|
|
|
|
মেচেদার হোটেলে গণধর্ষণ তমলুকের দুই নাবালিকাকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
তমলুকের দুই নাবালিকাকে মেচেদার হোটেলে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। সালিশি সভায় রফা না হওয়ায় ওই দুই নাবালিকার বাবা রবিবার অভিযোগ দায়ের করেন। চার অভিযুক্তের মধ্যে মূল ব্যক্তিকে রবিবারই ধরে পুলিশ। তমলুক শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে হিজলবেড়িয়ার বাসিন্দা ধৃত গণেশ জানাকে সোমবার তমলুক আদালতে তোলা হলে ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান বিচারক। দুই নাবালিকার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। গোপন জবানবন্দি নেওয়ার পর দুই নাবালিকাকে পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর ছত্রিশের গণেশ জানা জরির ব্যবসায়ী ছিল। এখন সে ঠিকাদার। ওই গ্রামেই বাড়ি দুই নাবালিকার। এক জন দশম শ্রেণির ছাত্রী, অন্য জন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। অভিযোগ, বন্যার ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে বলে গণেশ দুই নাবালিকাকে গত ২৩ ডিসেম্বর মোটর সাইকেলে মেচেদায় আনে। সেখানে একটি হোটেলে উঠে গণেশ ফোনে আরও তিন জনকে ডাকে। এরপর ওই দুই নাবালিকাকে হোটেলের দু’টি আলাদা ঘরে নিয়ে গিয়ে দু’জন করে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। সন্ধ্যা নাগাদ গণেশ ওই দুই নাবালিকাকে বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি জায়গায় ছেড়ে দেয়। দু’জনের হাতে দু’শো টাকা দিয়ে সে মুখ বন্ধ রাখার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। পরে পরিজনরা বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় পদুমপুর ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা শিবানী জানাকে জানান। ২০ জানুয়ারি, গত সোমবার স্থানীয় বিদ্যাসাগর ক্লাবে এই নিয়ে সালিশি সভা বসে। সেখানে শিবাণীদেবীর স্বামী রতন জানা, যুব তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত জানা-সহ গ্রামের জনা পঞ্চাশেক লোক উপস্থিত ছিলেন। গণেশের স্ত্রী ঊষাদেবী বলেন, “প্রথমে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেবে বলেছিল। আমরা কান্নাকাটি করায় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এক দিন পর বুধবার ফের টাকা দেওয়ার জন্য স্বামীকে চাপ দেয় ওরা। টাকা দিতে পারছে না বলে ৫ কাঠা জমির দলিলও কেড়ে নেয়।” ঊষাদেবীর অভিযোগ, “পঞ্চায়েত ভোটে আমরা সিপিএমের হয়ে প্রচার করেছিলাম। সেই রাগে আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে।” যদিও ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেই জানান স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। এমনকী সালিশি সভার কথাও অস্বীকার করেছেন রতনবাবু, সুদীপ্তবাবুরা। তমলুক ব্লকের তৃণমূল নেতা সোমনাথ বেরা অবশ্য সালিশি সভা হয়েছে বলে মেনে নেন। তিনি বলেন, “এর আগে গ্রামে বৈঠক করে ঠিক হয় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। দু’-তিন দিন আগে আমি বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলি।” জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈন বলেন, “পরিবারের লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|