জমি কেনার ফয়সালা এখনও হয়নি। তবু বর্ধমানের কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার ব্যাপারে এনটিপিসি-কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট আশাবাদী। সোমবার সংস্থার চেয়ারম্যান অরূপ রায়চৌধুরী কলকাতায় জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে তাঁদের পরিচালন পর্ষদের বৈঠক বসছে। সেখানে জরুরি কিছু কিছু বিষয়ে ছাড়পত্র চাওয়া হবে। এবং পর্ষদ অনুমতি দিলে মার্চের মধ্যে কিছু কাজের জন্য দরপত্র চাওয়া হবে।
অরূপবাবু এ দিন নব মহাকরণে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্তের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রসঙ্গত, বর্তমানে ডিভিসি চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বও তাঁর হাতে। সরকারি সূত্রের খবর: বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে অরূপবাবুর বৈঠকে মূলত পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কে কথাবার্তা হলেও কাটোয়া তাপবিদ্যুতের প্রসঙ্গও এসেছে। এ দিন বৈঠক শেষে অরূপবাবু কিছু জানাতে চাননি। তবে এটুকু জানিয়ে যান, কাটোয়ায় তাঁরা প্রকল্প গড়বেন। অন্য দিকে বিদ্যুৎমন্ত্রীর বক্তব্য, কাটোয়ায় কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে এনটিপিসি’র যা যা করণীয়, তা তারা করছে।
তবে এনটিপিসি-সূত্রের খবর: কাটোয়া তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারের হাতে অধিগৃহীত যত জমি মজুত রয়েছে, তা কিনে নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংস্থা কর্তৃপক্ষ এখনও নেননি। এর বাইরে যে বাড়তি জমি মালিকদের থেকে সরাসরি কেনার কথা, তা-ও শুরু হয়নি। এনটিপিসি-কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, চাষিদের থেকে জমি কেনা যাবে কি না, সংস্থার পরিচালন পর্ষদের কাছে সে অনুমতি চাওয়া হতে পারে। কারণ, সরাসরি জমি কেনায় পর্ষদের সদস্যরা আগে আপত্তি তুলেছিলেন।
বিদ্যুৎ দফতরের একাংশের অবশ্য দাবি, কাটোয়ায় জমি কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু ঘটনা হল, জমি জটের কারণেই ইতিমধ্যে কাটোয়ায় প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের উৎপাদনক্ষমতা ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনটিপিসি। গোড়ায় পরিকল্পনা ছিল, কাটোয়ায় ১,৬০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র গড়া হবে। কিন্তু জমির অভাবে এখন ১৩২০ মেগাওয়াটের প্রকল্প তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। প্রকল্পটির জন্য বাম আমলে প্রায় ৫৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। আরও দেড়শো একর দরকার, যা চাষিদের থেকে সরাসরি কিনে নিতে এনটিপিসি’কে প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকার।
কারণ, তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার আর কোনও জমি অধিগ্রহণ করবে না।
|