরকারি দরের চেয়েও অনেক বেশি দরে নদী খাত সংস্কারের ওই কাজের বরাত কোটেশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। |