শিলিগুড়ি মহিলা কলেজে ছাত্র সংসদের ভোটে জয়ী হল এসএফআই। শিলিগুড়ি কলেজে জিতেছে টিএমসিপি। সোমবার ওই দুই কলেজে নির্বাচন হয়।
মনোনয়ন পত্র তোলা থেকেই শিলিগুড়ি মহিলা কলেজের নির্বাচনকে ঘিরে গোলমাল শুরু হয়। তৃণমূলের সদস্যদের বিরুদ্ধে এসএফআই-এর সদস্য কলেজ ছাত্রীদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এ দিন ২৪ আসনের ছাত্র সংসদের ভোটে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআই ৩টি করে আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়। ১টি আসনে জমা করা মনোনয়ন ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তা খারিজ করেছেন। তাতে ওই আসনে নির্বাচন হয়নি। বাকি ১৭টি আসনে ভোট হয়। টিএমসিপি এবং এসএফআই উভয়েই ওই সমস্ত আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। টিএমসিপির কোনও প্রার্থী এ দিন একটি আসনেও জিততে পারেননি। |
মহিলা কলেজে মনোনয়ন-পর্বে ইন্দ্রাণী সরকার নামে এসএফআইয়ের কর্মী ইংরেজির প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে কলেজের বাইরে ৮-১০ জন ঘিরে ধরে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ছাত্রীকে তৃণমূলে যোগ দিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে ইন্দ্রাণী অভিযোগ করেছিলেন। যোগ না-দেওয়ায় পরে তাঁকে প্রার্থী পদে না-দাঁড়ানোর জন্য তৃণমূলের তরফে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের জেলা সভাপতির পাড়ার বাসিন্দা বলেই তাঁকে বেশি প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে এসএফআই দাবি করে। কিন্তু এসএফআই-এর হয়ে মনোনয়ন তোলায় তাঁকে চরম হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এ দিন ইন্দ্রাণী-সহ তাঁদের সমস্ত প্রার্থী জয়ী হওয়ায় উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। কলেজ থেকে পুলিশি নিরাপত্তায় তাঁদের বার করা হয়। পরে এসএফআইয়ের সদস্যরা গাড়ি করে তাঁদের নিয়ে যান দলীয় কার্যালয়ে।
শিলিগুড়ি কলেজে অবশ্য ৪৯ টি আসনের মধ্যে ১টি বাদে বাকি সমস্ত আসনই দখল করেছে টিএমসিপি। ৬ টি আসনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে ছাত্র পরিষদ প্রার্থী দিয়েছিল। ১টি আসনে তারা জয় লাভ করে। তবে ওই ছাত্র নেতা এ দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়। ছাত্র পরিষদ ওই দাবি উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছে তৃণমূলের তরফে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় বলেন, “শিলিগুড়ির অধিকাংশ কলেজেই আমরা জয়ী হয়েছি। মহিলা কলেজে এসএফআই-এর এই জয়ের পিছনে ভূমিকা নিয়েছেন অধ্যক্ষা রুমা ভৌমিক। এসএফআইকে জিততে তিনি সাহায্য করেছেন। তাঁর আচরণে একাংশ শিক্ষকও ক্ষুব্ধ। তবে ছাত্রীদের ধন্যবাদ যে এ বার আমরা প্রথম ওই কলেজে ৩ টি আসন পেয়েছি। তা ছাড়া জিততে না পারলেও এ দিন ছাত্রীদের অনেকেই আমাদের ভোট দিয়েছেন।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌরভ দাসের দাবি, যে ৩ টি আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে, সেগুলিতে মনোনয়ন তুলেছিলেন তাঁদের ছাত্রীরাও। তবে টিএমসিপি সদস্যরা সেগুলি ছিঁড়ে দেওয়ায় জমা করা যায়নি। এ দিন ছাত্রীদের পক্ষে প্রিয়াঙ্কা রায় বলেন, “মহিলা কলেজে জয় বড় পাওনা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বহিরাগতদের নিয়ে যে ভাবে আমাদের হেনস্থা করেছিল, মারধর করেছিল এ দিন ছাত্রীরা তার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।” |
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অমিত তালুকদার বলেন, “সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে শাসক দলের বিরুদ্ধেই ভোট পড়ছে। তাই ভয়ে তারা ভোট করতে দিচ্ছেন না। মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিচ্ছেন।” সূর্যসেন কলেজে এ দিন নির্বাচনের দিন থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ভোট হয়নি। সমস্ত আসনেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জিতেছে। শিলিগুড়ি গভর্নমেন্ট কলেজে ৩১ টি আসন রয়েছে। সেখানে নিয়ম মাফিক পর্যাপ্ত মনোনয়ন জমা না পড়ায় ভোট হয়নি।
|
ছবি দু’টি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |