নিকাশি বেহাল, ভেঙেছে শহরের বিভিন্ন রাস্তাও। ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য পুরসভা কয়েক বছর আগে জায়গা কিনে রাখলেও এখনও তা অব্যবহৃত। বাড়িতে পানীয় জল দেওয়ার উদ্যোগ থমকে। এমনই নানা অভিযোগ নিয়ে আড়াই মাস আগে ক্ষমতায় আসা আলিপুরদুয়ার পুরসভার বাম বোর্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
পরিষেবা ক্ষেত্র ছাড়া, কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক কর্মদক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন দল। রাজ্য সরকার বিভিন্ন পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা চেয়ে ‘ভিশন ১৪’ নামে একটি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেও সেই তালিকাও রাজ্য সরকারের কাছে পুরকর্তৃপক্ষ জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। বাম পুরবোর্ড পরিষেবার কাজে শ্লথতার কথা মেনে সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে। রাজ্যের বরাদ্দ না মেলায় সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
কংগ্রেসের হাতে থাকা পুরসভা, গত বছরের নির্বাচনে বামফ্রন্ট ছিনিয়ে নেয়। ২০টি আসনের এই পুরসভায়, কংগ্রেস এবং তৃণমূল উভয়-ই ৬টি করে আসন পায় সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে। বামেরা পায় ৮টি আসন। কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট না হওয়ায় বামফ্রন্ট পুরসভায় বোর্ড গঠন করে। বোর্ড গঠনের আড়াই মাস পরে পরিষেবা নিয়ে কংগ্রেস এবং তৃণমূল একই সুরে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে।
পুরসভার নয়া চেয়ারম্যান অনিন্দ্য ভৌমিক বলেছেন, “পুর কর্তৃপক্ষের কাছে বর্তমানে খরচ করার মতো অর্থ নেই। পরিকাঠামো উন্নয়নের কয়েকটি জরুরি কাজ করতে এই সময়ে ন্যূনতম ৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। সে টাকাও পুর কর্তৃপক্ষের হাতে নেই। রাস্তা এবং নিকাশিার দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। আরও বেশ কিছু পরিকল্পনার চূড়ান্ত করে রাখা হয়েছে, খুব শীঘ্রই সেগুলি সরকারের কাছে পাঠানো হবে।”
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, শহরের রাস্তা এবং নিকাশির অবস্থা দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল। বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ কবে থেকে শুরু হবে, তা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ কিছু জানাতে পারছেন না। শহরের মধ্যে থাকা চারটি বড় ঝিল সংস্কার না হওয়ায় সেগুলি ক্রমাগত বুজতে শুরু করেছে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের কাউন্সিলর দিবাকর পালের অভিযোগ, “পুরবোর্ডের উন্নয়ন কাজ করার মানসিকতা নেই। শহরের রাস্তা বেহাল, শহরের নর্দমাগুলিও পরিষ্কার করা হয় না। চলতি বছরে পুরসভা কী উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করবে, তার তালিকা তারা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাতে পারেনি। এই বিষয়গুলি তুলে ধরে দ্রুত আন্দোলন শুরু হবে।”
প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শুধুমাত্র রাজ্য সরকার টাকা দিচ্ছে না, বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে হবে না। সরকারের বিভিন্ন দফতরে গিয়ে তাগাদা-তদ্বির করতে হবে। সেই উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। আর বরাদ্দ থাকা বা না-থাকার সঙ্গে উন্নয়নের পরিকল্পনার তালিকা তৈরি করতে না পারার কী সম্পর্ক, বুঝতে পারছি না।”
পুরসভার চেরাম্যান অনিন্দ্যবাবুর কথায়, “পুরবোর্ডের দায়িত্ব পাওয়ার পরে বেশি দিন পার হয়নি। উন্নয়ন পরিকল্পনার তালিকা তৈরি করতে কয়েক মাস সময় লাগবে। সরকারের কাছে সে সময় চেয়ে নিয়েছি।” |