চম্পাসারি, খড়িবাড়ির পর মাটিগাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থা ভোটে হেরে গেল তৃণমূল। সোমবার ভোটাভুটিতে ৮-৯ ভোটে হেরে গিয়েছে তারা। ওই পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের ১০ সদস্যের মধ্যে প্রধান প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস, নান্টু বিশ্বাস-সহ ৪ জন সম্প্রতি দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ১৮ আসনের গ্রাম পঞ্চায়েতের বাকি আসন সিপিএমের দখলে। ১ জন সদস্য মারা যাওয়ায় ৭ জন ছিলেন। তাঁদের ৩ জন রবিবার তৃণমূলে যোগ দেন। এর পরেই কংগ্রেসের ৬ জন প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। অভিযোগ, এ দিন কংগ্রেসের ১ সদস্যকে তৃণমূল অর্থের বিনিময়ে দলে টেনে তাঁর সমর্থন পায়। কংগ্রেসের ৫ জন এবং সিপিএমের ৪ জন অনাস্থার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “কংগ্রেস ও সিপিএম যে মিলে রয়েছে এ দিন তা ফের স্পষ্ট হল। মানুষ সঠিক সময়ে জবাব দেবেন।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, গ্রাম পঞ্চায়েত দখল থেকে সর্বত্রই জবরদখলের রাজনীতি করছে তৃণমূল। ভয় দেখিয়ে, টাকা দিয়ে অন্য দলের জনপ্রতিনিধিদের দলে টানছে। ভোটে তাদের এক জনও জেতেনি। অথচ গায়ের জোরে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি দখল করছে। অশোকবাবু বলেছেন, “পঞ্চায়েতের সদস্যরা সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে তাদের এ দিন অপসারিত করেছে। এ দিন হেরে গিয়ে তারা একটা চপেটাঘাত খেয়েছে। তাদের একটা শিক্ষা হল। এ দিনের ফলে আমরা খুশি।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, “সিপিওএম, কংগ্রেস এক যোগে কিছু করার ব্যাপার নেই। অনৈতিকতার বিরুদ্ধে নৈতিকতার জয় হয়েছে।” গত ১৫ জানুয়ারি শিলিগুড়ির চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতে মূলত কংগ্রেস, সিপিএম-এর সদস্যদের মিলিত ভোটে হেরে যায় তৃণমূল। ২০ আসনের পঞ্চায়েতে ৮ সিপিএম সদস্য ছিলেন। কংগ্রেসের ৪, ফব-র ২, আদিবাসী বিকাশ পরিষদের ১, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ৫ জন সদস্য মিলে গড়া গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড ছিল। প্রাধন ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের মণিকা সিংহ। সম্প্রতি সিপিএম থেকে ২ জন, ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে ১ জন, বিকাশ পরিষদের ১ জন ও মোর্চার ৪ জন তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে। কংগ্রেসের ৪ জন, সিপিএমের ৬ জন, মোর্চার ১ জন তৃণমূলের আনা অনাস্থার বিরুদ্ধে ভোট দেন।
খড়িবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ কংগ্রেসের তিন জন সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেন। ১৩ আসনের পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের আসন ছিল ৮ টি, সিপিএমের ৩টি এবং নির্দলের ১টি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের ১টি। প্রধান দলত্যাগের পর অনাস্থা আনেন কংগ্রেস এবং অন্য দলের ১০ জন সদস্য। গত ২৪ জানুয়ারি অনাস্থার ভোটাভুটিতে ৯ জন অংশ নেন। সকলেই অনাস্থার পক্ষে ছিলেন। তবে ভোটাভুটির ৩০ মিনিট আগে প্রধান পদত্যাগ করেন। বিডিও রাতুল ঘোষ জানান, আজ, মঙ্গলবার ফল ঘোষণা হবে। এ দিন আলাদা ভাবে হলেও কংগ্রেস এবং সিপিএমের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, এক ব্যবসায়ী জনপ্রতিনিধি কেনা বেচায় তৃণমূলকে টাকা যোগাচ্ছেন। তাঁকে গ্রেফতারের দাবি তোলা হয়েছে। জেলা কংগ্রেসের নেতা তথা কাউন্সিলর সঞ্চয় পাঠক জানান, ওই রেশন ডিলারের কাজের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আন্দোলনে নামা হবে। |